টিএমএসএসের বিরুদ্ধে নদী দখলের মামলা - দৈনিকশিক্ষা

টিএমএসএসের বিরুদ্ধে নদী দখলের মামলা

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

প্রকাশ্যে হত্যা করা হচ্ছে এক সময়ের খরস্রোতা করতোয়া নদী। যে নদী পথে এক সময় সুদূর খুলনা থেকে বণিকরা বাণিজ্যের জন্য বগুড়ায় আসতেন। সেই নদী আজ হাতে গোনা কয়েকজন মানুষের কাছে বিলীনের পথে। নদীটির সব চেয়ে বেশি অংশ ভরাট করে দখল করে আছে টিএমএসএস নামের একটি এনজিও। নদী প্রশাসন, জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় দিনদিন অনেকটা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এনজিওটি।

জানা গেছে, করতোয়া নদীর একটি বর্ধিত নালা মূল নদী থেকে বেরিয়ে যায়। সেই অংশ ১৯৯২ সালের ২রা জুন তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তারাপদ পাল প্রেরিত প্রতিবেদনের আলোকে উল্লেখ করেছেন মহিষবাথান মৌজার খাস খতিয়ান ১৫৫৩ দাগে মোট ১৬ দশমিক ৯৪ একর বদ্ধ জলাশয় বাংলা ১৩৯৭ হতে ১৪০৫ সন পর্যন্ত এবং

দ্বিতীয় পর্যায়ে মহিষবাথান মৌজার ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত ১৫৫৩ দাগে ৪০ দশমিক ৯১ একর উন্মুক্ত জলাশয় হিসেবে ১৩৯৮ সনের জন্য ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘের পক্ষে শামছুল হকের নামে ইজারা প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে তৎকালীন জেলা প্রশাসক নুরুজ্জামান ভূঁইয়া ১৯৯৫ সালের ২রা ফেব্রুয়ারি ১৫৫৩ দাগের খাস জমি ১৬ দশমিক ৯৪ একর আদর্শ গ্রাম প্রকল্পের আওতায় গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসনের নিমিত্তে ৯৯ বছরের লিজ প্রদান করেছেন। পরবর্তীতে টিএমএসএসের প্রধান নির্বাহী হোসনে আরা বেগম মহিষবাথান মৌজার ১৬ দশমিক ৯৪ একর ওই খাস সম্পত্তিতে স্বত্ব ঘোষণা, স্থায়ী বন্দোবস্ত দেয়া, অন্য কাউকে লিজ না দেয়ার প্রার্থনা করে বগুড়া যুগ্ম জেলা জজ ১ম আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় ২০০৯ সালের ৭ই জুন তার পক্ষে আদালত রায় দেন।

তারপর থেকেই তিনি বদ্ধ জলাশয়ের ওই অংশে বালি এবং ময়লা-আবর্জনা দিয়ে ভরাট করে চলেছেন। লিজ নেয়া ওই খাস জলাশয় প্রকাশ্যে পূরণ করে কিছু জায়গায় স্থায়ী বিল্ডিং নির্মাণও করেছেন তিনি। এদিকে নতুন করে ‘মম ইন’ বিনোদন পার্কের আশাপাশে নদী ভরাটের অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে। গত ১৮ই মার্চ ‘মম ইন’ ইকোপার্কের বালা কৈগাড়ী কাঁঠালতলা ঈদগাহ মাঠসংলগ্ন এলাকায় মাটি ও বর্জ্য ফেলে নদীর মূল প্রবাহ বন্ধ ও ভরাটের দায়ে টিএমএসএসকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেন জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। যদিও এনজিওটির পক্ষ থেকে একটি স্থানীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে বলা হয়েছিল ওই ঘটনা ছিল প্রশাসনের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি। এবার গত ১লা মে দিবাগত রাতে ঠিক একই জায়গায় গোপনে নদীতে মাটি ভরাট করার সময় ‘মম ইন’ ইকোপার্কের বালা কৈগাড়ী কাঁঠালতলা ঈদগাহ মাঠসংলগ্ন এলাকা থেকে ৫টি ট্রাক জব্দ করেন জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। ওই সময় টিএমএসএসের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করার নির্দেশ দেন নির্বাহী হাকিম ও জেলা প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার মো. নুরুল ইসলাম।

