জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ছাত্রলীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে মো. মমিনউল্লাহ মমিন নামে এক ডিশ ব্যবসায়ীর কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। চাঁদার টাকা না দিতে পারলে ডিশের ব্যবসা বন্ধ রাখতে এবং প্রাণনাশের হুমকিও দেয় ছাত্রলীগ নেতা। এ ঘটনায় আশুলিয়া থানায় অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী।
ভুক্তভোগী মো. মমিনউল্লাহ মমিন আমবাগান এলাকার ডিশ ব্যবসায়ী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন পাথালিয়া ইউনিয়নের পানধোয়া এলাকার বাসিন্দা হাজী মো. ফজর আলীর ছেলে।
অভিযুক্তরা হলেন জাবি ছাত্রলীগের ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক শান্ত মাহবুব এবং উপ-দফতর সম্পাদক হাছিবুর রহমান। তারা জাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের অনুসারী।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আমবাগান এলাকায় ‘আমবাগান ক্যাবল নেটওয়ার্ক’ নামে ডিস ব্যবসা করেন মমিনউল্লাহ মমিন। তবে গত ১৫ এপ্রিল অভিযুক্ত শান্ত মাহবুব ও হাছিবুর রহমান আমবাগান এলাকায় গিয়ে ব্যবসায়ী মমিনের কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এছাড়া চাঁদার টাকা না দিতে পারলে ডিশের ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকিও দেন। এ সময় টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ‘আমবাগান ক্যাবল নেটওয়ার্কের’ দেওয়া ডিশের সংযোগ কেটে দেন অভিযুক্তরা। পরে গত পহেলা মে আমবাগান এলাকায় লাইনম্যান খাইরুল ইসলাম ডিশ লাইনের বিল উত্তোলন করতে গেলে হাছিবুর রহমান তাকে উঠিয়ে নিয়ে মারধর করে সাড়ে ৮ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। আর কখনো বিল তুলতে গেলে হাত-পা ভেঙে দেওয়ার হুমকি দেয় ছাত্রলীগ নেতা হাছিবুর।
ডিশ ব্যবসায়ী মমিন বলেন, দেড় মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করছে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ছাত্রলীগের নেতা শান্ত মাহবুব ও হাছিবুর রহমানসহ আরও ৭-৮ জন ব্যবসা বন্ধ রাখতে হুমকি দিয়ে গেছে। তবুও আমরা ব্যবসা পরিচালনা করায় ডিশের লাইন কেটে দিয়েছে এবং লাইনম্যানকে তুলে নিয়ে যায়। ফলে গত একমাস যাবৎ ডিশ ব্যবসা একেবারেই বন্ধ আছে। ব্যবসা করলে প্রাণনাশেরও হুমকিও দেয়।
লাইনম্যান খাইরুল ইসলাম বলেন, মে মাসের ১ তারিখ ডিশের বিল তুলতে গেলে, হাছিব আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-বেরুনী হলে তুলে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে আমাকে মারধর করেন। এছাড়া আমার সঙ্গে থাকা সাড়ে ৮ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। যদি ডিশের কাজে আমবাগান কিংবা ক্যাম্পাসে যাই, তাহলে জবাই করে ফেলবে বলে হুমকি দেয়।
অভিযুক্ত শান্ত মাহবুব বলেন, বিষয়টি পুরোপুরি মিথ্যা ও বানোয়াট কাহিনী। তারা ভিত্তিহীন অভিযোগ দিয়েছে।
আরেক অভিযুক্ত হাছিবুর রহমান বলেন, শুনেছি ডিশের ব্যবসা নিয়ে কিছুটা ঝামেলা চলছে। সেজন্যই হয়তো এসব অভিযোগ করেছে। যদি কেউ অভিযোগ প্রমাণ করতে পারে, তাহলে যা শাস্তি হবে তাই মেনে নিবো।
পাথালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান পারভেজ দেওয়ান বলেন, এ ধরনের ঘটনা ঘটলে, আমরা আতঙ্কিত থাকি। যেহেতু তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, সেহেতু এসব বিষয়ে তাদের সঙ্গে ঝামেলা হলে বড় ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে।
আশুলিয়া থানার এসআই জাহাঙ্গীর আলম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।