দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক : রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। ফলে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলই থাকবে। রোববার (১৯ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন।আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী তানিয়া আমীর ও আহসানুল করীম। জামায়াতে ইসলামীর আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলীর পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. জিয়াউর রহমান।
পরে জিয়াউর রহমান বলেন, আমাদের সিনিয়র আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলীর ব্যক্তিগত অসুবিধা রয়েছে। আর অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড জয়নুল আবেদীনও অনুপস্থিত। এই ব্যক্তিগত অসুবিধার কারণে ছয় সপ্তাহ সময় চেয়েছিলাম। আর অন্য পক্ষ দরখাস্ত দিয়েছিলো আদালত অবমাননা এবং নিষেধাজ্ঞার । যেহেতু আমাদের আইনজীবীরা উপস্থিত নাই সেহেতু আদালত এটা ডিসমিস ফর ডিফল্ট করেছেন। অর্থাৎ আইনজীবী উপস্থিত না থাকার কারণে খারিজ করেছেন।
আদালত অবমাননার আবেদনের বিষয়ে আদালত বলেছেন, যেহেতু কনটেম্পটা হয়েছে হাইকোর্টের আদেশ। আপিল বিভাগের আদেশের কোনো কনটেম্পট হয়নি। সে কারণে এটা হাইকোর্ট বিভাগে উপস্থাপন করতে বলা হয়েছে। আর যেহেতু আপিল খারিজ করা হয়েছে, তাই নিষেধাজ্ঞার আবেদনের আর কোনো প্রয়োজনীয়তা থাকল না।
পরবর্তীতে আইনি সুযোগ কি আছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, রেস্টোর আবেদনের সুযোগ আছে। সে ক্ষেত্রে এটা আদালতের এখতিয়ার।
এর আগে রোববার সকালে হরতালে আইনজীবী আসতে পারবেন না কারণ দেখিতে নিববন্ধনের শুনানিতে আপিল বিভাগে ৬ সপ্তাহ সময় চায় জামায়াতের আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলীর জুনিয়র জিয়াউর রহমান। তবে সময়ের আবেদন খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।
এর আগে গত ১৯ অক্টোবর আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, রাজনৈতিক সভা, জনসভা বা মিছিলের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে করা আবেদনটির শুনানির জন্য ৬ নভেম্বর দিন রেখেছিলেন আপিল বিভাগ। ৬ নভেম্বর আপিল বিভাগ নিবন্ধনের বিরুদ্ধে আপিল শুনানির জন্য ১২ নভেম্বর দিন রেখেছিলেন। ১২ নভেম্বর সময় আবেদন করায় এটি ১৯ নভেম্বর রাখা হয়েছিলো।
গত ১ আগস্ট দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে দেওয়া নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন অবৈধ বলে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলে পক্ষভুক্তের আবেদন করেছেন সাবেক সংসদ সদস্য, মুক্তিযোদ্ধাসহ জামায়াতে সমর্থক ৪৭ নাগরিক। আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় তাদের পক্ষে অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড জয়নাল আবেদীন এ আবেদন করেন।
পরে জামায়াতের আইনজীবী প্যানেলের সদস্য অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ সাংবাদিকদের বলেন, জামায়াতের নিবন্ধনের বিষয়ে আপিল বিভাগে বক্তব্য তুলে ধরতে ৪৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক আবেদন করেছেন।
আবেদনকারীদের মধ্যে জামায়াতের সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, হামিদুর রহমান আজাদ, হাফেজা আসমা খাতুন, মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. এম উমার আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আব্দুর রব এবং তিন জন বীর মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন।
এদিকে হাইকোর্ট বিভাগের রায়ে নিবন্ধন অবৈধ করার বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, রাজনৈতিক সভা, জনসভা বা মিছিলের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে করা আবেদনে পক্ষভুক্ত হতে চেয়েছেন ৪২ জন বিশিষ্ট নাগরিক। তারা শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা, লেখক, শিক্ষাবিদ ও বিশিষ্টজন। এ তথ্য নিশ্চিত করেন মামলার আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর।