সরকারি হাট-বাজারের ইজারার আয়ের অর্থ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য চিকিৎসায় অনুদানের পরিমাণ বাড়লো। একই সঙ্গে এ অর্থ দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তার আওতাও বেড়েছে।
সংশোধিত ‘বীর মুক্তিযোদ্ধাগণের কল্যাণে সরকারি হাট-বাজারসমূহের ইজারালব্ধ আয়ের ৪% অর্থ ব্যয় নীতিমালা, ২০২২’ থেকে এ তথ্য জানা গেছে। সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সংশোধিত নীতিমালাটি জারি করেছে।
সংশোধিত নীতিমালা অনুযায়ী, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্য সরকারি সহায়তার পরিমাণ এক লাখ টাকা বেড়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসায় সর্বোচ্চ সহায়তার পরিমাণ বছরে দুই লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে তিন লাখ টাকা করা হয়েছে।
সংশোধিত নীতিমালা অনুযায়ী, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে অর্থ ব্যয়ের খাতের আওতা বাড়ানো হয়েছে। আগে মুক্তিযোদ্ধাদের ‘চিকিৎসা’ এবং ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত’ এ দুই খাতে অর্থ বরাদ্দের সুযোগ ছিল। নীতিমালা সংশোধন করে ‘মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সংশ্লিষ্ট বিবিধ কার্যক্রম’ যুক্ত করা হয়েছে।
এখন হাট-বাজারের ইজারার আয়ের অর্থ থেকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সংশ্লিষ্ট বিবিধ কার্যক্রমে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া যাবে। তবে এ বিষয়ে বলা হয়েছে, উল্লিখিত কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয়তার নিরিখে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর অনুমোদনে এই খাতে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া যাবে।
নীতিমালা সংশোধন করে বলা হয়েছে, বিশেষায়িত হাসপাতালে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জটিল রোগের চিকিৎসা বা মুমূর্ষ রোগীর জরুরি অপারেশন ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে ৭৫ হাজার টাকার অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন হলে বিশেষায়িত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধার চিকিৎসা বাবদ বছরে সর্বমোট সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যয় করতে পারবে। তবে শর্ত থাকে যে, চিকিৎসা সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে এ সংশ্লিষ্ট ব্যয় বিবরণী মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে।
আগে এক্ষেত্রে ৭৫ হাজার টাকার বেশি অর্থের প্রয়োজন হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সুপারিশে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যয় করা যেত।
সংশোধিত নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা মঞ্জুরির ক্ষেত্রে চিকিৎসা সেবার মান ও ব্যয় যাচাইয়ের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কমিটি গঠন করা যাবে। কমিটির সদস্যদের সভায় অংশগ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের অনুকূলে বরাদ্দ করা অর্থ থেকে পরিপত্র দিয়ে নির্ধারিত হারে সম্মানী দেওয়া যাবে।
এছাড়া নীতিমালায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসায় বিশেষায়িত হাসপাতালের তালিকায় ‘জাতীয় হৃদরোগ ফাউন্ডেশন হাসপাতাল এবং গবেষণা ইনস্টিটিউট, মিরপুর, ঢাকা’ এর পরিবর্তে ‘ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট, মিরপুর-২, ঢাকা’ করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের ২১ সেপ্টেম্বর সরকারি হাট-বাজারের ব্যবস্থাপনা ইজারা পদ্ধতি ও এ থেকে প্রাপ্ত আয় বণ্টন সম্পর্কিত নীতিমালা এবং একই বিভাগের ২০১২ খ্রিষ্টাব্দের ৭ মে’র পরিপত্র অনুযায়ী দেশের সরকারি হাট-বাজারের ইজারালব্ধ আয়ের ৪ শতাংশ অর্থ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে ব্যয়ের জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক হিসাবে জমা করার সরকারি নির্দেশনা রয়েছে। সেই নির্দেশনা বাস্তবায়নে এ নীতিমালাটি করা হয়।