ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সে অধ্যয়নরত এক শিক্ষার্থীকে মেরে জখম করার অভিযোগ উঠেছে বিজয় একাত্তর হলের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রাকিবুল হাসান নূরের বিরুদ্ধে। বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) রাত ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে বিজয় একাত্তর হলে এই ঘটনা ঘটে। এসময় রিদওয়ানের মুখে আঘাত করে রক্তাক্ত করা হয়। এছাড়াও তার গোপনাঙ্গে লাথি দিলে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন তিনি। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এসব বিষয়ে উল্লেখ করে ভুক্তভোগী রিদওয়ান হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
ভুক্তভোগী রিদওয়ানুল হক (২০১৬-১৭ সেশন) মাস্টার্সের সমাজকল্যাণ বিভাগে অধ্যয়নরত এবং বিজয় একাত্তর হলের যমুনা ব্লকের ১০,০০৫নং রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী। অন্যদিকে অভিযুক্ত রাকিবুল হাসান নূর গত ২৬ আগস্ট ঘোষিত কমিটিতে বিজয় একাত্তর হলের আইন উপ-সম্পাদক মনোনীত হন। তিনি জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের ৩য় বর্ষের (২০১৮-১৯ সেশন) শিক্ষার্থী এবং বিজয় একাত্তর হলের যমুনা ব্লকের ৮০০৫নং আবাসিক শিক্ষার্থী।
অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী বলেন, রিদওয়ানুল হক যথারীতি রাতে পড়া শেষ করে কক্ষে ফিরতে লিফটে উঠছিলেন। এসময় রাকিবুল তাকে তার 'ফোনে ব্যাগ লেগেছে বলে উচ্চবাচ্য করলে' দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে রাকিবুল হুডির কলার টেনে রিদওয়ানুলকে লিফটের বাইরে বের করতে চাইলে রিদওয়ানুলের সাথে ধস্তাধস্তি হয়। পরে রিদওয়ান ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক হল সভাপতি সজীবুর রহমানের রুমে যায়।
এর মাঝে রাকিবুল ফের রিদওয়ানুলকে নিচে নিয়ে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়। উত্তেজিত রাকিবুল সময়ক্ষেপণ না করেই ছাত্রলীগের সভাপতির কক্ষের বাইরে রাকিবুলের মুখে আঘাত করেন। এতে তার চেহারা রক্তাক্ত হয়ে যায়। এক পর্যায়ে রাকিবুল তার গোপণাঙ্গে লাথি দেয়। এতে কিছুক্ষণের জন্য সে জ্ঞান হারালে তার বন্ধুরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত রাকিবুল হাসানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, লিফটের উঠার সময় ধাক্কা লাগা থেকে আমাদের হাতাহাতি হয়েছে। আমি তাকে পরিচয় জানতে হল মাঠে আসার জন্য বলি। পরে সেও আমাকে মেরেছে, আমিও তাকে মেরেছি। হয়তো আমি একটু বেশি মেরেছি। এজন্য আমি রাতে তার রুমে গিয়ে স্যরি বলে এসেছি। আমার গায়েও তার খামচির দাগ রয়েছে।
ভুক্তভোগী রিদওয়ানুল হক বলেন, রাকিবুল আমার জুনিয়র। তার সাথে সর্বোচ্চ ভদ্রতা বজায় রেখে আচরণের পরেও সে আমাকে মেরে রক্তাক্ত করেছে। আমার বন্ধুরা আমাকে ঢাকা মেডিকেল নিয়ে যায়। ডাক্তার আমাকে এক্স-রে করতে বলেছেন ও ওষুধ দিয়েছেন। আমি হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমি তার সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।
হল প্রাধ্যাক্ষ অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছিরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আজকে এমন ঘটনা শুনেছি। ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগপত্রও হাতে পেয়েছি। এর সত্যতা যাচাইয়ের পর যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অবশ্য সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রাকিবুল হাসান নূরের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ নতুন নয়। এর আগে ২০২২ সালের ১৬ মে সন্ধ্যায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তনে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করায় প্রক্টর বরাবর রাকিবুল হাসান নূরের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ছাত্রী। তখন বিষয়টি নিয়ে একাধিক সংবাদ মাধমে খবর প্রকাশিত হয়েছিল।