ঢাবিতে চালু হচ্ছে শাটল সার্ভিস, ভাড়া ৫ টাকা - দৈনিকশিক্ষা

ঢাবিতে চালু হচ্ছে শাটল সার্ভিস, ভাড়া ৫ টাকা

দৈনিক শিক্ষাডটকম, ঢাবি |

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে রিকশা ভাড়া দিতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েননি এমন শিক্ষার্থী খুঁজে পাওয়া দায়। রিকশায় যাতায়াতে শিক্ষার্থীদের বেশি টাকা গুনতে হয়। এ দুর্ভোগ কমাতে ক্যাম্পাসে স্মার্ট অ্যাপ ভিত্তিক শাটল সার্ভিস ‘ইউর শাটল’ চালুর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনুমতি দিলে দ্রুতই সার্ভিসটি চালু হবে।

‘ইউর শাটল’ সার্ভিসটির প্রতিষ্ঠাতা মো. মিলজার রহমান এ তথ্য নিশ্চত করেন। তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে সার্ভিসের পরিকল্পনার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি। শিক্ষার্থীদের চাহিদা ও সুবিধার কথা চিন্তা করে প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছে। এটা বর্তমানে অফিসিয়াল প্রসেসিংয়ের মধ্যে রয়েছে। প্রশাসনের চূড়ান্ত অনুমতি পেলে আমরা খুব দ্রুতই এটা ইন্সটল করব।

মিলজার রহমান বলেন, আমরা ২ বছর আগেই ইউর শাটল চালুর চিন্তা করেছিলাম। কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল বলে সেটা চালু হয়নি। ইতোমধ্যে ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভেন্ডিং মেশিন এবং ওয়াশিং মেশিন সার্ভিস চালু করেছি যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তারই প্রেক্ষিতে অনেক শিক্ষার্থী আমাদেরকে ‘ইউর শাটল’ চালুর দাবি জানিয়েছেন।  

কতটি অটো প্রথম ধাপে চালু হবে— জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা মূলত শিক্ষার্থীদের চাহিদা ও ব্যবহারের ওপর নির্ভর করবে। আমরা প্রথমে একটি রুট নির্ধারণ করেছি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও শিক্ষার্থীরা এই রুটটি নির্ধারণ করলে আমরা দেখবো রুট অনুযায়ী কতটি শাটল প্রয়োজন। আমরা ১৫-২০ টি শাটল প্রথম দফায় চালু করব যাতে ২-৫ মিনিটের মধ্যেই একজন শিক্ষার্থী তার সার্ভিসটি পেয়ে যান। তবে এর চাহিদা বাড়লে শাটলের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।

শাটল সার্ভিসের সময়সীমা প্রসঙ্গে মিলজার রহমান বলেন, আমরা এখনো এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেইনি। শিক্ষার্থীদের চাহিদার ভিত্তিতে সেটা নির্ধারণ করব। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক বিভাগে সকাল ৮টায় ক্লাস শুরু হয়। তাই সকাল ৭টা থেকে সার্ভিস শুরু হতে পারে বলে মনে করি। 

শাটলে কী প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে— এমন প্রশ্নের জবাবে সার্ভিসটির প্রতিষ্ঠাতা বলেন, শাটলে বেশ কিছু টেকনোলজি ব্যবহার করা হবে যা আমাদের অফিসিয়াল সিক্রেট। আপাতত বিষয়টি আমরা সবার সামনে প্রকাশ করছি না। 

জানা যায়, শাটল সার্ভিস চালু হলে শিক্ষার্থীরা শহীদুল্লাহ হল এরিয়া থেকে নীলক্ষেত পর্যন্ত রুটে ৫ থেকে ১০ টাকার মধ্যে যাতায়াত করতে পারবেন। কয়েকটি রুটে ২০-৩০ টি শাটল চলতে পারে। পরে চাহিদা অনুযায়ী শাটলের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে। সর্বোচ্চ ২-৫ মিনিট অন্তর একজন শিক্ষার্থী এই শাটল সার্ভিস নিতে পারবেন। যেকোনো শিক্ষার্থী ‘ইউর ক্যাম্পাস’ নামের অ্যাপস ডাউনলোড করে এই শাটল সার্ভিস গ্রহণ করতে পারবেন। অ্যাপসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রয়োজন অনুযায়ী রিচার্জ করার ব্যবস্থা থাকবে।

