ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মিসইউজ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান সাবেক বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম। তিনি বলেছেন, অনেকেই ভাবছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন হুবহু থাকবে। আবার কেউ বলছেন, বাতিল করতে হবে। কেউ বলছেন, এটা সংশোধন করতে হবে। তবে আমি মনে করি, এই আইনের প্রয়োজন আছে। কিন্তু এ আইনের মিসইউজ (অপপ্রয়োগ) হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, সাংবাদিকদের জন্য ইতোপূর্বে অনেক আইন হয়েছে। ব্রিটিশ আমলেও আইন ছিল, পাকিস্তান আমলেও ছিল। তাই বলে সাংবাদিকদের বস্তুনিষ্ঠ লেখনি থেমে ছিলো না।
বৃহস্পতিবার সকালে সাতক্ষীরায় সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতার মান সংরক্ষণে নীতি, নৈতিকতা এবং আচরণবিধি প্রতিপালন সম্পর্কিত এক সেমিনার ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সাবেক বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম আরো বলেন, এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সবচেয়ে বড় সমালোচনার দিকটি হচ্ছে এর অধিকাংশ ধারাই জামিন অযোগ্য। তবে জামিন অযোগ্য মামলায় জামিন দেয়া যাবে না এটা সব ক্ষেত্রে ঠিক নয়। এটা কোর্টের অথরিটি (কর্তৃত্ব)। বিচারক সাহেব জামিন দিতেও পারেন, না-ও দিতে পারেন। আমি আশা করি, যারা এই আইনটি প্রয়োগ করবেন, তারা যেন মানুষ হয়রানির শিকার হয়, এমন আদেশ না দেন।
তিনি আরো বলেন, সারা দেশের সাংবাদিকদের তালিকা করা একটু সময়সাপেক্ষ হলেও এ প্রক্রিয়ায় প্রকৃত সাংবাদিকেরা বেরিয়ে আসবেন। ডেটাবেজ তৈরির জন্য ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদকদের চিঠি দেয়া হয়েছে। ২২টি জেলার সাংবাদিকদের তালিকা পাওয়া গেছে।
প্রেস কাউন্সিল চেয়ারম্যান বলেন, যারা সাংবাদিকতা করবেন, তাদের প্রথম পেশা সাংবাদিকতাই হতে হবে। দ্বিতীয় পেশা অন্য কিছু হতে পারে। যিনি সাংবাদিকতা করবেন, তাকে মিনিমাম গ্র্যাজুয়েট হতে হবে বা সাংবাদিকতায় পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
অনুষ্ঠানে প্রেস কাউন্সিল আইন ও তথ্য অধিকার আইন বিষয়ে আলোচনা শেষে সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতা, নীতিমালা, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, অপেশাদারি ও অপসাংবাদিকতা, সাংবাদিকদের বেতন-ভাতা, নিরাপত্তাসহ সাংবাদিকদের সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন সাংবাদিকরা।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রতিপাদ্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের কর্মকর্তা ড. উৎপল কুমার সরকার। সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শেখ মঈনুল ইসলাম মঈন, জেলা তথ্য অফিসার মো. জাহারুল ইসলাম, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদ, আবুল কালাম আজাদ, রামকৃষ্ণ চক্রবর্তীসহ গণমাধ্যমকর্মীরা।