ছয় মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো চিনির দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। সংস্থাটি প্রতি মাসে একবার করে দেশের এক কোটি পরিবারের মধ্যে এক কেজি চিনি ভর্তুকি মূল্যে বিক্রি করে থাকে। এত দিন এ চিনির দাম ছিল প্রতি কেজি ৬০ টাকা। তবে নতুন দামে টিসিবির পরিবার কার্ডধারীদের চিনি কিনতে হবে ৭০ টাকা কেজিতে।
টিসিবি এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়েছে, আগামীকাল (রোববার) সংস্থাটির মাসিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে দেশব্যাপী পরিবার কার্ডধারীদের পণ্য দেওয়া শুরু হবে। এ দফায় টিসিবি প্রতি কার্ডধারীকে এক কেজি চিনি, দুই কেজি মসুর ডাল ও দুই লিটার সয়াবিন তেল দেবে। চিনির দাম কেজিতে ১০ টাকা বাড়ানো হলেও মসুর ডাল আগের মতো ৭০ টাকা কেজি ও সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১১০ টাকা দামেই বিক্রি করা হবে।
বাজারে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির মধ্যে টিসিবি গত ডিসেম্বরে মসুর ডাল ও চিনির দাম কেজিতে ৫ টাকা বাড়িয়েছিল। তখন প্রতি কেজি ডালের দাম ৬৫ থেকে বাড়িয়ে করা হয় ৭০ টাকা, আর ৫৫ টাকার চিনির দাম হয় ৬০ টাকা। এখন সেটা ১০ টাকা বাড়ানো হলো। খোলাবাজারে অবশ্য চিনির দামে অস্থিরতা বিরাজ করছে।
টিসিবির বাজার দরের তালিকা বলছে, বাজারে প্রতি কেজি খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩০–১৪০ টাকায়। তবে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি চিনি ১৩৫–১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে সরকারিভাবে বাজারে খোলা চিনির দাম নির্ধারণ করে দেওয়া আছে খুচরায় প্রতি কেজি ১২০ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনি ১২৫ টাকা। তবে এ দামে চিনি পাওয়া যায় না বলে ক্রেতাদের অভিযোগ।
গত ডিসেম্বরে টিসিবি যখন মসুর ডাল ও চিনির দাম বাড়ায়, তখন সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল যে আন্তর্জাতিক বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়তি থাকায় সরকার দাম ‘সমন্বয়’ করছে। সরকারের ওপর ভর্তুকির চাপ একটু কমাতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এবারও সেই একই কারণে পণ্যের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে টিসিবি।
এ বিষয়ে টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ূন কবির বলেন, বাজারে চিনির দাম বেশ বাড়তি। সে জন্য টিসিবিকেও চিনির দামে সমন্বয় করতে হয়েছে। অন্যান্য পণ্যের দাম আগের মতোই থাকবে।
এদিকে, টিসিবি এ দফায় তিনটি পণ্য (চিনি, ডাল ও সয়াবিন) ভর্তুকি মূল্যে বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এর বাইরে সাধারণত পেঁয়াজও বিক্রি করে থাকে সংস্থাটি। এখন চিনি ও সয়াবিনের মতো বাজারে পেঁয়াজের দামও বাড়ছে। তবে প্রস্তুতি না থাকায় গত কয়েক মাসের মতো এ মাসেও টিসিবি পরিবার কার্ডধারীদের কাছে পেঁয়াজ বিক্রি করবে না।
টিসিবির বাজারদরের হিসাবে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০–৭০ টাকায়। আর আমদানি করা পেঁয়াজের দাম পড়ছে ৬৫–৭০ টাকা। এসব পেঁয়াজ আগেই আমদানি করা হয়েছিল। টিসিবির হিসাবে, এক মাসের ব্যবধানে বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৮৬ শতাংশ ও আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৫৯ শতাংশ।
এদিকে আগামীকাল সকালে টিসিবির চলতি মাসের পণ্য বিক্রি কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। রাজধানীর মেরুল বাড্ডা এলাকার সিরাজ মিয়া মডেল স্কুলসংলগ্ন মাঠে এ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর সারা দেশের ডিলারের দোকান থেকে পণ্য নিতে পারবেন পরিবার কার্ডধারীরা।