ডোম ইনোর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে পথে বসার অবস্থা - দৈনিকশিক্ষা

সংবাদ সম্মেলনে জমি মালিকরাডোম ইনোর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে পথে বসার অবস্থা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

রিয়েল এস্টেট কোম্পানি ডোম ইনোর বিরুদ্ধে নির্ধারিত সময়ে ভবন হস্তান্তর না করা, ভূমি মালিকদের প্রাপ্য অর্থ না দেয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ডোম-ইনোর প্রতারণার কারণে তাদের পথে বসতে হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা। 

শনিবার (৯ মার্চ) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তোলেন ভুক্তভোগীরা। ভুক্তভোগী জমির মালিকদের ব্যানারে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। 

লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী আদনান সোবহান বলেন, আমরা উত্তরাধিকারসূত্রে অথবা তিল তিল করে কষ্টের উপার্জনে রাজধানীর বুকে একখণ্ড জমির মালিকানা লাভ করেছি। অথচ এই জমি নিয়েই আমাদের প্রত্যেকে আজ ভয়াবহ সংকটে বিপর্যস্ত। নিজের জমির ওপর ভবন তৈরির লক্ষ্যে ‘ডোম ইনো’- নামের রিয়েল এস্টেট কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে আমাদের প্রায় পথে বসার মতো অবস্থা হয়েছে। রাজধানী ঢাকায় একটি আবাসিক বহুতল ভবন নির্মাণে সাধারণভাবে তিন বছরের মতো সময় লাগলেও কোম্পানিটির চরম অব্যবস্থাপনা, উদাসীনতা ও স্বেচ্ছাচারিতার কারণে ১২-১৬ বছরেও তা সম্পন্ন হয়নি। এমনকি চুক্তিপত্র অনুযায়ী সাইনিং মানি প্রদানের শর্ত থাকলেও সে অর্থের বড় অংশ অনেক জমির মালিক এখনও বুঝে পাননি। ভুক্তভোগী আদনান সোবহান বলেন, জমির মালিকদের পাশাপাশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন ফ্ল্যাট মালিকরাও। অর্থ পরিশোধ করেও তারা নিজেদের প্রাপ্য ফ্ল্যাট বুঝে পাচ্ছেন না।

কোম্পানিটি দিনের পর দিন, বছরের পর বছর নানা ধরনের প্রতিশ্রুতি আর আশ্বাস দিয়ে চলেছে। চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে ভবন হস্তান্তর করতে না পারলে প্রতি মাসে ক্ষতিপূরণ দেয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও এ পর্যন্ত কোনো জমির মালিককেই অর্থ পরিশোধ করেননি ডোম ইনো কর্তৃপক্ষ। অনন্যোপায় হয়ে এরই মধ্যে বেশকিছু জমির মালিকরা কোম্পানিটির বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করেছেন। জানা মতে, ডোম ইনোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুস সালামের বিরুদ্ধে ১৩৬টি মামলা করা হয়েছে। যদিও মামলার গতি হতাশজনক। রিয়েল এস্টেট কোম্পানিগুলোর সংগঠন রিহ্যাবের কাছেও মৌখিক ও লিখিতভাবে ডোম ইনোর বিরুদ্ধে অনেকগুলো অভিযোগ জমা দেয়া হয়েছে। 

রিহাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে- কোনো রিয়েল এস্টেট কোম্পানির বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা হিসেবে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির সদস্যপদ বাতিল করতে পারে সংগঠনটি। তবে এখন পর্যন্ত সে ব্যবস্থাও নেয়নি রিহ্যাব। বরং বিস্ময়করভাবে লক্ষ্য করা গেছে, গত বছর রিহ্যাব মেলার গোল্ড স্পন্সর ছিল ডোম ইনো। এ ছাড়া রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সিল ও স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে জমির ভুয়া নকশা তৈরির মতো ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ আছে ডোম ইনোর বিরুদ্ধে। রাজধানীর বনানীতে এই প্রক্রিয়ায় নির্মিত একটি ভবনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন ডোম ইনোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুস সালামের বিরুদ্ধে মামলা করেছে, যা বর্তমানে চলমান। ফ্ল্যাটের ক্রেতাদের কাছ থেকে নানা অজুহাতে হুমকি দিয়ে নিয়মিত টাকা আদায় করছে ডোম ইনো। টাকা প্রদানে অসম্মতি জানালে ক্রেতার নামে বরাদ্দকৃত ফ্ল্যাট বাতিলের নোটিশ দেয়া হচ্ছে। 

