ঢাবিতে শিক্ষক নিয়োগের মানদণ্ড পিএইচডি করার চিন্তা - দৈনিকশিক্ষা

ঢাবিতে শিক্ষক নিয়োগের মানদণ্ড পিএইচডি করার চিন্তা

দৈনিক শিক্ষাডটকম, ঢাবি |

দৈনিক শিক্ষাডটকম, ঢাবি: দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রভাষক পদে বেশিরভাগই মাস্টার্স পাস করা প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হয়। সে শিক্ষক কিছুকাল পড়িয়েই পিএইচডি বা উচ্চতর ডিগ্রির জন্য শিক্ষা-ছুটি নিয়ে বিদেশে গিয়ে আর ফেরেন না।  বছরের পর বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পদ আঁকড়ে থাকেন। কোনো যোগাযোগ না রাখলেও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিয়মিত বেতন-ভাতা নেওয়াসহ নানা সুযোগ সুবিধা ভোগ করেন। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয় এই শিক্ষকের সার্ভিস থেকে যেমন বঞ্চিত হচ্ছে, তেমনি আর্থিক ক্ষতিও হচ্ছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এমন সব ক্ষতি কাটাতে আগামীতে শিক্ষক নিয়োগে পিএইচডিকে মানদণ্ড হিসেবে দাঁড় করানোর বিষয়ে ভাবছে। উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের (শিক্ষা) সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি জানা গেছে।

শিক্ষাবিদরা বলছেন, এ চিন্তাভাবনা বাস্তবায়ন হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান এবং গবেষণার মান বাড়বে। ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রে পিএইচডি ছাড়া আবেদন করা যায় না জানিয়ে তারা বলেন, বাংলাদেশেও এ পথে হাঁটার সময় এসেছে।

ইউজিসির তথ্যানুযায়ী, ২০২১ সালে শিক্ষা কার্যক্রম চালু থাকা ৫০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সংখ্যা ছিল ১৫ হাজার ২৪৫। ওই বছর কর্তব্যরত ছিলেন ১১ হাজার ৬৯১ জন। বাকি ৩ হাজার ৫৫৪ জন অনুমোদিত বা অনুমোদন ছাড়া ছুটিতে ছিলেন। সবচেয়ে বেশি ২ হাজার ১০৬ জন ছিলেন শিক্ষা-ছুটিতে। ৮৫ জন প্রেষণে বা লিয়েনে, বিনা বেতনে ৯২ জন, অনুমোদন ছাড়া ছুটিতে ৬৪ এবং খন্ডকালীন, চুক্তি ভিত্তিতে বা অন্যভাবে বিভিন্ন জায়গায় ছিলেন ১ হাজার ১৯৮ জন।

সূত্র জানায়, শিক্ষা-ছুটিতে থাকা শিক্ষকরা মূলত বিদেশে উচ্চতর ডিগ্রির জন্য গিয়েছেন। সবচেয়ে বেশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ হাজার ৪৮৪ জন শিক্ষকের মধ্যে ৩২৯ জন ছিলেন শিক্ষা-ছুটিতে। এর মধ্যে অনেকেই নির্ধারিত সময় পার হলেও আর কর্মস্থলে ফেরেননি। ২০২২ সালে শিক্ষা-ছুটির বিধান লঙ্ঘন করায় বিভিন্ন বিভাগের ১৩ জন শিক্ষকের পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাওনা অর্থ পরিশোধ করার জন্য তাদের চিঠি দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় এ দায়ে বেশ কয়েকজন শিক্ষককে বরখাস্ত ও জরিমানা করা হয়।

