জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বর্জ্য অপসারণ কাজের জন্য প্রতি মাসে দেড় লাখ টাকা দাবি করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৩৭ নং ওয়ার্ডের বর্জ্য সংগ্রহের জন্য নিবন্ধনকৃত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘সিকদার ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল’। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর একটি চিঠিও দিয়েছে তারা।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে পাঠানো সিকদার ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৩৭ নং ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত সব সরকারি, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক-বীমা, বাসা-বাড়ি, দোকানপাট থেকে সৃষ্ট বর্জ্য আবর্জনা সংগ্রহ ও অপসারণ করে সেবা দিয়ে আসছে সিকদার ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল। তাদের দাবি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ভবন থেকে প্রতিদিন গড়ে ৮ ভ্যান ও বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল থেকে প্রতিদিন গড়ে ২ ভ্যান করে বর্জ্য অপসারণ করা হচ্ছে। এতে ৩ টি গাড়ি ও তার বিপরীতে চালকসহ ৬ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মীর প্রত্যেকের প্রতিমাসে ১৫ হাজার টাকা বেতন ধরে মোট ৯০ হাজার টাকা এবং একজন সুপারভাইজারের ২০ হাজার টাকা বেতন দাবি করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়াও ভ্যান গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ ও কর্মীদের নাস্তা বাবদ প্রতিমাসে আরো ১০ হাজার টাকা এবং লাভ হিসেবে আরো ২০ হাজার টাকাসহ মোট ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দাবি করেছে তারা। উদাহরণ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একটি প্রতিষ্ঠানের চুক্তির কথাও উল্লেখ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
জানা যায়, সিটি করপোরেশন কতৃক নির্ধারিত বাসা প্রতি ময়লার বিল ১০০ টাকা। তবে কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা নেই। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও ঠিকাদার আলাপ-আলোচনা করে ফি নির্ধারণ করবে। প্রয়োজনে সিটি কর্পোরেশন থেকে প্রতিনিধি দলও থাকবে।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরের সম্পত্তি কর্মকর্তা কামাল হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আগে ময়লার জন্য টাকা নেয়া হতো না। নতুন ঠিকাদার এসে টাকা দাবি করেছে। পরিচ্ছন্নতা কমিটির আহ্বায়কের মৌখিক অনুরোধে এক মাস তারা ফ্রিতে বর্জ্য অপসারণ করে। এরপর থেকে ফি দেয়ার ঠিকাদার চাপ দিতে থাকে। আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়েছি। এ ব্যাপারে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন।
তিনি আরো বলেন, তারা গত কয়েকদিন ধরে তারা ময়লা অপসারণ করছে না। আমি ৩৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে বিষয়টি জানিয়েছি। তিনি ময়লা অপসারণের ব্যবস্থা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্জ্য অপসারণের জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কখনো কোনো টাকা বা ফি গ্রহণ করেনি। শুরুর দিকে শাঁখারিবাজার মোড়ে থাকা কন্টেইনারে সিটি করপোরেশনের কর্মচারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ময়লা নিয়ে ফেলতো। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের সামনে ময়লা রাখা হতো, যা রাতে নিয়ে যেতো সিটি করপোরেশনের কর্মচারীরা। পরে কন্টেইনারটি বাংলাবাজার ফুটওভার ব্রিজের নিচে নেয়া হয়। তখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনো ময়লা অপসারণের জন্য কোনো ফি নেয়া হতো না। তবে নতুন ঠিকাদার আসার পর মার্চ মাসে ফি পরিশোধের জন্য চিঠি পাঠায়।