জামালপুর কারাগারে বিদ্রোহে ৬ বন্দির মৃত্যু, জেলারসহ আহত ১৯ - দৈনিকশিক্ষা

জামালপুর কারাগারে বিদ্রোহে ৬ বন্দির মৃত্যু, জেলারসহ আহত ১৯

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক |

জামালপুর জেলা কারাগারে বিক্ষোভ ও সংঘর্ষ চলার সময় গুলিতে ছয় বন্দী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় কারাগারের জেলার, কারারক্ষী ও বন্দীসহ ১৯ জন আহত হয়েছেন। জেলারের কার্যালয়, হাসপাতাল, আটটি ওয়ার্ডে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত বন্দীদের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

আজ শুক্রবার দুপুরে কারাগারের এ ঘটনায় বিস্তারিত সাংবাদিকদের জানান জামালপুর জেলা কারাগারের জেলার আবু ফাতাহ।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন মো. আরমান, মো. রায়হান, মো. শ্যামল, ফজলে রাব্বি ওরফে বাবু, মো.জসিম ও মোহাম্মদ রাহাত। তাঁদের সবার বাড়ি জামালপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। নিহত ব্যক্তিরা ৩০ থেকে ৪৫ বছর বয়সী।

আজ সকালে লাশগুলো উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। কারাগারের জেলার আবু ফাতাহসহ ১৪ জন কারারক্ষী ও ৫ জন বন্দী আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে দুজন কারারক্ষী ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান বলেন, কারাগার থেকে ছয়জনের লাশ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের কীভাবে মৃত্যু হয়েছে, বিষয়টি এখনই বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের পর কার কীভাবে মৃত্যু হয়েছে, তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।

বেলা একটার দিকে কারাগারের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন জেলা কারাগারের জেলার আবু ফাতাহ। তিনি বলেন, গতকাল দুপুরে প্রথমে বন্দীরা দুই দলে বিভক্ত হন এবং তাঁরা উভয়ের মধ্যে মারামারি শুরু করেন। তাদের মধ্যে একটি দল আমাকে এবং আমার কারারক্ষীদের জিম্মি করে গেট খুলে দিতে চাপ দিতে থাকে। একপর্যায়ে অন্য কারারক্ষীরা আমাকে উদ্ধার করেন। পরে বন্দীরা পুরো কারাগারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ভেতরে তাণ্ডব চালান। বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। এ সময় অনেকেই দেয়াল টপকে পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় কারারক্ষীরা ফাঁকা গুলি ছোড়েন। এতে অনেক বন্দী দেয়ালের ওপর থেকে পড়ে যান। কারাগারের এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দ্রুত ছুটে আসেন। তাঁরা পুরোপুরি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।’

আবু ফাতাহ আরও বলেন, কারাগারের এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে কারারক্ষীরা প্রায় ১০০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়েন। যাঁরা মারা গেছেন, তাঁরা অনেকেই নিজেদের মধ্যে মারামারি এবং দেয়াল থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে। তারপরও লাশের ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। ময়নাতদন্তের পর লাশগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। মৃত্যুর ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা করা হবে। জামালপুর জেলা কারাগারে ৬৭০ জন বন্দী রয়েছেন। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা দুইটার দিকে হঠাৎ কারাগার এলাকায় ব্যাপক গুলির শব্দ শুনতে পান। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা কারাগারের আশপাশ থেকে লোকজনকে সরিয়ে দেন। এর পর থেকে কারাগার এলাকা থেকে কিছুক্ষণ পরপর গুলির শব্দ আসছিল। এ ঘটনায় ফৌজদারি এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শহরজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের লোকজন দ্রুত ওই এলাকা থেকে সরে যান। এখনো ওই এলাকায় সেনাবাহিনী ঘিরে রেখেছে।

আজ শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায়, কারাগারে থাকা বন্দীদের স্বজনেরা জড়ো হয়েছেন। কারাগারে উত্তেজনার খবরে তাঁরা বন্দী স্বজনদের খোঁজখবর নিতে আসছেন। তবে তাঁদের এই পরিস্থিতিতে কারাগারের প্রধান ফটকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। কারাগারের প্রধান ফটকসহ চারপাশে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘিরে রেখেছেন। কারাগারে যাওয়ার সড়কে কোনো যানবাহন চলাচল করছে না।

শিক্ষক থেকে সরকারপ্রধান ড. ইউনূস - dainik shiksha শিক্ষক থেকে সরকারপ্রধান ড. ইউনূস পুরনো কারিকুলামে ফেরা - dainik shiksha পুরনো কারিকুলামে ফেরা ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনধারীদের জন্য সুখবর - dainik shiksha ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনধারীদের জন্য সুখবর ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হলো কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে - dainik shiksha ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হলো কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে বুটেক্সে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের রাজনীতি নিষিদ্ধ - dainik shiksha বুটেক্সে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের রাজনীতি নিষিদ্ধ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036070346832275