দৈনিক শিক্ষাডটকম, ঢাবি প্রতিনিধি: বামপন্থী ছাত্রসংগঠন ছাত্র ইউনিয়নের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় ভুক্তভোগী ছাত্রকে গাঁজার পুটলি ধরিয়ে ছবি তোলে অভিযুক্তরা। এমন কি ভুক্তভোগীর স্মার্টফোন চেক করে তার ব্যক্তিগত তথ্যও সংগ্রহ করে তারা। তবে অভিযুক্তরা তার মোবাইল ফোন অথবা মানিব্যাগ কিছুই নিয়ে যাননি। বুধবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগপত্রে তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘আমি ছাত্র ইউনিয়ন করে কিনা এমন প্রশ্ন করে সংঘবদ্ধভাবে একদল যুবক আমার স্মার্ট ফোন চেক করতে চান। ফোন দিতে না চাইলে তারা আমাকে মারধর করে।’
বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রক্টর অধ্যাপক মাকসুদুর রহমান বলেছেন, ‘আমি ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেছি। তবে সে কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। একই বিষয়ে আমাদের আরেকটি তদন্তও চলছে, সেটার সঙ্গেও রিলেট (সম্পৃক্ত) করা যায় কিনা দেখা হচ্ছে। এ সব বিষয়ে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করি। আমরা অবশ্যই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেব।’
এ দিকে প্রক্টরের কাছে দেওয়া লিখিত অভিযোগে ওই শিক্ষার্থী উল্লেখ করেন, তিনি বাইরে ভাড়া বাসায় থাকেন। বুধবার টিএসসি থেকে বাসায় ফিরছিলেন। পথে শহীদ মিনার ও জগন্নাথ হল সংলগ্ন আবাসিক এলাকার ফুটপাতে ৬-৭ জনের একটি দল তাকে জিজ্ঞাসা করে, তিনি ছাত্র ইউনিয়ন করেন কি না? বারবার একই প্রশ্ন করা হলেও তিনি জানান, তিনি কোনো রাজনৈতিক দলে জড়িত নন। একপর্যায়ে তারা স্মার্টফোন চেক করতে চায় এবং মেসেঞ্জার (ফেসবুক) চ্যাটবক্স দেখাতে বলে। তিনি দেখাতে না চাইলে তারা মারধর করে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আরও বলেন, মাথা ও মুখে হাত দিয়ে আঘাত করতে থাকায় তিনি মেসেঞ্জারের চ্যাটবক্স দেখাতে বাধ্য হন। তার ব্যাগেও তল্লাশি চালানো হয়। পরে ব্যাগে কয়েকটা কাগজের গোল্লা ঢুকিয়ে দিয়ে তারা বলে, তিনি কেন গাঁজা নিয়ে ঘুরছেন। এ অবস্থায় তারা কান ধরিয়ে ছবি তোলে এবং গাঁজার ছবি তোলে। বাসার ঠিকানা নেয়, ব্যক্তিগত বিভিন্ন তথ্য নেয়।
ছবি ও ব্যক্তি তথ্য অপব্যবহার হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে উল্লেখ করে এ বিষয়ে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন।
গত ১ ডিসেম্বর টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে ছাত্রলীগের প্রধানমন্ত্রীর ছবিসংবলিত মেট্রোরেলের অস্থায়ী ফেস্টুন সরানো নিয়ে ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের মারধর করে ছাত্রলীগ। পরে ছাত্রলীগ বামপন্থী ছাত্রসংগঠন ছাত্র ইউনিয়নের নেতা-কর্মীদের খুঁজে খুঁজে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে মারধর করেছে।