দৈনিক শিক্ষাডটকম, নওগাঁ : নওগাঁর রাণীনগরের মালশন গিরিগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের বাংলা বিষয়ের শিক্ষক মোছা. ময়না খাতুনের বিরুদ্ধে জাল শিক্ষক নিবন্ধন সনদে চাকরি করার অভিযোগ উঠেছে।
তিনি এই সনদ দিয়ে নিয়োগ পেয়ে এক যুগ থেকে সরকারি কোষাগারের বেতন-ভাতা উত্তোলন করে যাচ্ছেন। এ পর্যন্ত তিনি প্রায় ২৩ লাখ টাকা সরকারি কোষাগার থেকে উত্তোলন করেছেন বলে জানা যায়।
জানা যায়, শিক্ষক ময়না খাতুন ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে পাস করা একটি শিক্ষক নিবন্ধন সনদ দিয়ে চাকরিতে নিয়োগ নিয়েছেন। এনটিআরসিএ-এর ওয়েবসাইটে সেই সনদের রোল নাম্বার দিলে সনদধারীর কোনো তথ্য আসে না। শুধুমাত্র ওই সনদের তথ্যই আসে। এরপর জেলা শিক্ষা অফিসে যোগাযোগ করে জানা যায় ওই রোল নম্বরধারীর কোনো তথ্য জেলা শিক্ষা অফিসের রেজিস্ট্রারে পাওয়া যায়নি।
তিনি ওই বিদ্যালয়ে ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের ৫ অক্টোবর বাংলা বিষয়ের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। নিয়োগের সময় তিনি যে শিক্ষক নিবন্ধন সনদ জমা দেন তার রোল নম্বর ৫১০১০০৫১ এবং নিবন্ধন নম্বর ৭০০৬০৮১। সেই সনদের আবশ্যিক বিষয়ে প্রাপ্ত নম্বর ৪৪ এবং ঐচ্ছিক বিষয়ের প্রাপ্ত নম্বর ৪৩। এরপর তিনি ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের ১ মে বি.এডসহ এমপিওভুক্ত হন। এমপিওতে তার ইনডেক্স নং ১০৫৭৯১৪।
তখন থেকে এ পর্যন্ত তিনি চাকরি করে বেতন উত্তোলন করে যাচ্ছেন। এরমধ্যে তিনি গত ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাস থেকে উচ্চতর স্কেলে বেতন নেন।
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টসহ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন, শিক্ষক ময়না খাতুন ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দের একটি জাল শিক্ষক নিবন্ধন সনদ দিয়ে সবার অগোচরে চাকরি করে যাচ্ছেন।
কিন্তু সঠিক তদন্ত হলে তার শিক্ষক নিবন্ধন সনদটি জাল বলে প্রমাণিত হবে। কর্তৃপক্ষকে ওই শিক্ষিকার সনদটি যাচাইয়ের দাবি জানাচ্ছি।
জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষক মোছা. ময়না খাতুন পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, আপনাকে কেনো আমি তথ্য দেবো? আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ চাইলে আমি তাদের কাছে দেবো।
এ বিষয়ে তথ্য চাইলে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক উজ্জ্বল কুমার সরকার বলেন, তাকে জানানোর পর তিনি তার কাগজপত্র আমাকে দেননি। তাই আমি আপনাকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করতে পারছি না।
ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমাকে কোনো নির্দেশনা দিলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে ওই শিক্ষকের তথ্য বিদ্যালয়ের অফিস কপি থেকে দিয়ে তিনি সাহায্য করেননি তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, আমি এই উপজেলায় নতুন এসেছি তাই আমি কিছুই জানি না। আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। তার শিক্ষক নিবন্ধন সনদ যদি জাল হয় তাহলে যাচাই সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।