শহীদ বুদ্ধিজীবী ও চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ ফজলে রাব্বী জন্মদিন আজ। তিনি ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে পাবনা জেলার হেমায়েতপুর উপজেলার ছাতিয়ানি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আফসারউদ্দিন আহমেদ এবং মাতা সুফিয়া খাতুন। ফজলে রাব্বী পাবনা জেলাস্কুল থেকে ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে আইএসসি পাস করেন।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ থেকে তিনি ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে এমবিবিএস পাস করেন এবং মেধাতালিকার শীর্ষস্থান অধিকারের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বর্ণপদক লাভ করেন। তিনি স্কটল্যান্ডের এডিনবরা রয়েল কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স অ্যান্ড সার্জনস থেকে ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে কার্ডিওলজিতে এবং লন্ডন থেকে ১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দে ইন্টারনাল মেডিসিনে এমআরসিপি ডিগ্রি লাভ করেন।
ডা. ফজলে রাব্বী ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অ্যাসিস্ট্যান্ট সার্জন পদে যোগ দেন। সেখানে তিনি ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে মেডিসিনের রেজিস্ট্রার পদে, ১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দে সহযোগী অধ্যাপক এবং ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে কার্ডিওলজি ও মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক পদে উন্নীত হন। এ ছাড়া তিনি হ্যামারস্মিথ হাসপাতালসহ ইংল্যান্ডের বিভিন্ন হাসপাতালেও কর্মরত ছিলেন। অধ্যাপনা এবং চিকিৎসার পাশাপাশি তিনি চিকিৎসা সংক্রান্ত গবেষণার কাজেও নিয়োজিত ছিলেন। ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নাল ও ল্যান্সেটে তার বহু গবেষণামূলক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি আহত মুক্তিযোদ্ধা, নির্যাতিত নারীদের চিকিৎসাসেবা এবং আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। তিনি ভারতে গমনেচ্ছু শরণার্থীদের সীমান্ত অতিক্রমে বিভিন্নভাবে সহায়তা করেন। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের চূড়ান্ত পর্যায়ে ১৫ ডিসেম্বর আল-বদর বাহিনীর সহযোগে কয়েকজন পাকিস্তানি সৈন্য তাকে ঢাকার সিদ্ধেশ্বরীর বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায়। পরে ১৮ ডিসেম্বর তার মৃতদেহ রায়েরবাজার বধ্যভূমি থেকে উদ্ধার করা হয়।
১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বাংলাদেশ সরকারের ডাকবিভাগ ফজলে রাব্বীর নামে স্মারক ডাকটিকিট এবং সংক্ষিপ্ত জীবনী প্রকাশ করে। তার নামানুসারে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের একটি ছাত্রাবাসের নামকরণ হয় ডাক্তার ফজলে রাব্বী হল।