চার বছরেও শেষ হয়নি বরগুনার চার মডেল মসজিদের নির্মাণ কাজ - দৈনিকশিক্ষা

চার বছরেও শেষ হয়নি বরগুনার চার মডেল মসজিদের নির্মাণ কাজ

বরগুনা প্রতিনিধি |

চার বছরেও শেষ হয়নি বরগুনার চারটি মডেল মসজিদের নির্মাণ কাজ। মুসুল্লিরা বলছেন, মডেল মসজিদ নির্মাণ করার কথা বলে ওই স্থানে থাকা আগের বড় মসজিদ ভেঙে ঠিকাদাররা কাজ না করায় ইবাদতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা। মুসুল্লিদের অভিযোগ, গণপূর্তের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে অতিরিক্ত বিল তুলে নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন ঠিকাদাররা। 

স্থানীয় মুসুল্লিরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, বরগুনা সদর উপজেলা অফিসের সামনে নিজস্ব অর্থায়নে পাকা মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন তারা। তবে, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি দেয়া মসজিদ নির্মাণ করার জন্য আগের মসজিদটি ভেঙে ফেলে মডেল মসজিদ নির্মাণের টেন্ডার পাওয়া মেসার্স ডালি অ্যান্ড গাজী কনস্ট্রাকশন জয়েন্ট ভেঞ্চার। ১৩ কোটি ৬ লাখ টাকার এ মসজিদ নির্মাণের কাজ কয়েকদিন করে ফেলে রেখেছে ঠিকাদার।

মসজিদের মুসুল্লি জুবায়ের হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমাদের বড় মসজিদ ছিলো এখানে। সেই মসজিদ ভেঙে মডেল মসজিদ নির্মাণ করার কাজ আরম্ভ হয়। কয়দিন পরেই অতিরিক্ত বিল উত্তোলন করে পালিয়েছে ঠিকাদার। আমরা এখন বৃষ্টিতে ভিজে নামাজ আদায় করছি।

একই এলাকার পৌর কাউন্সিলর ফারুক প্যাদা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, গণপূর্ত বিভাগ ঠিকাদারদের অতিরিক্ত বিল দিয়ে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছে। এই দুই পক্ষ টাকা ভাগাভাগি করে মসজিদ নির্মাণের কাজ ফেলে রেখেছে।

একই অবস্থা ১৪ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হতে যাওয়া বরগুনা জেলা মডেল মসজিদের। এই মসজিদের টেন্ডার পেয়েছে এমজিসি অ্যান্ড এমডিসি জয়েন্ট ভেঞ্চার নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিছু দিন কাজ করে ফেলে রেখে আর কাজ করবে না বলে আত্মসমর্পণ করে ওই প্রতিষ্ঠান। সেখানেও মুসুল্লিরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। 

মসজিদের ইমাম মাওলানা জাহিদুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমাদের এখানেও বড় একটি মসজিদ ছিলো। সেই মসজিদ ভেঙে মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজ আরম্ভ হয়েছিলো। কিন্তু তিন বছর ধরে কাজ চললেও এখন মসজিদের নির্মাণ কাজ ফেলে রেখেছে ঠিকাদার। দিন দিন মুসুল্লিদের সংখ্যা বাড়ছে, আমরা একটি অস্থায়ী মসজিদ নির্মাণ করে সেখানে নামাজ আদায় করছি। বৃষ্টিতে মুসুল্লিরা ভিজে ভিজে ও করছেন নামাজ আদায় করতে এসে।

অন্যদিকে, আমতলী, বামনা উপজেলায় মডেল মসজিদের নির্মাণ কাজ এখনো শুরু করতে পারিনি ঠিকাদাররা। 

জানতে চাইলে সদর মডেল মসজিদ নির্মাণের টেন্ডার পাওয়া মেসার্স ডালি অ্যান্ড গাজী কনস্ট্রাকশন জয়েন্ট ভেঞ্চারের ঠিকাদার জামাল হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি অতিরিক্ত বিল নেইনি। গণপূর্ত অধিদপ্তর কাজে সহযোগিতা করে না, সময় মত বিল ছাড় করে না তারা। এছাড়াও মসজিদ নির্মাণের কাঁচামালের যেসব দাম ধরে টেন্ডার দেয়া হয়েছিলো এখন বাজারে সেসব কাঁচামালের দাম কয়েক গুণ বাড়তি। তাই আমি কাজ করবো না। 

