জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজের লেখা বই নিয়ে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় চলছে বই পড়া উৎসব। উপজেলার প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায়ের ১২২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় ২৪ হাজার শিক্ষার্থী এই বই পড়া উৎসবে অংশ নেন। বই পড়ে তারা জানছেন বঙ্গবন্ধুর জীবনী, রাজনৈতিক দর্শন, মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাসসহ নানা সব অজানা বিষয়। ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবরে শুরু হওয়া এই বই পড়া উৎসব শেষ হবে ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের জুনে। অসমাপ্ত আত্মজীবনী, আমার দেখা নয়া চীন ও কারাগারের রোজনামচা বই তিনটি লেখা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। বঙ্গবন্ধুর রচিত এই বই তিনটি সবাইকে পড়ার সুযোগ করে দিতে তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রশাসন বই পড়া উৎসব কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এই কর্মসূচির নাম দেয়া হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধুকে পড়ো বাংলাদেশকে জানো’। পরে উৎসবের শেষে বই পড়া শিক্ষার্থীদের কুইজ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিজয়ী নির্বাচিত করে তাদের বাইসাইকেল ও স্কুল ব্যাগসহ বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ উপহার হিসেবে দেয়া হবে।
শিক্ষার্থীরা জানান, ২০২০ ও ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে করোনার কারণে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় বই পড়ার উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছিল শিক্ষার্থীরা। এই বই পড়া উৎসব তাদের নতুন করে বই পড়ার প্রতি আগ্রহ তৈরি করেছে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে অনেক অজানা বিষয় সহজেই জানতে পারছে তারা। তাই এই উৎসবে অংশ নিতে পেরে উচ্ছ¡সিত শিক্ষার্থীরা। তেঁতুলিয়া উপজেলার কাজী শাহাবুদ্দীন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী নুসরাত জাহান নদী বলে, আমরা বই পড়া উৎসবের মাধ্যমে নিজের জ্ঞানের জগৎকে আরো বিকশিত করতে পারছি। নিজেরা বই পড়ে বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে নানা অজানা ইতিহাস জানতে পারছি। এতে আমাদের খুব ভালো লাগছে।
একই বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী মরিয়ম আক্তার বলে, আগে আমরা টিভিতে কিংবা পত্রিকাতে বঙ্গবন্ধু সমন্ধে জেনেছি। এবার আমরা পড়ার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে পারছি। মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানতে পারছি। আমরা নিজেদের খুবই গর্বিত মনে করছি।
তেঁতুলিয়া উপজেলার কাজী শাহাবুদ্দীন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মো. ইমদাদুল হক বলেন, এই বই পড়া উৎসব শিক্ষার্থীদের বইমুখী করার পাশাপাশি ভার্চুয়াল জগতের কুপ্রভাব থেকে রক্ষা করবে। এতে করে তাদের জ্ঞান বিকাশের অবাধ সুযোগ সৃষ্টি হবে। সবাই বইমুখী হবে।
তেঁতুলিয়া উপজেলার বীরপ্রতীক আব্দুল মান্নান বলেন, এই বই পড়া উৎসবের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা জাতির পিতাসহ মহান মুক্তিযুদ্ধের নানা অজানা ইতিহাস সম্পর্কে জানবে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ছড়িয়ে যাবে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানার পরামর্শ এই বীরপ্রতীকের।
তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহাগ চন্দ্র সাহা বলেন, বঙ্গবন্ধুর রচিত অসমাপ্ত আত্মজীবনী, আমার দেখা নয়া চীন ও কারাগারের রোজনামচা এই বই তিনটি সবাইকে পড়ার সুযোগ করে দিতে তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রশাসন বই পড়া উৎসব কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। বই পড়া উৎসব চালু রাখার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দেয়ার জন্য পুরস্কার হিসেবে নানা শিক্ষা উপকরণ দেয়া হবে। শিক্ষার্থী ছাড়াও সাধারণ মানুষের মাঝে এই উৎসব চালু করা হয়েছে, যাতে করে সবাই মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে সঠিক ইতিহাস ও তথ্য জানতে পারে।