এদিকে ‘ইউর শাটল’ সার্ভিস শুরুর উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা চলছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী হাসান তারিক বলেন, ঢাবিতে রিকশা ভাড়ার লাগাম টানার কেউ নেই। অল্প একটু যেতেই তারা ২০/৩০ টাকা ভাড়া রাখে। শাহবাগ থেকে নীলক্ষেত যেতে ৫০ টাকা ভাড়া চেয়ে বসে। কার্জন থেকে কলাভবনে আসতেও ৪০ টাকার কমে আসতে চায় না কেউ। এভাবে চলাটা অনেক কঠিন। মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হিসেবে হাঁটা ছাড়া কোনো পথ খোলা নেই। ‘ইউর শাটল’ যদি চালু হয় তাহলে আমাদের জন্য খুব উপকার হবে। অনেক দূরেও অল্প টাকায় যেতে পারব, আমাদের খরচের পরিমাণও কমে আসবে।

বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলের শিক্ষার্থী তাইবা বলেন, আমাদের কুয়েত মৈত্রী হল এবং বঙ্গমাতা হল ক্যাম্পাস থেকে দূরে হওয়ায় ক্যাম্পাসে আসা যাওয়ার সময় অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তাছাড়া, নীলক্ষেতে দুইটা সিগন্যাল পার হতে হয়। এদিকে আমাদের বাস সুবিধা তেমন ভালো নয়। বাস কম হওয়ায় আমাদের মাঝেমধ্যেই রিকশায় করে চলাফেরা করতে হয়, যা অনেক ব্যয়বহুল। ফলে অধিকাংশ ছাত্রীই এতদূর ক্লাস করতে হেঁটে যাওয়া-আসা করতে বাধ্য হয়। সেক্ষেত্রে আমাদের এই দুইটা হলের দিকে যদি ‘ইউর শাটল’ সার্ভিস অ্যাভেইলেবল থাকে তবে আমাদের যাতায়াতের দুর্ভোগটা কমবে বলে মনে করি। 

এ বিষয়ে ঢাবির কোষাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আমাদের কাছে ‘ইউর ক্যাম্পাসে’র প্রতিনিধিরা তাদের সার্ভিস চালুর বিষয়ে অনুমতিপত্র দিয়েছে। তাছাড়া, আরও কয়েকটা কোম্পানি আমাদের কাছে তাদের সার্ভিস চালুর বিষয়ে প্রস্তাব দিয়েছে৷ প্রয়োজনে আমরা আরও কোম্পানিকে ইনভাইট করব। তারপর আমরা যাচাই-বাছাই শেষে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে যেটা সবচেয়ে ভালো সেটার বিষয়ে বিবেচনা করব।

প্রসঙ্গত, এর আগে, ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ৭ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ডাকসুর সমন্বয়ে ক্যাম্পাসে ১০০টি সাইকেল নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জোবাইক যাত্রা শুরু করে। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ মার্চ পর্যন্ত মোট ১৬০ দিন চালু ছিল এই সাইকেল সেবা। এত অল্পদিনের মধ্যেই কম খরচ ও উন্নত সেবার জন্য ক্যাম্পাসে তুমুল জনপ্রিয়তা পায় সাইকেলটি রাইডটি। 

জো বাইক চলাকালে অতিরিক্ত রিকশা ভাড়া গোনা থেকে সাময়িক রক্ষা পেয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তবে করোনা পরবর্তী সময়ে ফের শিক্ষার্থীদের গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। যা নিন্মবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা শিক্ষার্থীদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ‘শাটল সার্ভিস’ চালুর আলোচনা শুরু হতেই শিক্ষার্থীরা ফের আশায় বুক বাঁধছেন।

শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি - dainik shiksha শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা - dainik shiksha সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার - dainik shiksha স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম - dainik shiksha ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত - dainik shiksha ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক - dainik shiksha ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029230117797852