এমজিসি এ্যান্ড এমডিসি জয়েন্ট ভেঞ্চার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বরগুনা জেলা মডেল মসজিদ নির্মাণের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার জুনায়েদ হোসেন জুয়েল দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, গণপূর্ত বিভাগ সময় মত বিল ছাড় না করায় কাজে ধীরগতি। আমি সবোর্চ্চ আন্তরিক ছিলাম এই মসজিদ নির্মাণ কাজে। কিন্তু এই কাজ করতে গিয়ে গণপূর্ত বিভাগের খামখেয়ালিতে আমার এক কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। তাই আমি কাজ করবো না। অফিসিয়াল সব রীতি অনুযায়ী আমি কাজ ছেড়েছি।

আমতলী ও বামনার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কেউ এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হয়নি।

এ বিষয়ে বরগুনা গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী হাদিসুর রহমান বলেন, ঠিকাদাররা অবহেলা করায় কাজে ধীরগতি। তাই তাদের বাতিল করে নতুনভাবে টেন্ডার দেওয়া হবে মসজিদ নির্মাণের। তবে অতিরিক্ত বিল দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেননি তিনি।

বরগুনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কাওসার হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, প্রশাসনকে অন্ধকারে রেখে কাজ করে যাচ্ছে গণপূর্ত বিভাগ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি আমি। অথচ গণপূর্ত বিভাগ আমাকে কিছু জানাচ্ছে না। তাই বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানিয়েছি আমি।

বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, মডেল মসজিদ নির্মাণে অনিয়মের তথ্য পেয়েছি। এ নিয়ে গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তাদের একাধিকবার সতর্ক করা হয়েছে। এরপরেও তারা ঠিকভাবে কাজ করেননি। আমি মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি জানাবো।
নির্মাণাধীন আধুনিক এসব মডেল মসজিদে নারী ও পুরুষদের আলাদা ওজু এবং নামাজ আদায়ের পাশাপাশি লাইব্রেরি, গবেষণা কেন্দ্র, ইসলামিক বই বিক্রয় কেন্দ্র, পবিত্র কোরআন হেফজ বিভাগ, শিশু শিক্ষা, অতিথিশালা, বিদেশি পর্যটকদের আবাসন, মরদেহ গোসলের ব্যবস্থাসহ ১৬ টি সুবিধা থাকার কথা রয়েছে।

পুলিশ ভেরিফিকেশনে রাজনৈতিক পরিচয় না দেখার সুপারিশ - dainik shiksha পুলিশ ভেরিফিকেশনে রাজনৈতিক পরিচয় না দেখার সুপারিশ সড়ক-রেলপথ ছাড়লেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha সড়ক-রেলপথ ছাড়লেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা ফেসবুকে সতর্কবার্তা দিলেন সারজিস আলম - dainik shiksha ফেসবুকে সতর্কবার্তা দিলেন সারজিস আলম আওয়ামী আমলে শত কোটি টাকা লুট শিক্ষা প্রকৌশলের চট্টগ্রাম দপ্তরে - dainik shiksha আওয়ামী আমলে শত কোটি টাকা লুট শিক্ষা প্রকৌশলের চট্টগ্রাম দপ্তরে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে কমিটি গঠন করা হয়েছে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে কমিটি গঠন করা হয়েছে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটির তালিকা - dainik shiksha শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটির তালিকা ছাত্ররা রাজনৈতিক দল ঘোষণা করবে কি না জনগণ নির্ধারণ করবে - dainik shiksha ছাত্ররা রাজনৈতিক দল ঘোষণা করবে কি না জনগণ নির্ধারণ করবে কুয়েটে ভর্তি আবেদন শুরু ৪ ডিসেম্বর, পরীক্ষা ১১ জানুয়ারি - dainik shiksha কুয়েটে ভর্তি আবেদন শুরু ৪ ডিসেম্বর, পরীক্ষা ১১ জানুয়ারি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0041429996490479