ঢাকায় কয়েক লাখ শিক্ষার্থী সমাগমের লক্ষ্য নিয়ে বিশাল সমাবেশ আয়োজনের প্রস্তুতি শেষ করেছে ছাত্রলীগ।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নৌকার আদলে তৈরি করা হয়েছে মঞ্চ। সামনে অতিথিদের জন্য সারি করে বসানো হয়েছে চেয়ার। এরপর বিস্তীর্ণ খোলা ময়দানে বাঁশের বেড়া দিয়ে স্থান ভাগ করে দেওয়া হয়েছে সংগঠনের বিভিন্ন ইউনিটের জন্য।
শোকের অগাস্ট মাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব স্মরণে শুক্রবার বিকাল ৩টায় শুরু হবে এই সমাবেশ, যাতে প্রধান অতিথি থাকবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
ছাত্রলীগের নেতারা জানান, মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান থাকবেন। মঞ্চের সামনে দেড় হাজার চেয়ার থাকবে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের সাবেক নেতাসহ আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য।
ব্যাপক শিক্ষার্থী সমাগম ঘটাতে মাইকিং, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার ও লিফলেট বিতরণ ছাড়াও ছাত্রলীগের ইউনিটগুলোকে ইতোমধ্যে নানা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সমাবেশ উপলক্ষে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বাদে ২৯৮ সদস্যবিশিষ্ট ১৮টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় নেতাদের নেতৃত্বে ১২৭টি সমন্বয় টিম গঠন করা হয়েছে।
সমাবেশের আগের দিন বৃহস্পতিবার দুপুরে মঞ্চস্থল পরিদর্শন করেন ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।
সেখানে সাদ্দাম সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন। আমাদের প্রস্তুতি এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এই ঐতিহাসিক ছাত্র সমাবেশের প্রস্তুতি গোটা বাংলাদেশের ৫৬ হাজার বর্গমাইল ছুঁয়ে গিয়েছে। বাংলাদেশের ৫ কোটি শিক্ষার্থীকে ছুঁয়ে গেছে।
“আমাদের স্বপ্নের নিরাপত্তার জন্য, দেশের নিরাপত্তার জন্য, আমাদের উন্নত ভবিষ্যতের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য এই ছাত্র সমাবেশে শিক্ষার্থীরা শামিল হবে। শুধু ছাত্রলীগের ৫ লাখ কর্মী অংশগ্রহণ ছাড়াও কয়েক লাখ সাধারণ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে।”
সমাবেশে অন্য কোনো সংগঠনকে দাওয়াত দেওয়া হয়েছে কি না- জানতে চাইলে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, “আমরা সকল ছাত্র সংগঠনকে আমরা আমন্ত্রণ জানিয়েছি এই অনুষ্ঠানে। যারা এদেশের যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে সাফাই গেয়েছে, এদেশে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের পক্ষে যারা সাফাই গেয়েছে এবং যারা সামরিক স্বৈরশাসকের সেবাদাসের ভূমিকা পালন করেছে, তাদের ব্যতীত সকল সংগঠনকে আমরা আমন্ত্রণ জানিয়েছি।”
তিনি বলেন, “আগামীকালকের সমাবেশ রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি অবিশ্বাস্য পরিবর্তন নিয়ে আসবে। এই ছাত্র সমাবেশের মধ্য দিয়ে আমরা গোটা বাংলাদেশকে এই বার্তা দিতে চাই যে, আমরা যেমন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়, জাতির পিতার আদর্শে বলিয়ান থাকব, একইসঙ্গে আমরা খুনি, সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদীদের সাথে কম্প্রোমাইজ করার কোনো জায়গা ছাত্র সমাজে নেই।”
সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, “আগামী কালকের সমাবেশে লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীদের নিয়ে আমরা উন্মুক্তভাবে শপথ নিতে চাই, দেশবিরোধী যে কোনো অপশক্তির অপতৎপরতাকে রুখে দিতে এদেশের তারুণ্য সদাপ্রস্তুত রয়েছে।”