জবির চাঁদামুক্ত টিএসসিতে দোকানিরা খুশি - দৈনিকশিক্ষা

জবির চাঁদামুক্ত টিএসসিতে দোকানিরা খুশি

আসাদুল ইসলাম, দৈনিক শিক্ষাডটকম |

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে প্রতি মাসে প্রায় তিন লাখ টাকা চাঁদা তুলতো বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মনোনীত নেতা-কর্মীরাই এ চাঁদা তুলতেন বলে জানা গেছে। শাখা ছাত্রলীগের কর্মী বারেক ও মেহেদীর নেতৃত্বে এ চাঁদা ওঠানো হতো যার একটি অংশ যেতো শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদকের পকেটে, বাকি অংশ নিতেন চাঁদা উত্তোলনকারী নেতা-কর্মীরা। 

তবে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এখন চাঁদাবাজি মুক্ত রয়েছে জবির টিএসসি। একাধিক দোকান মালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, টিএসসিতে দোকান চালাতে হলে দিনপ্রতি চাঁদা দিতেই হতো। তবে সরকার পতনের পর কেউ আর চাঁদা দাবি করেনি। টিএসসিতে ‘ফাও’ খাওয়ার প্রথাও এখন আর নেই বলে জানান তারা। পাশাপাশি চাঁদাবাজি না থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে খাবারের দামও পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে। পুনরায় চাঁদাবাজি প্রথা চালু হলে তা সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধের ঘোষনাও দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে চায়ের দোকান রয়েছে মোট ১২টি। খোজ নিয়ে জানা যায়, এসব দোকান থেকে দিনপ্রতি ২০০ টাকা করে চাঁদা নেয়া হতো। এসব দোকান থেকেই প্রতি মাসে চাঁদা উঠতো ৭২ হাজার টাকা। দোকান বন্ধ থাকলেও গুনতে হতো চাঁদার টাকা। টিএসসিতে ভাতের হোটেল রয়েছে চারটি। বড় হোটেলটি থেকে দিনপ্রতি নেয়া হতো ১৪০০ টাকা এবং ছোট তিন হোটেল থেকে নেয়া হতো দিনপ্রতি ৬০০ টাকা। সে হিসেবে চার হোটেল থেকে প্রতি মাসে চাঁদা আদায় করা হতো প্রায় ৯৬ হাজার টাকা। তবে ভাতের হোটেলগুলো বন্ধ থাকলে ওইদিন দেয়া লাগতো না চাঁদা।

এ ছাড়া টিএসসির সিঙ্গাড়া-সামুচা ও টোস্ট-বিস্কুটের দোকান থেকেও দিনপ্রতি চাঁদা নেয়া হতো ৫০০ টাকা। এই দুই দোকান থেকেও মাসে চাঁদা উঠতো ৩০ হাজার টাকা।  টিএসসি সংলগ্ন অন্যান্য ভ্রাম্যমাণ দোকান থেকেও দিনপ্রতি নেয়া হতো ২০০ টাকা। চা ও ভাতের হোটেল ছাড়াও এমন ভ্রাম্যমাণ ক্ষুদ্র দোকান রয়েছে  আরো বেশ কিছু। এর মধ্যে দুটি সরবতের দোকান, একটি খাতা কলমের, পাঁচটি ভ্রাম্যমাণ পোশাকের দোকান। এসব দোকান থেকে প্রতি মাসে চাঁদা উঠতো প্রায় ৫০ হাজার টাকা।  এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন ফুটপাত থেকেও চাঁদা উঠাতো ছাত্রলীগ। এসব দোকান থেকে দিনপ্রতি ১০০ টাকা উঠাতো লাইনম্যান। যার ফলে ছাত্রলীগের চাঁদার পরিমান ছিলো কম। দিনপ্রতি এসব দোকান থেকেও তোলা হতো ৫০ টাকা। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টিএসসির এক চা বিক্রেতা বলেন, আমাদের থেকে প্রতিদিন ২০০ টাকা করে নেয়া হতো। এখানে দোকান চালাতে হলে দেয়া লাগতো। অসুখের কারণে যদি দোকান বন্ধও রাখতাম, তাও টাকা দিতে হতো। ছাত্রলীগের ছেলেপেলে টাকা নিতো। সরকার পতনের পর এখন আর কেউ চাঁদা চায়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হোটেল মালিক বলেন, আমাদের এখানে হোটেল চারটা। ছাত্রলীগের সভাপতি, সেক্রেটারির নির্দেশে তাদের লোকজন টাকা নিতো। চাঁদা নেয়া ছাড়াও অনেকে খেয়ে টাকা না দিয়েও চলে যেতো। সেসব তো হিসেবের বাইরে। এখন আপাতত চাঁদাবাজি বন্ধ আছে। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিএসসি সংস্কার কমিটির সদস্য সোহাগ আহমেদ বলেন, আগে চাঁদাবাজি হতো, কিন্ত এখন সেটা আর হচ্ছে না। এই যে পরিবর্তন, এটা ছাত্রসমাজের পরিবর্তন। আমরা চাই, ছাত্রসমাজের হাত ধরে ইতিবাচক পরিবর্তনের ধারা বজায় থাকুক।

তিনি আরো বলেন, টিএসসিকে সংস্কার করতে আমরা ইতিমধ্যে খাবারের দামও নির্ধারণ করেছি। সামনে যদি আবার টিএসসিতে আবার চাঁদাবাজির অভিযোগ পাই তাহলে আমরা আইনী পদক্ষেপ নেবো। আমরা ছাত্রসমাজ সম্মিলিতভাবে তা প্রতিহত করব।

গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কমপ্লেইন বক্স বন্ধ - dainik shiksha গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কমপ্লেইন বক্স বন্ধ পদত্যাগে বাধ্য করা অধ্যক্ষকে ফুলেল শুভেচ্ছায় ফেরালেন শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha পদত্যাগে বাধ্য করা অধ্যক্ষকে ফুলেল শুভেচ্ছায় ফেরালেন শিক্ষার্থীরা শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম দামে বিটিসিএলের ইন্টারনেট দেয়া হবে: তথ্য উপদেষ্টা - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম দামে বিটিসিএলের ইন্টারনেট দেয়া হবে: তথ্য উপদেষ্টা শিক্ষকের ছোড়া স্কেলের আঘাতে শিক্ষার্থীর চোখ হারানোর অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষকের ছোড়া স্কেলের আঘাতে শিক্ষার্থীর চোখ হারানোর অভিযোগ দুই শিক্ষকের বহিষ্কারের দাবিতে বাউবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ - dainik shiksha দুই শিক্ষকের বহিষ্কারের দাবিতে বাউবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ হলগুলোকে সন্ত্রাসমুক্ত করে ছাড়বো : রাবি উপাচার্য - dainik shiksha হলগুলোকে সন্ত্রাসমুক্ত করে ছাড়বো : রাবি উপাচার্য কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038321018218994