সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক কলেজ অধ্যক্ষের একটি ভিডিয়ো ক্লিপ ভাইরাল হয়। ভারপ্রাপ্ত ওই অধ্যক্ষের নাম শহীদুল ইসলাম। আর তার প্রতিষ্ঠানের নাম সরকারি পাতারহাট আরসি কলেজ। বরিশালের এই কলেজটির ওই অধ্যক্ষকে ভিডিয়োতে বলতে শোনা যায়- ‘ইউএনও, এডিসি, ডিসিকে সম্মানী দিতেই অতিরিক্ত ফি।’
দৈনিক আমাদের বার্তায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা গেছে, ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের অ্যাডমিট কার্ডের জন্য ৫০০ টাকা অতিরিক্ত ফি আদায় নিয়েই ওই অধ্যক্ষের এমন মন্তব্য।
৩ মিনিট ৩ সেকেন্ডের ভিডিয়োটিতে ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী জানতে চান, অতিরিক্ত ফি আদায় কেনো করছেন? ৫০০ টাকা দেয়ার সামর্থ যাদের নেই তারা কী করবেন? জবাবে অধ্যক্ষ বলেন, ‘যারা গবিব তারা টাকা দিয়া গেছে, রিকশাওয়ালার পোলা টাকা দিয়া গেছে, যারা ধনী- সামর্থ্যবান তারা যুদ্ধ করে কেমনে প্রিন্সিপালকে হেনস্তা করা যায়।’
ওই ছাত্রীকে অধ্যক্ষ আরো বলেন, তুমি গরিব হলে কেমনে? তুমি তো অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করো, আমি স্টুডেন্ট অবস্থায় তো চিন্তাও করি নাই।’
অধ্যক্ষ বলেন, ‘আমার ওপর দায় চাপালে হবে না, আমি তো বেতনের টাকায় হাত দেবো না, আমার তো সংসার আছে। ইউএনও, জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের সম্মানী পাঠাতে হবে। দুজন ট্যাগ অফিসার আছেন এদের সম্মানী পাঠাতে হবে।’
আমার প্রশ্ন, এই ট্যাগ অফিসার কারা? কী এদের কাজ? বোঝা যাচ্ছে, মোটামুটি গিভ অ্যান্ড টেকের মধ্যে দিয়ে সবকিছু চলছে। অধ্যক্ষ অবশ্য নিজেই বলেছেন, ‘এটা সমঝোতার পথ। তোমরা সমঝোতার পথ বন্ধ করে দিলে তোমারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
তাহলে মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকেও সম্মানী (?) আদায় করেন! তারা তো দেশের মেধাবী সন্তান। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে ক্যাডার সার্ভিসের অন্তর্ভুক্ত হন। অনিয়ম, অবৈধ লেনদেন ঠেকানো তাদেরই দায়িত্ব। তারাই যদি বখরা আদায়ে ব্যস্ত থাকেন, তাহলে সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়?