জবিতে সাত মাসেও চিহ্নিত হয়নি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন, আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা - দৈনিকশিক্ষা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়জবিতে সাত মাসেও চিহ্নিত হয়নি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন, আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা

জবি প্রতিনিধি |

একের পর এক ছোট থেকে মাঝারি আকারের ভূমিকম্প হওয়ার পরও যেন টনক নড়ছে না জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। দেশে শক্তিশালী ৯ মাত্রার ভূমিকম্পের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। ক্যাম্পাসের সবগুলো ভবনই ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে।

ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, প্রশাসনিক ভবন, কলা ভবন, সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদ ও বিজ্ঞান অনুষদের ভবনগুলোর কোথাও দেখা যাচ্ছে ফাটল, কোথাও খসে পড়ছে ইট ও পলেস্তারা। বড় বড় ফাটল ও খসে পড়া পলেস্তারায় রঙের প্রলেপ লাগিয়ে চকচকে করছে প্রশাসন।

গত মার্চে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে প্রশাসন বরাবর চিঠি দেয় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এর মধ্যে দুটি পাঁচতলা আর দুটি চারতলা ভবন উল্লেখ থাকলেও কোন কোন ভবন তা নির্দিষ্ট করা হয়নি। চিঠি পাওয়ার প্রায় সাত মাস পেরিয়ে গেলেও ভবনগুলোই চিহ্নিত করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যদিও প্রশাসনের দাবি, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোকে রেট্রোফিটিং করে ব্যবহার উপযোগী করা হচ্ছে। এতে ভবনগুলো মজবুত হবে এবং স্থায়িত্ব বাড়বে।

ধারণা করা হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ভবন এবং কলা ও সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদের চারটি ভবন অতি ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় রয়েছে। এ চার ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধেকের বেশি বিভাগের একাডেমিক কার্যক্রম চলমান। এগুলো ভেঙে ফেললে একাডেমিক কার্যক্রম চালানোর বিকল্প কোনো জায়গা নেই।

ভবন ভাঙার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভবন ছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ সবকটিই পুরনো ভবন। তবে রাজউকের মান অনুযায়ী, ভেঙে ফেলার মতো পরিস্থিতি কোনটিতেই নেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক বলেন, যতক্ষণ ক্যাম্পাসে অবস্থান করি সেটা হোক ক্লাসরুম কিংবা প্রশাসনিক দপ্তর ততক্ষণই আতঙ্কে থাকি, কখন যেন কী হয়ে যায়! বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ভবনই ব্যবহারের অনুপযোগী। বাধ্য হয়েই এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয়। এমন আতঙ্ক থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় নতুন ক্যাম্পাসে যাওয়া। কিন্তু সেটা করতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেন, আমরা যে ভবনে বসে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করছি সে ভবনটির অবস্থা ভয়াবহ। প্রতিনিয়ত ছাদ থেকে খসে পড়ছে চুন-সুরকি। যতক্ষণ অফিসে থাকি মনের মধ্যে আতঙ্ক থাকে। যদি বড় মাত্রার ভূমিকম্প হয় তাহলে এ ভবন খুব সহজেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সিফাত রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ ভবনের অবস্থা নাজুক। ভবনগুলোকে কিছুদিন পর পর রঙ দিয়ে উপরে উপরে সংস্কার করা হয় যেন বাইরে থেকে বোঝাযায় বিল্ডিংগুলো খুবই মজবুত অবস্থায় আছে। প্রশাসনের উচিত এই ক্যাম্পাসের ভবনগুলো জোড়াতালি না দিয়ে নতুন ক্যাম্পাসের কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন করা।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আবৃত্তি সংসদের সভাপতি আহসানুল হক রকি বলেন, অবকাশ ভবনে একটু জোরে হাঁটলে কিংবা দেয়ালে টোকা দিলেই পলেস্তারা খসে পড়ে। এ অবকাশ ভবনে ২০টির অধিক সংগঠন তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আমরা প্রত্যেকেই আতঙ্কের মধ্যে থাকি। অবকাশ ভবনের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকটি ভবনই ভূমিকম্পের চরম ঝুঁকিত আছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, সরকার আমাদের যে নির্দেশনা দেবে আমরা সেটা অনুসরণ করার চেষ্টা করব। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ভবনই ঝুঁকিপূর্ণ। হুট করেই তো এগুলো ভেঙে ফেলা সম্ভব নয়। তার আগে বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে আমাদের। আমরা ভবনগুলো রেট্রোফিটিং করে ব্যবহার উপযোগী করার চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে প্রশাসনিক ভবনে রেট্রোফিটিংয়ের কাজ শুরু হয়েছে, সামনে সবগুলো ভবনই রেট্রোফিটিংয়ের আওতায় আনা হবে।

রাজউকের চিঠির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, আমরা চিঠি পেয়েছি কিন্তু সেখানে চারটি ভবনের কথা উল্লেখ ছিল। তবে সেই ঝুঁকিপূর্ণ ভবন কোনটি সেটি বলা হয়নি। তারা (রাজউক) যে সার্ভে করেছে সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউই অবগত নন। আমাদের কারো সঙ্গে কোন ধরনের আলাপ-আলোচনা না করেই তারা চিঠি দিয়েছে। আর চাইলেই চারটি ভবন ভেঙে ফেলার সুযোগ নেই। তার আগে বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে। সেটার জন্যও সময় প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, আমরা ভবনগুলোকে রেট্রোফিটিং করার জন্য একটি কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা প্রশাসনিক ভবনের কাজ এরই মধ্যে শুরু করেছে। এরপর একটি ডিজাইন দিলে বাকি কাজও শুরু হবে। ক্রমান্বয়ে সব ভবনকে এ প্রকল্পের আওতায় আনার পরিকল্পনা চলছে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ বছরের দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে কমিটি - dainik shiksha জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ বছরের দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে কমিটি স্কুলে ভর্তির আবেদন করবেন যেভাবে - dainik shiksha স্কুলে ভর্তির আবেদন করবেন যেভাবে এইচএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের ফল বৃহস্পতিবার, জানবেন যেভাবে - dainik shiksha এইচএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের ফল বৃহস্পতিবার, জানবেন যেভাবে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা শুরু ২ জানুয়ারি - dainik shiksha অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা শুরু ২ জানুয়ারি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে গণঅভ্যুত্থানে আহতদের তোপের মুখে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা - dainik shiksha গণঅভ্যুত্থানে আহতদের তোপের মুখে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা দপ্তরসহ সাবেক শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রীকে চালাতেন পিয়ন! - dainik shiksha দপ্তরসহ সাবেক শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রীকে চালাতেন পিয়ন! ৬১০ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর শিক্ষা অধিদপ্তরে নিয়োগ চূড়ান্ত! - dainik shiksha ৬১০ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর শিক্ষা অধিদপ্তরে নিয়োগ চূড়ান্ত! গণভবন, ভিকারুননিসার বোন ও আইডিয়ালের কলোনি কোটা বাতিল - dainik shiksha গণভবন, ভিকারুননিসার বোন ও আইডিয়ালের কলোনি কোটা বাতিল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে ভাসানী, শেরেবাংলা-সোহরাওয়ার্দীকেও জাতির পিতা করার পরামর্শ - dainik shiksha ভাসানী, শেরেবাংলা-সোহরাওয়ার্দীকেও জাতির পিতা করার পরামর্শ সমন্বয়কদের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই, সাবধান: সারজিস - dainik shiksha সমন্বয়কদের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই, সাবধান: সারজিস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038669109344482