ঝরেপড়া শিক্ষার্থীদের শিক্ষার নামে কোটি টাকা লুট - দৈনিকশিক্ষা

ঝরেপড়া শিক্ষার্থীদের শিক্ষার নামে কোটি টাকা লুট

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি |

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর অধীনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদানের জন্য আউট অব স্কুল চিলড্রেন এডুকেশন প্রোগ্রাম নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। এই প্রকল্পটিতে মাদারীপুরের শিবচরে শিক্ষক নিয়োগ, ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর তালিকা ও নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের বেতন না দেওয়াসহ ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা নারী বিকাশ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে।

জানা য়ায়, শিবচর উপজেলায় ৭০টি কেন্দ্রে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয় নারী বিকাশ কেন্দ্র নামে একটি এনজিও। প্রতিটি কেন্দ্রে একজন করে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়। প্রকল্পের মেয়াদ ১১ মাস অতিবাহিত হলেও বাস্তবে কোথাও পাঠদান করেনি বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। অভিযোগ উঠেছে, কথিত রিসোর্স পার্সন, ট্রেইনার, কর্মকর্তা নিয়োগ, মাস্টার রোলে ভুয়া স্বাক্ষর দেখিয়ে প্রকল্পের সমুদয় অর্থ আত্মসাৎ করেছে এনজিওটি।

প্রতিটি কেন্দ্রে ৩ হাজার টাকা বাজেটের মধ্যে একটি ফ্যান, টিউবলাইট, পানির জার, স্টিলের ট্রাংক, সাইনবোর্ড, হাতলওয়ালা চেয়ার, টুল, শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ড, টিচিং এইডস এবং গেমস উপকরণ দেওয়ার কথা থাকলেও এসব কিছুই কেনা হয়নি। ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদানের নামে কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে। 

জেলা উপ আনুষ্ঠানিক শিক্ষ্যা ব্যুরো কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকারের এডিপি’র অর্থায়নে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ঝরেপড়া শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য নারী বিকাশ কেন্দ্র নামে একটি এনজিও অনুমতি পায়। ৪২ মাস মেয়াদি এই প্রকল্প। শুরুতেই ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। প্রকল্পের শুরুতেই কেন্দ্র নির্মাণ, আসবাবপত্র ও উপকরণ সরবরাহের জন্য বহুল প্রচারিত পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান করার কথা থাকলেও মানা হয়নি এই নিয়ম। ঘর নির্মাণ না করে ও উপকরণ সামগ্রী ক্রয় না করে অফিস রেজুলেশনের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা আত্মসাৎ করেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। শিক্ষকদের বেতন ভাতাসহ বিভিন্ন খাতের প্রায় ৫ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে দায়িত্বপ্রাপ্ত এনজিওটি। অথচ শুরু থেকে গত ১১ মাসের বেতন ভাতা পায়নি কোনো শিক্ষক।

এনিয়ে খোদ কর্মীদের মধ্যেও দেখা দিয়েছে ক্ষোভ ও অসন্তোস। আবু সালেহ মুসা, খান রুবেলসহ শিবচরের বন্দরখোলা গ্রামের কয়েকজন জানান, কাগজে-কলমে ছাত্রছাত্রী দেখালেও কোনদিন শিক্ষন কেন্দ্র খোলা দেখিনি। তাদের কর্মকাণ্ড কখনও চোখে পড়েনি। শুধু সাইন বোর্ড লাগানো হয়েছে। মূলত সরকারের টাকাগুলো লুটপাট ছাড়া কোন কাজ হচ্ছে না এই প্রকল্পে।

রথি নামে এক শিক্ষিকা জানান, আমরা এখন পর্যন্ত বেতন ভাতা পাইনি। বেতন ভাতা না পেলে আমরা কিভাবে চলবো।

মাদারীপুর জেলা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো’র সহকারী-পরিচালক শুভ বনিক জানান, একজনের পক্ষে সকল জায়গায় যাওয়া সম্ভব হয় না। ছোটখাটো কিছু অনিয়ম আছে। বিল প্রদানের ক্ষেত্রে উপজেলা মনিটরিং কমিটি সুপারিশ করার পর আমরা বিল প্রদান করেছি। এরপরও যদি কোন অনিয়ম হয়ে থাকে তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত নারী বিকাশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক নাছিমা খাতুন বলেন, শিক্ষকদের নামে ব্যাংক একাউন্টে বেতন প্রদান করা হয়। অন্যসব অভিযোগও ভিত্তিহীন দাবি করে বিস্তারিত কথা বলতে রাজি হননি।

শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিবুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের নজরে আনা হবে এবং আইগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার - dainik shiksha কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত - dainik shiksha উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে - dainik shiksha ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন - dainik shiksha সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের - dainik shiksha জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক - dainik shiksha মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.026970148086548