জন্ম যাঁর আত্মত্যাগের জন্য, মানুষের কল্যাণের জন্য, মানুষের জন্যই উৎসর্গিত যাঁর জীবন। নামের আগে-পরে যাঁর কোনো বিশেষণ যোগ করার প্রয়োজন নেই। যাঁর পরিচয় এখন বাঙালির ঠিকানা-তিনি শেখ হাসিনা, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা। আজ তাঁর ৭৭তম জন্মদিন। এই শুভ দিনে তাঁর প্রতি আমাদের নিরন্তর শ্রদ্ধা।
শেখ হাসিনা মানেই শান্তি, সম্প্রীতি, মানবপ্রেম ও প্রগতির সম্মিলন। তাঁর মানবিক মূল্যবোধ ও উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ সারাবিশ্বের মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। শেখ হাসিনা এখন মানব কল্যাণের আলোকবর্তিকা। কঠিন এক সংগ্রামের পথ বেয়ে তিনি আজ স্বীয় প্রতিভায় বিকশিত। এই ভূখণ্ডের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। তাঁর শান্তি ও মানবতার দর্শন ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বময়। তিনি এই তথ্য প্রযুক্তির যুগে সমৃদ্ধি ও প্রগতির অগ্রনায়ক এবং আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের মহান কারিগর।
পিতার মতোই বর্ণাঢ্য সংগ্রামমুখর জীবন শেখ হাসিনার। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস তিনি গৃহবন্দি থেকেছেন। সামরিক স্বৈরশাসনামলেও বেশ কয়েকবার তাঁকে কারা নির্যাতন ভোগ এবং গৃহবন্দি থাকতে হয়েছে। ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে ওয়ান-ইলেভেনের সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ১৬ জুলাই যৌথ বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়ে ৩৩১ দিন কারাগারে ছিলেন। এই গ্রেফতারে তৎকালীন সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা এবং সুশীল নামধারী কিছু ব্যক্তির ইন্ধন কাজ করেছিলো বলে প্রচার আছে। যারা নানা সময়ে শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের কঠিন সমালোচক। তাদের আরেকটা পরিচয় রয়েছেÑএরা বিভিন্ন সময়ে অগণতান্ত্রিক সরকারের সুবিধাভোগী। তাদের কারণেই বারবার শেখ হাসিনার জীবনের ওপর ঝুঁকি এসেছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়েও তিনি অসীম সাহসে তাঁর লক্ষ্য অর্জনে থেকেছেন অবিচল।
এই মুহূর্তে বাঙালির ঠিকানা আওয়ামী লীগ এবং দলটির প্রধান শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের বয়স ৭৪ বছর। এই দীর্ঘ সময়ে দলটি রাষ্ট্রক্ষমতায় প্রায় ২৪ বছর। বাকি ৫০ বছরই দলটি জনগণের অধিকার আদায়ে রাজপথে। বাঙালির ভাত-কাপড় এবং উন্নত জীবনের সন্ধানে। বঙ্গবন্ধুর সরাসরি রাজনৈতিক সংগ্রাম ৩৬ বছর, যার মধ্যে মাত্র সাড়ে ৩ বছর রাষ্ট্রক্ষমতায়। বঙ্গবন্ধু তাঁর সময়কালে পেয়েছিলেন বিশ্বস্ত বিশাল জনগোষ্ঠী। দলমতনির্বিশেষে সবাই তাঁকে সম্মান করতেন। একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে সেই রাষ্ট্রের দুখী জনগোষ্ঠীর ভাত-কাপড়ের ব্যবস্থা করতে গিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির হাতে তাঁকে সপরিবারে প্রাণ দিতে হয়েছে।
১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার সময় শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশের বাইরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান। ১৫ আগস্ট ভাগ্যের জোরে বেঁচে গেলেও ঘাতকের চোখ শেখ হাসিনার পিছু ছাড়েনি কখনো। ১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ মে স্বদেশে ফিরে শেখ হাসিনার উচ্চারণ ছিলো ‘সব হারিয়ে আমি আপনাদের মাঝে এসেছি। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তাঁর আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতির পিতার হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণে আমি জীবন উৎসর্গ করতে চাই। আমার আর হারাবার কিছুই নেই। পিতা-মাতা, ভাই রাসেলসহ সকলকে হারিয়ে আমি আপনাদের কাছে এসেছি। আমি আপনাদের মাঝেই তাঁদেরকে ফিরে পেতে চাই।’ সেদিন বঙ্গবন্ধুকন্যা আরো একটি অঙ্গীকারের কথা বলেছিলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ঘোষিত দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আমি জীবন উৎসর্গ করতে চাই। আমার আর কিছু চাওয়া-পাওয়ার নেই। সব হারিয়ে আমি এসেছি আপনাদের পাশে থেকে বাংলার মানুষের মুক্তির সংগ্রামে অংশ নেওয়ার জন্য।’ দীর্ঘ সক্রিয় রাজনৈতিক জীবনে তাঁর দেয়া প্রতিটি উচ্চারণ তিনি অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন। উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের দীর্ঘ প্রায় ৭ বছর নির্বাসন কাটিয়ে ১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ মে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে স্বদেশে ফেরেন। সেদিন ঢাকায় লাখ লাখ মানুষের সমাবেশ ঘটেছিলো সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে। সেই থেকে শেখ হাসিনার নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রাম শুরু। সামরিক জান্তা ও স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে তাঁর একটানা অকুতোভয় সংগ্রাম। অসীম ধৈর্য, সাহস ও দূরদৃষ্টির সঙ্গে মানবতার আলোকবর্তিকা হাতে সব দুঃখ-কষ্ট, আঘাত, ষড়যন্ত্র এবং শোক কাটিয়ে তিনি বিশ্বশান্তির অগ্রদূত হিসেবে নিজেকে প্রতিভাত করেছেন।
পঁচাত্তরের শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে অজস্র মৃত্যুবাণ উপেক্ষা করে অবিচলভাবে মাতৃভূমির জন্য কাজ করে যাচ্ছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। মানবতার জননী হয়ে জীবন ও কর্মের এমন কোনো দিক নেই যা তাঁর ছোঁয়ায় উদ্ভাসিত ও আলোকিত হয়নি। বাংলাদেশকে একটি উন্নত সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করার যে মহা কর্মযজ্ঞে শেখ হাসিনা নিয়োজিত রয়েছেন, জনগণের চিরকালীন প্রতিনিধি হিসেবে মানুষের হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা তাঁকে অনুপ্রাণিত করেছে। এক কথায়, বাংলাদেশ আর গ্রামবাংলার মানুষ, প্রকৃতি এবং দেশকে উন্নয়নের মহাসোপানে উন্নীত করার মহান কারিগর শেখ হাসিনা।
বঙ্গবন্ধুকন্যার হাত ধরে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ বিশ্বের নানা স্থানে অস্থিরতার পরও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্থনীতির নানা সূচকে এগিয়ে আছে। তলাবিহীন ঝুঁড়ি হিসেবে বিশ্বের কাছে পরিচিত বাংলাদেশ আজ মধ্য আয়ের দেশ। বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে আজ মডেল ইকোনমিক কান্ট্রি।
তাঁর নেতৃত্বেই স্বৈরশাসনের অবসান, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, বাঙালির ভাত ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলার দুখী মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে। দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। বঙ্গবন্ধুর খুনি ও একাত্তরের নরঘাতক মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকার্য সম্পন্ন এবং রায় কার্যকর করা হয়েছে, বিচার অব্যাহত রয়েছে। একসময় দারিদ্র্য-দুর্ভিক্ষে জর্জরিত বাংলাদেশ নিজ অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার সংগ্রাম করত, সেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বজয়ের অভিযাত্রায় এগিয়ে চলছে। বিশ্বসভায় আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ। সহজ করে বললে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ আজ দৃশ্যমান।
