যশোরের চৌগাছায় এক কলেজছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে চৌগাছা-মহেশপুর কাটগড়া বাওড়ের পাশে এই ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ঐ শিক্ষার্থী যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এই অভিযোগে সুশান্ত দাস (১৯) নামে এক যুবককে আটকের পর ঝিনাইদহের মহেশপুর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে চৌগাছা থানা পুলিশ। আটককৃত সুশান্ত দাস চৌগাছা উপজেলার সুখপুকুরিয়া ইউনিয়নের সুখদেব দাসের ছেলে।
জানা গেছে, ভুক্তভোগী ঐ শিক্ষার্থী ও অভিযুক্ত সুশান্ত একই কলেজে পড়াশোনা করে। মঙ্গলবার দুপুরে তারা দুজন কলেজ শেষ করে চৌগাছা-মহেশপুর কাটগড়া বাওড়ের দিকে যায়। ঐ জায়গায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে সুশান্ত ছাড়াও আরও তিন যুবক তাকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। এলাকাবাসী অজ্ঞান অবস্থায় ঐ শিক্ষার্থীকে চৌগাছার একজন পল্লি চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করার পরামর্শ দেন। সেখান প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিক্ষার্থীকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
সুখপুকুরিয়া ইউনিয়নের পুড়াপাড়া ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কামাল হোসেন বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। উদ্ধার করার সময় মেয়েটি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তিনি বলেন, স্থানীয় কিছু যুবক সুশান্তকে আটক করে রেখেছিল। ঐ এলাকাটা চৌগাছা সীমানার মধ্যে নয়। তবুও আমাদের ইউনিয়নের ছেলে-মেয়ে হওয়ায় চেয়ারম্যানের নির্দেশে সেখানে গিয়ে তাকে উদ্ধার করি। পরবর্তীতে ছেলেকে চৌগাছা থানার পুলিশের কাছে সোর্পদ করি।
চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আল ইমরান বলেন, মেয়েটির কাছে শুনতে চাইলে সে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের কথা মাথা নেড়ে সম্মতি দিয়েছে। সে মানসিকভাবে আক্রান্ত। মেয়েটির বুকে, তলপেটেসহ বিভিন্ন জায়গায় দুর্বৃত্তরা লাথি, কিল-ঘুসি মেরে আহত করেছে। মেয়েটি চিৎকার ও ছটফট করার কারণে চিকিৎসকদের কোনো কথারই উত্তর দেয়নি।
ভুক্তভোগী মেয়েটির চাচা যশোর জেনারেল হাসপাতালে সাংবাদিকদের বলেন, সুশান্তের সঙ্গে আমাদের মেয়ের কোনো প্রেমের সম্পর্ক আছে কিনা জানি না। সে অসুস্থ বলে এখনো কিছু বলেনি। তবে অনেকেই তাকে ধর্ষণ করেছে বলে সে মাথা নেড়ে সম্মতি জানিয়েছে। একইসঙ্গে বেধড়ক মারপিট করা হয়েছে।
চৌগাছা থানার ওসি ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, ঘটনাস্থল পার্শ্ববর্তী মহেশপুর থানার অধীনে হওয়ায় সুশান্ত দাসকে আটক করে মহেশপুর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় মহেশপুর থানা পুলিশ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার পার্থ প্রতীম চক্রবর্ত্তী বলেন, মেয়েটির ধর্ষণের আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর সঠিক তথ্য দিতে পারবো। তবে মেয়েটি এখন গুরুতর অসুস্থ।