ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের দাবিতে ছাত্র অধিকার পরিষদের অবস্থান কর্মসূচির স্থানে বাধা ও নেতা-কর্মীদের নিয়ে হাসি-ঠাট্টার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে।
রোববার পূর্বঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ডাকসু ভবনের সামনে কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো কিন্তু কর্মসূচির শুরুতেই সেই স্থানটি ক্রিকেট খেলার অভিযোগ ওঠে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। পরবর্তীতে সেখান থেকে সরে গিয়ে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে মানববন্ধন করেন। সেখানে এসেও ছাত্রলীগ কর্মীরা মোটরসাইকেলের হর্ন বাজিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে ছাত্র অধিকার পরিষদের অবস্থান কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আগেই তারা ডাকসু ভবনের সামনে ক্রিকেট ব্যাট, স্টাম্প, লাঠি নিয়ে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগ। আমরা অবস্থান পরিবর্তন করে রাজু ভাস্কর্যে দাঁড়ালে সেখানে এসে মোটরবাইকের হর্ন বাজানো, পিকআপ দিয়ে শব্দ দূষণ করা, অশ্রাব্য কটুক্তি করে শ্লোগান দিয়ে বাধাগ্রস্ত করেন তারা। ডাকসু কেনো হয় না, তা আজকে প্রমাণিত হয়ে গেলো! ডাকসু হলে ছাত্রলীগ কোথাও জিততে পারবে না।
সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের একটি প্লাটফর্ম হলো ছাত্র সংসদ। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্ষমতাসীনদের যোগসাজশে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের একচ্ছত্র ত্রাস বজায় রাখার উদ্দেশে এই নির্বাচন বন্ধ রেখেছে। কেনোনা নির্বাচন হলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগকে ভোট দেবে না। সারাদেশের ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। অবিলম্বে ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে।
ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক ও ছাত্র অধিকার পরিষদের সহ-সভাপতি আখতার হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের জন্য যে বিশ্ববিদ্যালয়, সেখানে সব থেকে বড় বঞ্চিত অংশই হলো শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সমিতি, কর্মকর্তা-কর্মচারী সমিতি সব নির্বাচন হয়, হয় না শুধু ডাকসু নির্বাচন। অথচ শিক্ষার্থীরা প্রতিবছরই ছাত্র সংসদের জন্য ফি দিচ্ছে। মনে রাখতে হবে, ডাকসুই শিক্ষার্থীদের অধিকারের বিষয়, ঐচ্ছিক কিছু নয়। ডাকসু নির্বাচন না করাটা প্রশাসনের নৈতিক এবং প্রশাসনিক ব্যর্থতা।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক রাসেল আহমেদ, বিজ্ঞান সম্পাদক আখতারুজ্জামান সম্রাট, ঢাবি শাখার সেক্রেটারি আহনাফ খান সাঈদ, যুগ্ম সম্পাদক নুসরাত তাবাসসুম অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধন কর্মসূচি শেষে মিছিল বের করে তারা। মিছিলটি রাজু ভাস্কর্য থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ১১ মার্চ দীর্ঘ ২৮ বছর পর ডাকসু নির্বাচন হয়। এরপর থেকে আর নির্বাচন হয়নি। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ-১৯৭৩ এ প্রতি বছর ডাকসু নির্বাচন আয়োজনের কথা বলা হয়েছে।