পরে গত বৃহস্পতিবার রাতে পাউবোর উপ-সহকারী প্রকৌশলী হাসানুজ্জামান বাদী হয়ে টিএমএসএসের বিরুদ্ধে বগুড়া সদর থানায় একটি মামলা করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, পাউবো, সদর উপজেলা ভূমি, বগুড়া পৌরসভা, টিএমএসএস ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সার্ভেয়ারদের নিয়ে যৌথভাবে করতোয়া নদী জরিপের কাজ চলছে। এই জরিপ কাজ চলমান থাকা অবস্থায় নদী ভরাট, খনন বা স্থাপনা নির্মাণ স্থগিত রাখার বিষয়ে গত ২০শে এপ্রিলে একটি নোটিশ জারি করে পাউবো কর্তৃপক্ষ। টিএমএসএস কর্তৃপক্ষ সেই নোটিশ অমান্য করে নদী ভরাট করছিল, যা বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১২ অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ। এ ছাড়া হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী নদী জরিপ চলমান থাকা অবস্থায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে করতোয়া নদী ভরাটকরণে মামলা করা হলো।

মামলার বিষয়ে টিএমএসএসের প্রধান নির্বাহী হোসনে আরা বেগম বলেন, আমরা আমাদের ভূমি উন্নয়নের কাজ করছিলাম। নদী দখলের কোনো প্রমাণ দিতে পারবে না তারা (ভ্রাম্যমাণ আদালত)। বরং আমরা নদীর সীমানা থেকে ৭০ ফুট ভিতরে নিজস্ব ভূমি উন্নয়নের কাজ করছিলাম। সেটিকে তারা নদী ভরাট হিসেবে উল্লেখ করে মামলা দিয়েছে।

করতোয়া নদীর একটি অংশ লিজ নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ওই জায়গাটি নদী নয়। অকৃষি জমি।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক বলেন, ঘটনার দিন রাতে জেলা প্রশাসক মহোদয় আমাকে একটি মেসেজ দেন। সেখানে উল্লখ করেন যে, করতোয়া নদীতে ট্রাক দিয়ে মাটি ফেলে ভরাট করা হচ্ছে। আমরা রাত দেড়টার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ ঘটনাস্থলে যাই। আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে ট্রাকের ড্রাইভার এবং মাটি কাটার শ্রমিকরা পালিয়ে যায়। পরে সেখানে মাটি ভরাট অবস্থায় ৫টি ট্রাক জব্দ করা হয়েছে। ওই ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার ৪ঠা মে বগুড়া সদর থানায় টিএমএসএসের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে।

‘২৬ লাখ টাকা’র প্রধান শিক্ষক নাজমার শাস্তি দাবি আনন্দময়ী স্কুল ছাত্রীদের - dainik shiksha ‘২৬ লাখ টাকা’র প্রধান শিক্ষক নাজমার শাস্তি দাবি আনন্দময়ী স্কুল ছাত্রীদের জানুয়ারিতেই শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেয়া হবে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha জানুয়ারিতেই শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেয়া হবে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা ইএফটিতে বেতন: ব্যাংক হিসাব নিয়ে এমপিও শিক্ষকদের অসন্তোষ - dainik shiksha ইএফটিতে বেতন: ব্যাংক হিসাব নিয়ে এমপিও শিক্ষকদের অসন্তোষ পবিপ্রবিতে গাঁজাসহ ৫ মাদকসেবী আটক - dainik shiksha পবিপ্রবিতে গাঁজাসহ ৫ মাদকসেবী আটক ভর্তিতে লটারি বাতিলের দাবিতে সড়ক আটকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ - dainik shiksha ভর্তিতে লটারি বাতিলের দাবিতে সড়ক আটকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ প্রাথমিকের ১০ম গ্রেডের দাবি সর্বজনীন - dainik shiksha প্রাথমিকের ১০ম গ্রেডের দাবি সর্বজনীন কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ - dainik shiksha ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0031030178070068