মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) মানুষের ঢল নেমেছে। যত্রতত্র বসেছে নানা দোকান। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় পূর্বের দোকানগুলো ছাড়াই শুধুমাত্র ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) মঙ্গলবার রাস্তায় বসে ৩৮৬টি দোকান। পাশে বইমেলার প্রবেশ গেট, প্রবেশমুখেই বসেছে দোকান। তবে দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের চুপচাপ বসে থাকা ছাড়া কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।
এ ছাড়া কলাভবনে প্রক্টর অফিসের সামনে, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে, ডাকসু ভবন, কার্জন হল, জগন্নাথ হলের সামনে, সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের সামনে সারি সারি দোকান বসেছে। রাস্তা দখল করে এসব দোকানের ফলে বিকেল থেকে ভয়াবহ যানজট তৈরি হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়।
সরেজমিনে টিএসসিতে দেখা যায়, পুতুলের দোকান, আইসক্রিম, ভাজাপোড়া, কাপড়ের দোকান, চুড়ি, গহনা, হাড়ি পাতিল, বিভিন্ন ফলমূল, ক্যালিওগ্রাফিসহ নানা রকমের পণ্যের ভ্রাম্যমাণ দোকান বসেছে এলাকাজুড়ে। কেউ সেলফি তুলছেন, কেউ আড্ডা দিচ্ছেন সেখানে। রাস্তা দখল করে রাখা হয় মোটরসাইকেল, গাড়ি পার্ক করে রেখেছেন অনেকে।
ভয়াবহ যানজট, বিকট শব্দ দূষণে, যত্রতত্র দোকান, আবর্জনা—ইত্যাদি বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। টিএসসির পাশেই রোকেয়া হল ও শামসুন্নাহার হল নামে নারী শিক্ষার্থীদের দুটি আবাসিক হল রয়েছে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে রোকেয়া হলের শিক্ষার্থী ফাতেহা জাহান অ্যানি বলেন, ‘এত আওয়াজ, এত দোকান; চলার মত অবস্থা নেই। উপচেপড়া গাড়ির কারণে রাস্তা পার হতে পারি না। এরপরে বহিরাগত মানুষে রাস্তায় হাঁটা মুশকিল। এর থেকে আদৌ নিস্তার মিলবে!’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘যেদিকে দেখি খালি দোকান আর মানুষ। খায় আর হাঁটে। হাজার হাজার মানুষ, হাজার হাজার দোকান। গুলিস্তানের চেহারাকেও ছাড়ায়ে যাচ্ছিল। আমি কার্জন থেকে আমার বাসভবন পর্যন্ত হেঁটে আসছি, আবার ভবন থেকে টিএসসি পর্যন্ত হেঁটে গিয়েছি। খুবই ভয়াবহ পরিস্থিতি। একদম, একদম না! এভাবে হতে পারে না।’
উপাচার্য বলেন, ‘আমরা শিগগিরই ব্যবস্থা নিতেছি, এভাবে বরদাশত করব না। এতে সামগ্রিকভাবে আমাদের বড় আকারে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটে যাবে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছি দুয়েকদিনের মধ্যে অ্যাকশন শুরু করে দেব আমরা।’
অধ্যাপক একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘প্রতিদিন দোকানগুলো তুলে দেওয়া হচ্ছে, তারপরও তারা বসছে। সামান্যতম অনুরোধও তারা রাখছে না। একশ্রেণির মানুষ ব্যক্তিস্বার্থে এ কাজগুলো করে যাচ্ছে। আমরা পরামর্শ চাই, এ বিষয়ে করণীয় কী হতে পারে।’