সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে বুয়েটের ৩১ জন শিক্ষার্থীসহ গ্রেফতার ৩৪ জনের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
তাদের মধ্যে ৩২ জনের পাঁচ হাজার টাকা বন্ডের মাধ্যমে জামিন মঞ্জুর করেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ফারহান সাদিকের আদালত। অপর দুইজন শিশু হওয়ায় তাদের শিশু আদালতে জামিনের আবেদন করা হবে।
সরকারের বিরুদ্ধে ‘গোপন ষড়যন্ত্র ও জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করার আশঙ্কায়’ রোববার বিকেলে টাঙ্গুয়ার হাওর থেকে ৩৪ জনকে আটক করা হয়। সোমবার বিকেলে তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে পুলিশ বাদী হয়ে তাহিরপুর থানায় একটি মামলা করে। এই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে বিকেলে তাদের আদালতে হাজির করলে আদালতের বিচারক ৩২ জনকে কারাগারে এবং দু’জন কিশোর হওয়ায় তাদের কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সোমবার ওই শিক্ষার্থীদের সুনামগঞ্জের আদালতে তোলা হলে তাদের পক্ষে দাঁড়ান কয়েকজন আইনজীবী। এই আইনজীবীরা একসময় জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতা ছিলেন।
পুলিশের তথ্যমতে, গ্রেফতার ৩৪ জনের মধ্যে ২৪ জন্য বুয়েটের বর্তমান শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ছয়জন প্রথম বর্ষ, ছয়জন দ্বিতীয় বর্ষ, পাঁচজন তৃতীয় বর্ষ, পাঁচজন চতুর্থ বর্ষ এবং দু’জন স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে পড়ছেন। বাকি ১০ জনের মধ্যে সাতজন বুয়েটের সদ্য সাবেক শিক্ষার্থী। অন্য তিনজনের মধ্যে দু’জন এবার এসএসসি পাস করেছে, একজন বুয়েটের এক শিক্ষার্থীর বাসায় কাজ করেন।
সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. এহসান শাহ্ জানান, গ্রেফতারকৃতদের কাছে যেসব আলামত পাওয়া গেছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে শিবির বুয়েটে গোপনে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাচ্ছে। মোবাইল ও ডিভাইস যাচাই করলে সরকার বা রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রম পরিচালনা বা নাশকতার বড় বিষয় বেরিয়ে আসতে পারে।
স্থানীয় পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানান, মূলত ঢাকা থেকে পাওয়া গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই অভিযান হয়েছে। এতে নেওয়া হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তাও। বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ ও বিভিন্ন আলামত জব্দ করার পর তাদের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেফতার দেখানো হয়। ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কাগজপত্র, সংগঠনের তহবিল-সংক্রান্ত প্রচারপত্র, সংগঠনের সাথি ও সদস্যদের পাঠযোগ্য সিলেবাস, কর্মী ঘোষণা সংক্রান্ত নথিপত্র জব্দ করা হয়। পুলিশের দায়ের করা মামলার জব্দ তালিকায় তা উল্লেখ করা হয়েছে।