কুড়িগ্রামের রাজারহাটের জাল সনদধারী শিক্ষক আশিকুর রহমানকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার কুড়িগ্রামের রাজারহাট জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক (ভারপ্রাপ্ত) আয়েশা সিদ্দিকা তার জামিন নামঞ্জুর করে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। রাজারহাট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অনিল চন্দ্র এবং কোর্ট জিআরও ফারুক হোসেন এ তথ্য দৈনিক শিক্ষাডটকমকে নিশ্চিত করেছেন।
২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ মার্চ উপজেলার চাঁন্দামারী ফাজিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এসএম আখতার আহসান এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ ও কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নিদের্শে রাজারহাট থানায় মাদরাসার জাল সনদধারী শিক্ষক আশিকুর রহমানে বিরুদ্ধে জাল সার্টিফিকেট, প্রতারণার মাধ্যমে চাকরি ও সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেছিলেন।
জানা গেছে, ৭ বছর পূর্বে আশিকুর নিয়োগ ও এনটিআরসির সার্টিফিকেট ছাড়াই তার বাবা ওই মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম ও পরিচালনা পর্ষদের যোগসাজসে মৌলভী শিক্ষক পদে এমপিওভুক্ত হয়েছিলেন। নজরুল ইসলাম অবসরে গেলে জাল কাগজপত্রের তথ্য ফাঁস হয়। বর্তমান মাদরাসা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শিক্ষক আশিকুরের নিয়োগের কাগজপত্র ও সার্টিফিকেট চাইলে তিনি তালবাহনা করেন।
প্রতারক আশিকুর যশোর জেলার শাহাদত হোসেনের ছেলে আশিকুর রহমানের ৩১৪২৮৩৫ রোল নম্বর ব্যবহার করে একটি ভুয়া নিবন্ধন সনদ তৈরি করেন। বিষয়টি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শামছুল আলমকে জানালে তিনি মাদরাসা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এস এম আখতার আহসানের মাধ্যমে আশিকুর রহমানকে নিয়োগ সংক্রান্ত সব কাগজপত্র দাখিলের দেন।
পরে ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ৬ ফেব্রুয়ারি ওই জাল সনদ ও নিয়োগ সংক্রান্ত অন্যান্য কাগজপত্র ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছে দাখিল করেন। জেলা শিক্ষা অফিসের রেজিস্ট্রারে ওই নামে নিবন্ধন সার্টিফিকেট সংক্রান্ত কোনো তথ্য সংরক্ষিত না থাকায় তিনি এনটিআরসিএতে যাচাইয়ের জন্য পাঠান। ২৬ ফেব্রুয়ারি এনটিআরসিএ ওই সার্টিফিকেটটি জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে বলে শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দেন।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশে গত ১৯ মার্চ চান্দামারী ফাজিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এস এম আক্তার আহসান বাদী হয়ে রাজারহাট থানায় শিক্ষক আশিকুর রহমানের বিরুদ্ধে জালিয়াতি, প্রতারণা ও সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পর আশিকুর বৃহস্পতিবার রাজারহাট জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে আত্মসমার্পন করে জামিন আবেদন করলে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।