নতুন বছরের শুরুতেই ম্যারাথন সভা করলো ছাত্রলীগ। রোববার প্রথম দিনেই (১ জানুয়ারি) বিকাল ৩টা থেকে শুরু করে সোমবার দিবাগত রাত ১টা পর্যন্ত টানা প্রায় ১১ ঘন্টার এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ছাত্রলীগের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ সভায় তৃণমূল নেতাদের উদ্দেশ্যে একগুচ্ছ বার্তা দিয়েছেন ছাত্রলীগের নতুন সভাপতি সাদ্দাম হোসেন।
বিশেষ বর্ধিত সভা শেষে সোমবার দিবাগত রাত দুটার সময় এ নিয়ে বিস্তারিত জানান ছাত্রলীগ সভাপতি।
ছাত্র রাজনীতিকে স্মার্ট ও আধুনিক হতে হবে মন্তব্য করে সাদ্দাম হোসেন বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের প্রশ্নে বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ ও তরুণ প্রজন্মকে ঐক্যবদ্ধ করতে বছরের প্রথমদিনে বিশেষ বর্ধিত সভার আয়োজন করা হয়েছিল। দেশরত্ন শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশের ধারণা তুলে ধরার পরে শিক্ষার্থী ও তরুণ প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় হয়েছে। স্মার্ট বাংলাদেশের ধারণা রাজনৈতিকভাবে বিজয়ী করা ছাত্র আন্দোলনের প্রধানতম দিকে পরিণত হয়েছে। তরুণদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে সাংগঠনিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তৃণমূল নেতাদের।
তৃণমূলের মতামতের গুরুত্ব সম্পর্কে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তের সাংগঠনিক ইউনিটের নেতৃবৃন্দের মতামত গ্রহণ করেছি। সাংগাঠনিক কাজে অংশীদারমূলক নেতৃত্ব কেন্দ্র নিশ্চিত করতে চায়।
সাদ্দাম হোসেন বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শহর ও গ্রামের মাঝে বৈষম্য একেবারেই কমে এসেছে। প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে সাবলম্বী হচ্ছে। ছাত্রলীগের কর্মীরাও যেন স্মার্ট উদোক্তা হয়ে উঠে। একইসঙ্গে শ্রম শিল্প থেকে মেশিননির্ভর শিল্পে বাংলাদেশের ছাত্রসমাজকে তৈরি করা প্রয়োজন।
বিরোধীদলের উদ্দেশ্যে ছাত্রলীগের অবস্থান সম্পর্কে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, খুনের রাজনীতি, জঙ্গিবাদের রাজনীতি, দুর্নীতিবাজদের পূর্ণবাসন রাজনীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তাদের রাজনীতি থেকে মূলোৎপাটন করতে হবে। স্মার্ট বাংলাদেশের ধারণা নিয়ে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত করতে হবে।
এসব বিষয়ে নেতাকর্মীদের কথা শুনে সে বিষয়ে বিস্তারিত দিকনির্দেশনা ছাত্রলীগ হাইকমান্ড দিয়েছে বলে জানান ছাত্রলীগ সভাপতি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজবকে প্রতিরোধ করার বিষয়ে শেখ হাসিনার নির্দেশ প্রসঙ্গে ছাত্রলীগের পদক্ষেপ নিয়েও কথা বলেছেন ছাত্রলীগ সভাপতি।
তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রসারের ফলে ফেসবুককে ব্যবহার করে ফেকনিউজ সঙ্ঘবদ্ধ চক্র যারা গুজব-প্রোপাগান্ডা ছড়ায়। জনগণের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বিএনপি-জামায়াত গুজবের আশ্রয় নিয়ে প্রোপাগাণ্ডা ছড়াচ্ছে। এই গুজব-প্রোপাগান্ডার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। ফেকনিউজের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়ায়।
ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, সঠিক তথ্য তুলে কর্মকৌশল নেওয়া হয়েছে এবং অনলাইন কার্যক্রমকে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
নেতৃত্ব নির্বাচন সম্মেলনের মাধ্যমে করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নেতৃত্ব নির্বাচনে বিভিন্ন অভিযোগ না ওঠার একমাত্র সমাধান হচ্ছে সম্মেলন। একটা সাংগঠনিক ইউনিটে সম্মেলন হলে মাঠপর্যায়ের বাস্তবতা বুঝতে পারি।
বর্ধিত সভায় অংশ নেওয়া তৃণমূলের একাধিক নেতৃবৃন্দ বলেন, কেন্দ্রের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী মাঠ পর্যায়ে ছাত্রলীগকে গতিশীল সংগঠনে পরিণত করা হবে। অনলাইন ও মাঠের রাজনীতিতে যুগপৎভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবে ছাত্রলীগের এই বর্ধিত সভার সিদ্ধান্তগুলো।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের এই বর্ধিত সভায় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতসহ ছাত্রলীগের জেলা ও মহানগর ইউনিটের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।