দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক: ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার কাতিহার আরবিবি ইট ভাটায় স্বর্ণের খোঁজে মাটি খুঁড়ছেন অন্তত সহস্রাধিক মানুষ। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) গভীর রাত থেকে বিভিন্ন বয়সের হাজার হাজার মানুষ কেউ কোদাল, কেউ বাসিলা, কেউ খুন্তি নিয়ে স্বর্ণের খোঁজে মাটি খনন করতে শুরু করে। ওই ইট ভাটায় ভাগ্য বদলের আশায় দিন-রাত চলছে যেন মাটি খনন প্রতিযোগিতা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পাহাড় সম কাতিহার আরবিবি ইট ভাটায় মাটির স্তূপগুলো স্বর্ণের মতোই জ্বলজ্বল করে জ্বলছে। রাতের অন্ধকারে মানুষের হাতে থাকা টর্চ, মোবাইলফোনের আলোতে ইটভাটার মাটির স্তূপ স্বর্ণালী রূপ ধারণ করেছে। দূর থেকে যে কেউ দেখলেই গভীর অন্ধকারে টর্চের আলোয় আলোকিত স্বর্ণালী এক পাহাড়ের দৃশ্য দেখে চমকে উঠবে। মনে হবে বাংলাদেশের উত্তরের এ প্রত্যন্ত অঞ্চলে অলৌকিকভাবে কোনো সোনার পাহাড় দাঁড়িয়ে আছে। হাজারো মানুষের বিশ্বাস আর আস্থা এখন কাতিহারের ইট ভাটার মাটির স্তূপ। কেউ ভাগ্য বদলের আশায় আবার কেউ শখের বসে গভীর রাতে খুঁড়ে চলছেন এ অনাকাঙ্ক্ষিত স্বর্ণ।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার কাতিহার আরবিবি ইট ভাটায় গত বেশ কিছু দিন ধরে চলছে মাটি স্বর্ণের খোঁজে খনন প্রতিযোগিতা। গ্রামের বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ বাড়ি হতে কোদাল-বসিলা নিয়ে ওই ভাটায় আসছেন দলেদলে। দেখা গেছে এদের মধ্যে শ্রমিক শ্রেণির মানুষই বেশি। সোনা পেলে নিজেদের ভাগ্য বদল হবে এই আশায় কেউ বসে নেই। আশপাশের বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকেও ছোটখাটো যানবাহন নিয়ে স্বর্ণের সন্ধানে ভাগ্য বদলের জন্য ছুটে এসেছেন নানান পেশার মানুষ। আবার নিরাশ হয়েও ফিরছেন অনেকেই। ইট ভাটার আশপাশ জুড়ে গড়ে উঠেছে অস্থায়ী খাবার দোকান। দোকানদারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মাটি খুঁড়ে বেশ কিছুদিন থেকেই অনেকে সোনা পাচ্ছেন।
স্থানীয় লোকজনের দাবি, ওই ভাটার মাটির স্তূপে বেশ কিছুদিন থেকেই সোনা পাচ্ছেন লোকজন। ইতোমধ্যে অনেকের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেছে। সম্প্রতি সোনা বিক্রি করে অনেকেই মোটরসাইকেল কিনেছেন এমন কথাও অনেকের মুখে শোনা গেছে। কিন্তু কে কে সোনা পেয়েছেন এ কথা স্বীকার করছেন না কেউ। তাদের দাবি, অনেকেই সোনা পেয়েছেন তবে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়তে পারেন এই ভয়ে মুখ খুলছেন না কেউ।
আরবিবি ইটভাটার ব্যবস্থাপক লিটন আলী বলেন, ‘কাতিহার সামরাই মন্দিরের পাশ থেকে মাটি খনন করে ইটভাটায় স্তূপ করা হয়েছে। গুজব উঠেছে ওই মাটির স্তূপ থেকে নাকি স্বর্ণের জিনিস পাওয়া গেছে। এরপর থেকেই সাধারণ মানুষ দিন রাত ওই মাটির স্তূপ খনন করে স্বর্ণের সন্ধান করছে।’
রাণীশংকৈল উপজেলার বাচোর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য উমের আলী বলেন, এখন পর্যন্ত স্বর্ণ কেউ পেয়েছে এরকম আমি দেখিনি। তবে শুনেছি মানুষ নাকি স্বর্ণ পেয়েছে। এজন্য প্রশাসনকে বলা হয়েছিল। প্রশাসন আসছিল কিন্তু হাজার হাজার লোক জায়গাটা ঘিরে রাখায় তারা কিছুই চেক করতে পারেনি।
রানীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রকিবুল হাসান বলেন, বিষয়টি জেনেছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।