বরেণ্য চিত্রশিল্পী কাইয়ুম চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দের ৯ মার্চ ফেনীতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ময়মনসিংহ সিটি কলেজিয়েট স্কুলে এসএসসি, ঢাকা আর্ট কলেজে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।
১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা আর্ট কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন। ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দে পাকিস্তান অবজারভারে প্রধান আর্টিস্ট হিসেবে যোগ দেন। একই সঙ্গে সাপ্তাহিক চিত্রালী ও দৈনিক পূর্বদেশেও চাকরি করেন।
১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দে সতীর্থ আমিনুল ইসলাম, সৈয়দ জাহাঙ্গীরকে নিয়ে কাইয়ুম চৌধুরী গিয়েছিলেন কলকাতায়। ব্রিটিশ কাউন্সিলের তরুণ কর্মকর্তা জিওফ্রে হেডলির আহ্বানে এই সফর। কলকাতায় দেখা করেছিলেন সত্যজিৎ রায় ও খালেদ চৌধুরীর সঙ্গে। ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে বন্ধুবর গাজী শাহাবুদ্দিন আহমদের সন্ধানী প্রকাশনী যাত্রা শুরু করে জহির রায়হানের ‘শেষ বিকেলের মেয়ে’ গ্রন্থ প্রকাশের মাধ্যমে।
১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে মাওলা ব্রাদার্স সুজনশীল প্রকাশনার অধ্যায় উন্মোচন শুরু করে আবদুশ শাকুরের ‘ক্ষীয়মাণ’ এবং সৈয়দ শামসুল হকের কাব্যগ্রন্থ ‘একদা এক রাজ্যে’ প্রকাশ দ্বারা। এই দুই প্রকাশনা সংস্থার কাজের পেছনে বরাবরই কাইয়ুম চৌধুরী সক্রিয় থেকেছেন। তিনি আরো প্রচ্ছদ আঁকেন ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত শামসুর রাহমানের প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রথম গান, দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে। ১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দে কাইয়ুম চৌধুরী ফের যোগ দেন আর্ট কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে। তিনি ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে মুক্তিযুদ্ধের সময় শিল্পীদের নিয়ে গঠিত চারুকলা শিল্পী সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে ১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দে অধ্যাপক হিসেবে কাইয়ুম চৌধুরী অবসরে যান। তবে তিনি ২০০২ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাদান করেন। চিত্রকলাকে দেশের গণ্ডি থেকে বহির্বিশ্বে পরিচিত করে তুলতে কাইয়ুম চৌধুরীর ভূমিকা অবিস্মরণীয়। বোদ্ধাদের কাছে তিনি ‘রঙের রাজা’ হিসেবেই পরিচিত। বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে স্বীয় প্রতিভার আলোকচ্ছটায় রেখেছিলেন প্রাণবন্ত। ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে ঢাকায় আর্মি স্টেডিয়ামে উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবে বক্তব্য দেয়ার সময় তিনি মারা যান।