প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে তিনি বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্স অবস্থান, অসহায় মানুষদের প্রতি তার অকুণ্ঠ মমত্ববোধ আমাদের আশান্বিত করে। তার আন্তরিক অভিভাবকত্বে, সহযোগিতায় আমরা হাজারো মানুষ এই ভয়াবহ দুর্বিপাকের কবল থেকে চিরতরে মুক্তি পাবো, এ আমাদের প্রত্যাশা। সংবাদ সম্মেলনে সংকট সমাধানে বিভিন্ন দাবি উপস্থাপন করেন প্রতারিত জমি মালিকরা। দাবিগুলো হলো- ডোম ইনো সংক্রান্ত সংকট মোকাবিলায় একটি ‘সেল’ বা ‘কমিশন’ গঠন করা। প্রকল্প হস্তান্তরের সময়সীমা অতিক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জমির মালিক ও ডোম ইনোর মধ্যে সম্পাদিত চুক্তিপত্রটি বাতিল বলে গণ্য করা। একই সঙ্গে ডোম ইনোকে দেয়া জমির মালিকের রেজিস্ট্রিকৃত আম মোক্তারনামাটিও বাতিল ঘোষণা করা, যাতে এর কোনো কার্যকারিতা না থাকে। ডোম ইনো কর্তৃক জমির মালিককে প্রদানকৃত যেসব চেক ব্যাংকে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে, সেগুলোর প্রতিটির বিপরীতে বড় অঙ্কের ক্ষতিপূরণ ধার্য করা। 

এছাড়া জমি ও ফ্ল্যাটমালিকদের গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সব সরকারি-বেসরকারি মানবাধিকার সংস্থার সহযোগিতা কামনা করা হয়। সবশেষে বর্তমান সংকট নিরসনে মাননীয় প্রধান বিচারপতিকে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ডোম ইনোর বিরুদ্ধে একটি রুল জারি করার বিনীত আহ্বান জানান জমিমালিকরা। একই সঙ্গে আইন, গণপূর্ত ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে শক্ত হাতে এ সংকট সমাধানের অনুরোধ জানানো হয়। 

বর্তমানে ছাত্রদের নেতৃত্ব দেয়ার কেউ নেই: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী - dainik shiksha বর্তমানে ছাত্রদের নেতৃত্ব দেয়ার কেউ নেই: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী শিক্ষাখাতের নতুন তদবিরবাজ তিতাস! - dainik shiksha শিক্ষাখাতের নতুন তদবিরবাজ তিতাস! শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভাজন তৈরির চেষ্টা চলছে: সমন্বয়ক হান্নান - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভাজন তৈরির চেষ্টা চলছে: সমন্বয়ক হান্নান তদন্ত রিপোর্ট না দিয়েই সটকে পড়ছেন শিক্ষা পরিদর্শকরা - dainik shiksha তদন্ত রিপোর্ট না দিয়েই সটকে পড়ছেন শিক্ষা পরিদর্শকরা বরখাস্ত হচ্ছেন শিক্ষা বোর্ডের সেই সচিব নারায়ণ নাথ - dainik shiksha বরখাস্ত হচ্ছেন শিক্ষা বোর্ডের সেই সচিব নারায়ণ নাথ আমরা চাই না ছাত্রদের কঠোর হয়ে দমন করতে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা - dainik shiksha আমরা চাই না ছাত্রদের কঠোর হয়ে দমন করতে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0040490627288818