এক সময় ঝালকাঠির লঞ্চঘাটে যাত্রীদের ভিড় লেগেই থাকতো, এখন সেখানে শুধুই নিরবতা। যাত্রী সংকটে ঝালকাঠি-ঢাকা রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে মালিকপক্ষ। লোকসান এড়াতে সম্প্রতি এ সিদ্ধান্ত নেয় তারা। এতে বিপাকে পড়েছে ঈদযাত্রী ও পণ্য ব্যবসায়ীরা। তবে যাত্রী বাড়লে লঞ্চ আবারও চালুর আশ্বাস মালিকপক্ষের।
ঝালকাঠি-ঢাকা রুটে নিয়মিত চলাচল করতো সুন্দরবন-১২ ও ফারহান-৭ নামে দুটি লঞ্চ। যাত্রী সংকটের কারণে ২৭ মার্চ সেগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। হঠাৎ লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পরেছে লঞ্চ টার্মিনাল সংলগ্ন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং ঘাটে দিনমজুরের কাজ করা ব্যক্তিরা।
পদ্মা সেতু চালুর পর থেকেই মূলত দীর্ঘ সময়ের নৌপথ এড়িয়ে সড়কপথে চলাচল করছে ঝালকাঠির যাত্রীরা। শনিবার সন্ধ্যায় ঝালকাঠি লঞ্চঘাটে গিয়ে দেখা যায় ভিন্ন দৃশ্য। যেই সময় ঢাকাগামী যাত্রীদের ভিড়ে মুখরিত থাকে পুরো ঘাট এলাকা, ঠিক সেই সময় শুনশান ভেসে আছে জনমানব শূন্য বিশালাকৃতির দুটি টার্মিনাল।
ঈদকে সামনে রেখে ঘাট সংলগ্ন দোকানিরা জানালেন তাদের কষ্টের কথা। লঞ্চ বন্ধ হবার পর থেকে তাদের দোকানপাঠ বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া লঞ্চ বন্ধ থাকায় ঘাট শ্রমিক, ইজারাদারসহ বেকার হয়ে পড়েছে অনেকে।
এমভি সুন্দরবন-১২ লঞ্চের ঝালকাঠি ঘাট ম্যানেজার মো. হানিফ হোসেন বলেন, ঝালকাঠি থেকে ঢাকা যেতে আমাদের লাস্ট ট্রিপে ৬০ জন ডেক যাত্রী হয়েছে। আর কেবিন ভাড়া হয়েছে দুই-তিনটি। এতে বর্তমানে প্রতিবার ঢাকা আসা-যাওয়ায় লঞ্চ মালিকের মোটা অঙ্কের লোকসান গুনতে হয়। তাই এ রুটে লঞ্চ বন্ধ রাখা হয়েছে।
কবে নাগাদ লঞ্চ চালু হতে পারে, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ঈদের আগে যাত্রীর চাপ বাড়লে লঞ্চ চলবে। তবে ঈদের পর আবারও রুটটি বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সুন্দরবন নেভিগেশন কোম্পানির স্বত্বাধিকারী মো. সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর দক্ষিণাঞ্চলের নৌপথে যাত্রী হ্রাস পাওয়ায় লঞ্চের ব্যবসায় কিছুটা মন্দা যাচ্ছিল। তবে তাতে লোকসানে পড়তে হয়নি। কিন্তু দুই দফায় জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় পুরো ব্যবসা ঝুঁকিতে পড়ে। ঝালকাঠি-ঢাকা রুটে গেলো সপ্তাহে পৌনে দুই লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। এখন বাধ্য হয়ে লঞ্চ বন্ধ রেখেছি।
এদিকে পণ্য পরিবহনের জন্য হলেও এ রুটে লঞ্চ চালিয়ে যাওয়ার দাবি ঝালকাঠিবাসির।