নানা বিতর্ক ও গোঁজামিল দিয়ে বছরের পর বছর ধরে চলে আসা উত্তরা ইউনিভার্সিটির একাধিক শিক্ষক ও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ছাত্রীদের নানাভাবে হয়রানীর অভিযোগও দীর্ঘদিনের। কিন্তু সম্প্রতি মোবারক নামের একজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একাধিক ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির শত শত ছাত্র-ছাত্রী সোমবার (২রা সেপ্টেম্বর) বিকেল থেকে অভিযুক্তদের শাস্তি দাবিতে মিছিল ও বিক্ষোভ করলে সেখানে যমুনা টিভিসহ কয়েকটি টিভি চ্যানেল ও পত্রিকা এবং অনলাইন পত্রিকার সাংবাদিক উপস্থিত হন। রাতে ফিরে গিয়ে আজ মঙ্গলবার ফের আসার কথা রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক জানান, সাংবাদিকদের নানাভাবে বোঝানো এবং আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীদের শান্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আইন বিভাগের সাবেক ছাত্রদের ব্যবহার করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
হাবিবুর রহমান নামের সাবেক একজন ছাত্র জানান, বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে ওঠা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান উত্তরা ইউনিভার্সিটি। ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠা লাভের পর থেকে এমএসসি ইন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) প্রোগ্রামের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) থেকে এ প্রোগ্রাম পরিচালনার কোনো অনুমোদনই নেয়া হয়নি। সে হিসেবে ১৭ বছর অননুমোদিত এ প্রোগ্রামে শিক্ষার্থী ভর্তি ও ডিগ্রি দিয়েছে বেসরকারি এ বিশ্ববিদ্যালয়টি।
জানা যায়, অননুমোদিত প্রোগ্রাম পরিচালনার বিষয়টির ব্যাখ্যা চেয়ে উত্তরা ইউনিভার্সিটিকে চিঠি দেয় ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগ। এ প্রসঙ্গে ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার একজন কর্মকর্তা বলেন, চার বছর আগে একটি সনদ যাচাইয়ের কাজ করতে গিয়ে দেখি উত্তরা ইউনিভার্সিটি এমএসসি ইন সিএসই ডিগ্রি দিচ্ছে। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়টিকে এ প্রোগ্রাম পরিচালনার অনুমোদন দেয়া হয়নি। এমনকি এ প্রোগ্রামের জন্য কখনো আবেদনও করেনি তারা। তত্ক্ষণাৎ ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা যুক্তি দেখায়, তাদের এমএসসি ইন (কম্পিউটার সায়েন্স) সিএস প্রোগ্রামের অনুমোদন রয়েছে। সিএস প্রোগ্রামে শিক্ষার্থী না পাওয়ায় তারা সিএসই ডিগ্রি দিচ্ছে। এটা কোনো যুক্তি হতে পারে না। উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দিলেও ইউজিসির তৎকালীন সচিব ড. ফেরদৌস জামানসহ কয়েকজনকে দুবাই ঘুরিয়ে আনার বিনিময়ে চিঠসহ ফাইল চাপা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।