কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ব্রহ্মপূত্র নদের পানি বাড়তে শুরু করাতে বন্যা পরিস্থির অবনতি হয়েছে। যার ফলে পানিবন্দিতে ৬ হাজার মানুষ মানবেতর জীবন পার করছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পানি বৃদ্ধির ফলে স্থানীয় সড়ক তলিয় গিয়ে নিম্ন অঞ্চলের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। জেলার চিলমারী উপজেলার শাখাহাতি,করাইবরিশাল,রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের নয়াবস,চরউদনা,চরবড় ভিটা, নয়ারহাট ইউনিয়নের উত্তর খাওরিযা,বাতাসু কাজল ডাঙ্গা,বজরা দিয়ার খাতা খেরুয়ারচরসহ প্রায় ৫০টি গ্রামে গত ২-৩দিন ধরে বন্যায় প্লাবিতরা মানবেতর জীবন-যাপন করছে। বসত-বাড়িতে পানি ওঠায় তারা ঠিকমতা রান্না করতে পারছেন না। এ ছাড়া, স্যানিটশন ও বিশুদ্ধ পানির সংকট ভুগছে বন্যাকবলিত এসব পরিবার।
চিলমারী ইউনিয়নের শাখাহাতি গ্রামের নুর হোসেন বলেন, ‘আমার বাড়ির সামনে ২ দিন থেকে পানি যে পানি বাড়ছে কখন জানি ঘরে পানি ঢুকে। ছাওয়া-পাওয়া (ছেলে-মেয়ে) নিয়ে খুব চিন্তায় আছি।’
একই এলাকার মিষ্টার আলী, মো.নয়া মিয়া, মোছা.রাবেয়া বেগম বলেন, ‘নদীর ভাঙনে হামার (আমাদের) বাড়ি ঘর ভাঙি গেইছে. অন্য জায়গায় আছি।’
এদিকে রাণীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মনজুরুল ইসলাম মনজু বলেন, ‘আমার ইউনিয়নে প্রায় সাত শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ত্রাণ বিতরণ অব্যহত রয়েছে।’
নযারহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, পানি বাড়ায় ৫৭০টি পরিবারের বাড়িঘর নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে। এ ছাড়া, হুমকির মুখে রয়েছে চারশতাধিক পরিবার।
চিলমারী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস জানিয়েছে, বন্যার্তদের তালিকা করা হচ্ছে। এ ছাড়া ইতোমধ্যে বন্যা কবলিত ৩ শতাধিক পরিবারে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন ও পুণবাসন কর্মকর্তা (পি আইও) মো. মোশারফ হোসেন বলেন, পানিবন্দি হয়েছেন ছয় হাজার মানুষ। এ পর্যন্ত ১৩ টন চাল ও নগদ এক লাখ টাকা পেয়েছি। ইতোমধ্যে তিন শতাধিক পরিবারের মাঝে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে।
উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, বন্যা কবলিত এলাকা গুলোতে সরেজমিনে গিয়ে মানুষের খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে।
বন্যা পরিস্তির বিষয়ে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এই পানি বৃদ্ধির অবস্থা ৩ থেকে ৪ দিন পর্যন্ত থাকতে পারে। তারপর পানি নেমে যাবে।