দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর হাতে হস্তান্তরসহ তিন দফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার বেলা ১২টা থেকে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে সোয়া ১২টা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা।
এরপর দুপুর ১টায় আন্দোলন প্রাত্যাহার করেন নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কক্সাম্পাসের প্রজেক্ট ডিরেক্টরকে পদত্যাগের আলটিমেটাম দেন।
এর আগে গতকাল সোমবার আধাঘন্টা রাজধানীর তাঁতীবাজার মোড় অবরোধ করে রেখে। সেখান থেকে ক্যাম্পাসে এসে আন্দোলনকারীরা মঙ্গলবার আবারো তাঁতীবাজার মোড় অবরোধের ঘোষণা দেয়। কিন্তু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামি মহাসম্মেলন চলায় তারা তাদের কর্মসূচির পরিবর্তন আনে।
আন্দোলনের মুখপাত্র তৌসিব মাহমুদ সোহান ঘোষণা দেন, ‘আজ ইসলামি মহাসম্মেলন চলায় এমনিতেই পুরো ঢাকা প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। তাই আমরা আমাদের কর্মসূচি তাঁতীবাজার না গিয়ে ক্যাম্পাসেই প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান করবো।
এরপর শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে ‘দ্বিতীয় ক্যাম্পাস আবাসন, কবে দিবা প্রশাসন?’ ‘প্রয়োজনে রক্ত নাও, তবুও মোদের হল দাও, ‘প্রশাসনিক মূলা চাষ, আর্মি চাইলে সর্বনাশ’, ‘আর্মির হাতে দাও কাজ, যদি থাকে হায়া-লাজ’—এরকম বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ ব্যাচের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের সামনে মূলা ঝুলিয়ে রেখেছে। আমরা মূলায় বিশ্বাস করি না। যদি কেউ মনে করে চক্রান্ত করে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজে দুর্নীতি করবে তাহলে আমরা শিক্ষার্থীরা তা উৎখাত করবো।
এসময় শাখা ছাত্র শিবিরের অফিস সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম বলেন, আমি প্রশাসনের কাছে দাবি জানাবো আপনারা আমাদের সাধারণ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নেন, নয়তো আমরা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিবো।
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী সোহানুর রহমান বলেন, আমাদের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ দ্রুত সময়ে সেনাবাহিনীকে দিতে হবে। উপাচার্য গতকাল বলেছেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের সাথে তিনি একমত। কিন্তু বিগত ভিসিরাও এসবই বলেছেন। জগন্নাথে আর কোনো মুলা চাষ চলবে না।
শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি হলো: ১. স্বৈরাচার আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রজেক্ট ডিরেক্টরকে আইনের আওতায় আনতে হবে এবং ০৭ দিনের মধ্যে সেনাবাহিনীর দক্ষ অফিসারদের হাতে এই দ্বায়িত্ব অর্পণ করতে হবে। ২. শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সুস্পষ্ট ঘোষণা আসতে হবে যে ২য় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর হাতে দেওয়া হয়েছে এবং হস্তান্তর প্রক্রিয়ার রূপরেখা স্পষ্ট করতে হবে। ৩. অবিলম্বে বাকি ১১ একর জমি অধিগ্রহণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং পুরাতন ক্যাম্পাস নিয়ে স্বৈরাচার সরকারের আমলের সকল চুক্তি বাতিল করতে হবে।