জাল শিক্ষক সনদ বৈধ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন জালিয়াতরা। দৈনিক আমাদের বার্তায় সহস্রাধিক জাল সনদধারী শিক্ষকের নাম পরিচয় প্রকাশ শুরুর পর তারা নতুন এই অপকর্মের পথ ধরেন। তাদের কেউ নিবন্ধন সনদ হারিয়ে গেছে দাবি করে বৈধ শিক্ষক নিবন্ধন সনদ হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন। আবার কেউ শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড জাল করে বৈধ সনদের আবদার করছেন।
বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিক্ষক নিবন্ধন সনদ হারিয়ে বা নষ্ট হয়ে গেলে ডুপ্লিকেট সনদ দেয়ার নিয়ম। সে সুযোগকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন জাল সনদধারীরা। নতুন নতুন পন্থায় শিক্ষক নিবন্ধন সনদ বৈধ করার চেষ্টাকারি একাধিক প্রার্থী চিহ্নিত হয়েছেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় তথ্যের অভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না।
সূত্র জানিয়েছে, জাল সনদ দিয়ে বৈধ ডুপ্লিকেট সনদ হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলেও সফল হতে পারেননি মো. খাদেমুল ইসলাম নামে একজন প্রার্থী। কিছুদিন আগে তিনি তৃতীয় শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার দ্বি-নকল বা ডুপ্লিকেট সনদ পেতে আবেদন করেন। তার সঙ্গে তিনি শিক্ষক নিবন্ধন সনদের একটি ফটোকপি জমা দিয়ে তা হারিয়ে গেছে বলে দাবি করেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তার তথ্য যাচাই করতে গিয়ে দেখেন, ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে অনুষ্ঠিত পরীক্ষার ফলে ওই সনদের রোল নম্বরধারী প্রার্থী আর খাদেমুলের তথ্যের কোনো মিল নেই। পরে তার ডুপ্লিকেট সনদের আবেদন বাতিল করে দেয়া হয়।
সূত্র আরও জানায়, আছমা খাতুন নামে এক প্রার্থী জাল প্রবেশপত্র তৈরি করে শিক্ষক নিবন্ধনের বৈধ সনদ হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। তিনিও ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে অনুষ্ঠিত শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশ নেয়ার একটি অ্যাডমিট কার্ড দিয়ে ডুপ্লিকেট সনদ পাওয়ার আবেদন করেন। কিন্তু কর্মকর্তারা যাচাই করতে গিয়ে তার অ্যাডমিট কার্ডটি নকল বলে জানতে পারেন। পরে দেখা যায়, ওই প্রার্থী যেসব তথ্য দিয়ে আবেদন করেছেন তার সঙ্গে সংরক্ষিত সনদের তথ্যের মিল নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনটিআরসিএর পরীক্ষা, মূল্যায়ন ও প্রত্যয়ন শাখার সহকারী পরিচালক তাজুল ইসলাম দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, সনদের তথ্য, অ্যাডমিট কার্ডের সত্যায়িত ফটোকপিসহ প্রার্থীদের দ্বি-নকল সনদের জন্য এনটিআরসিএতে আবেদন করতে হয়। প্রার্থীরা তাদের অ্যাডমিট কার্ড, সনদের তথ্য, প্রাপ্ত নম্বর ইত্যাদি উল্লেখ করে আবেদন করেন। সব তথ্য যাচাই করা হয়। কোনো একটি তথ্যে গরমিল থাকলে আবেদন বাতিল হয়। তাই এ ধরনের পন্থা বা ট্যাকটিস ব্যবহার করে সফল হওয়া যাবে না।
জাল সনদ বৈধ করার চেষ্টা করা প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, শিক্ষক নিবন্ধন সনদ জাল করা ফৌজদারী অপরাধ। কিন্তু তাদের বিষয়ে সুস্পষ্ট ও সঠিক তথ্য না থাকায় আমরা মামলা বা আইনি ব্যবস্থা নিতে পারছি না।