যদি নিয়োগকৃত কোনো শিক্ষকের পিএইচডি আগে থেকেই করা থাকে তবে তাকে সবেতনে বিদেশে পাঠানোর প্রয়োজন হবে না এবং বিশ্ববিদ্যালয়ও কাক্সিক্ষত মানের শিক্ষক ও গবেষক পাবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল  বলেন, ‘এটা শুধু প্রভাষক নিয়োগ না। আশপাশে যেমন ভারতে প্রভাষকের কোনো পদ নেই। যেখানে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর (সহকারী অধ্যাপক) থেকে শুরু হয় এবং ডক্টরেট ডিগ্রি ছাড়া সেটি হয় না। আমাদের এখানেও আমরা সংস্কার করব।এই সংস্কার করতে গেলে পর্যাপ্ত পিএইচডিধারী শিক্ষকের প্রয়োজন আছে এবং সেটা হতে হবে মানসম্মত পিএইচডি।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডির কথা উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, ‘আমাদের এখানেও অনেক পিএইচডি হয়, যার কোনো ইম্প্যাক্ট নেই। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা আমি নাই বললাম। ইম্প্যাক্ট ছাড়া পিএইচডি দিয়ে তো শিক্ষক করা যাবে না। ভালো গবেষক যাদের পর্যাপ্ত গবেষণা আছে এমন শিক্ষার্থীর সক্ষমতা সাপেক্ষে আমাদের এগোতে হবে।’

অবশ্য এ পথে এগোনোর আগে দেশের উচ্চশিক্ষায় একটা সংস্কার দরকার বলে তিনি মনে করেন। ড. মাকসুদ কামাল বলেন, ‘সংস্কারটি হলো বৃত্তিধারী যেসব শিক্ষার্থীকে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্কলারশিপ দিয়ে আমরা দেশের বাইরে পাঠাই সেই স্কলারশিপের পরিমাণ যদি বাড়ানো যায় এবং দেশের ভেতরে যদি পিএইচডির মান বাড়ানো যায়, যারা পিএইচডি করছেন তাদের যদি তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও আধুনিক যন্ত্রপাতি-প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয় তাহলে আমাদের দেশেও মানসম্মত পিএইচডি হবে। সেই অবস্থায় যখন আমরা পাব তখন গিয়ে সংস্কারটা করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হবে।’ তা না হলে মানসম্মত পিএইচডিধারী শিক্ষক পাওয়া কঠিন হবে বলে তিনি মনে করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের যদি উৎকর্ষ ঘটাতে হয় শিক্ষকতায়, গবেষণায় এবং পাঠদানে তাহলে আমাদের মানের সন্ধানে যেতেই হবে।’

উন্নত বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পিএইচডি ছাড়া অধ্যাপক হওয়া যায় না, সহযোগী অধ্যাপক হওয়া যায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এমনকি দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও বিদেশ থেকে পিএইচডি করা শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও এখন যেমন পিএইচডি ছাড়া কেউ অধ্যাপক হতে পারছেন না। এটি খুব চমৎকার।’ প্রভাষক নিয়োগের ক্ষেত্রে পিএইচডিধারী নিয়োগে সময় লাগলেও তিনি এটা পক্ষে বলে জানান।

সব প্রাথমিকে তারুণ্যের উৎসবে জুলাই-আগস্ট বিপ্লব নিয়ে কর্মসূচি - dainik shiksha সব প্রাথমিকে তারুণ্যের উৎসবে জুলাই-আগস্ট বিপ্লব নিয়ে কর্মসূচি ভর্তি হয়ে প্রতারিত হলে দায় নেবে না ইউজিসি - dainik shiksha ভর্তি হয়ে প্রতারিত হলে দায় নেবে না ইউজিসি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তি: কপাল খুললো ভুল চাহিদায় সুপারিশ পাওয়াদের - dainik shiksha পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তি: কপাল খুললো ভুল চাহিদায় সুপারিশ পাওয়াদের কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি আবেদন শেষ হচ্ছে কাল - dainik shiksha সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি আবেদন শেষ হচ্ছে কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে এসএসসির ফরম পূরণ শুরু রোববার - dainik shiksha এসএসসির ফরম পূরণ শুরু রোববার অনার্স ২য় বর্ষে ফের ফরম পূরণের সুযোগ - dainik shiksha অনার্স ২য় বর্ষে ফের ফরম পূরণের সুযোগ আলামত ধ্বংস বিভাগ থেকে বের হতো প্রশ্ন, কর্মচারী আকরামের স্বীকারোক্তি - dainik shiksha আলামত ধ্বংস বিভাগ থেকে বের হতো প্রশ্ন, কর্মচারী আকরামের স্বীকারোক্তি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0058979988098145