শেখ হাসিনার সাংগঠনিক রাজনৈতিক সময়কাল প্রায় ৪৩ বছর। রাষ্ট্রক্ষমতা সব মিলিয়ে প্রায় ২০ বছর। আর বাকিটা সময় রাজপথে মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠায়। শেখ হাসিনা পেয়েছেন বঙ্গবন্ধুর খুনি-উত্তর বাংলাদেশ। পেয়েছেন একাত্তর ও পঁচাত্তরের ঘাতক সমন্বয়ে গড়া রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ। রাজনীতির এই দীর্ঘ সময়ে তাঁকে হত্যার চেষ্টা হয়েছে ২১ বার (যা এখনো অব্যাহত)। দু’বার রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ জানুয়ারি এবং ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে ২১ আগস্ট। একাত্তরের পঁচাত্তরের ঘাতকের বুলেট এখনো শেখ হাসিনার দিকে তাক করা। নানা সময়ে দলের প্রভাবশালী অনেকেই দল ছেড়ে গেছেন। কেউবা ফিরেছেন; কিন্তু সংগ্রামের ধারা ব্যাহত হয়নি। আজও তাঁকে দলের সফলতা বা ব্যর্থতার দায় বহন করতে হচ্ছে জাতির পিতার যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে। বঙ্গবন্ধুর রাজনীতিতে প্রাধান্য ছিলো দরিদ্র জনগোষ্ঠীর। তিনি বলতেন, ‘চুরি আমার কৃষক, শ্রমিকরা করে না, চুরি করি আমরা ৫ শতাংশ শিক্ষিত মানুষ।’ তিনি বলতেন, ‘দুখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে হবে...।’ শেখ হাসিনাও পিতার মতো মানবিক হৃদয়ের। তিনিও পিতার মতো চিরাচরিত ভাষায় বলেন, ‘আমার রাজনীতি দরিদ্র, নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য, গ্রামের জনগোষ্ঠীর জন্য।’ তিনি গ্রামকে নতুনভাবে সাজিয়েছেন। শহরের সব নাগরিক সুবিধা গ্রামে পৌঁছে দিয়েছেন। ভূমিহীন ও গৃণহীনদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পসহ বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প নিয়ে হতদরিদ্র মানুষের পাশে মমতায় আবদ্ধ আছেন। শেখ হাসিনা এখন কেবল অঙ্গীকারের নাম নয়, স্বপ্ন বাস্তবায়নের নাম। যেসব স্বপ্ন দেখেছিলেন আমাদের জাতির পিতা, তা একে একে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তাঁর চৌকশ নেতৃত্বেই যুদ্ধ-সংঘাত বা বৈরিতা ছাড়াই দুই প্রতিবেশী ভারত ও মিয়ানমারের বিপক্ষে সমুদ্রবিজয় নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। বঙ্গোপসাগরে ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটারের বেশি টেরিটোরিয়াল সমুদ্র, ২০০ নটিক্যাল মাইল এলাকায় একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং চট্টগ্রাম উপকূল থেকে ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মহিসোপান এলাকার প্রাণিজ ও অপ্রাণিজ সম্পদের ওপর সার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশের। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যে স্থল সীমান্ত চুক্তি হয়েছিল, সেই সূত্র ধরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ছিটমহল সমস্যার স্থায়ী সমাধান ছিলো বাংলাদেশের বড় অর্জন। এটা ছিলো ভারত-বাংলাদেশের ছিটমহল এলাকার লাখো মানুষের ৭০ বছরের বন্দিজীবনের মুক্তি। সর্বশেষ রোহিঙ্গা ইস্যুতেও বাংলাদেশের দায়িত্বশীল ভূমিকা আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসা পেয়েছে। জাতিসংঘসহ বিশ্বের প্রায় সব দেশ ও সংস্থা এই ইস্যুতে বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করে পাশে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পেয়েছেন ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ উপাধি।
বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি এবং গণতন্ত্র বিকাশে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার অবদান অপরিসীম। তাঁর দূরদৃষ্টি, বলিষ্ঠ নেতৃত্ব এবং জনকল্যাণমুখী কার্যক্রমে দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। ক্রমাগত প্রবৃদ্ধি অর্জনসহ মাথাপিছু আয় বাড়ছে, কমছে দারিদ্র্যের হার। সামাজিক উন্নয়নের সূচকে বিশ্বের বহু দেশকে পেছনে রেখে এগিয়ে চলছে শেখ হাসিনার বাংলাদেশ। তাঁর সাহসিকতা এবং নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো বৃহৎ প্রকল্প আজ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনীতি-সমৃদ্ধিসহ জীবনচিত্র পাল্টে দিয়েছে। পদ্মা সেতুসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ফ্লাইওভার, কর্ণফুলি টানেলের মতো মেগা প্রকল্পগুলো বিশ্বে বাংলাদেশকে ভিন্নমাত্রার পরিচয় এনে দিয়েছে। বাংলাদেশকে একটি সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলায় পরিণত করতে শেখ হাসিনার ‘ভিশন ২০২১’ বাস্তবায়ন এবং ‘ভিশন ২০৪১’ কর্মসূচি নবোদ্যমে এগিয়ে চলছে। সে অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ এবং এর বাস্তবায়নে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তিনি এবং তাঁর সরকার। গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণে তাঁর এসব যুগান্তকারী কর্মসূচি বাংলার ইতিহাস হয়ে থাকবে।
আসলে কোনো প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপ্রধান যখন সৎ ও দেশপ্রেমিক হন, তখন সেদেশের উন্নয়ন অবধারিত। এর দৃষ্টান্ত একজন শেখ হাসিনা। শুধু আন্তরিকতা বা সততাই শেখ হাসিনার শক্তি নয়, তিনি বিশ্বাস করেন আমরা পারি। প্রমাণ দিয়েছেন বাঙালিরা পারে। রাষ্ট্রপরিচালনায় শেখ হাসিনার অসম সাহস ও দৃঢ়চেতা মনোবলের কারণেই একাত্তরের ঘাতক যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, বঙ্গবন্ধুর হত্যার রায় কার্যকর এবং জঙ্গিবাদের দেশ অপবাদের অবসান সম্ভব হয়েছে। পথে পথে শত সহস্র প্রতিবন্ধকতা। তথাপি তিনি এগিয়ে চলছেন চড়াই-উৎরাই ভেঙে। শত প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে। এ পথ শুধু এগিয়ে চলার। অর্নিবার দুর্বার গতিতে শেখ হাসিনা এগিয়ে নিচ্ছেন জন্মভূমি মাতৃভূমি বাংলাদেশকে পিতার আরাধ্য স্বপ্নপূরণে।
কিন্তু এই মুহূর্তে এক অস্থির রাজনীতির মুখে বাংলাদেশ। সর্বত্রই অপরাজনীতির কালো মেঘ গ্রাস করতে চাচ্ছে ২০১৪ ও ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের মতো। একাত্তর আর পঁচাত্তরের বেনিফিসিয়ারি রাজনৈতিক দলগুলোর অপরাজনীতির কালোছায়া ঘিরে রেখেছে বাংলাদেশকে। বিদেশি প্রভুদের আস্ফালন ও হুমকিতে উজ্জীবিত হয়ে নানা নাশকতার পথ খুঁজছে দলগুলো। আবারও জ্বালাও-পোড়াও, হরতাল-অবরোধ দিয়ে দেশ অচল করে দেয়ার হুঙ্কার দিচ্ছে। তাদের লক্ষ্য উন্নয়নের যে ধারা প্রবাহিত তা থামিয়ে দেয়া, একটি নির্বাচিত সরকারকে হেন পন্থায় উন্নয়নের রাজনীতি থেকে বিরত রাখা। কারণ, তাদের ভয় শেখ হাসিনার নেতৃত্ব আর মানুষের কল্যাণে তাঁর উন্নয়ন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, জনগণের কল্যাণে যাঁর জীবন উৎসর্গিত, তিনি অপশক্তির ভয়ে পিছু হটবার নন। বারবার মৃত্যু যাঁকে ছুঁয়ে গেছে, তারপরও থেমে যাননি তিনি। কারণ, তিনি যে শেখ হাসিনা।
শুভ জন্মদিন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। শুভ জন্মদিন আমাদের বড় আপা।
লেখক: সহকারী সম্পাদক, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি)