ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) হাজী মুহম্মদ মুহসীনের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ‘যুদ্ধ নয়, মানবিক পৃথিবীর প্রত্যাশায়’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে হাজী মুহম্মদ মুহসীন স্মারক আন্তঃক্লাব বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) বিতর্ক দলকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি বিতর্ক দল।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আয়োজিত সমাপনী অনুষ্ঠানে চ্যাম্পিয়ন দল ও রানার্সআপ দলের নাম ঘোষণা করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
অনুষ্ঠানে ঢাবি উপাচার্য বলেন, সহপাঠ্যক্রমের অংশ হিসেবে বিতর্কের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই বিতর্কের মাধ্যমেই মানবিক মানুষ হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়। কারণ, বিতর্কের মাধ্যমে যুক্তির চর্চা হয় এবং বিভিন্ন মতামতের গ্রহণযোগ্যতা এখানে থাকে। যার ফলে বিতর্ক করে যেসব বিজ্ঞ মানুষ তৈরি হন তারা মানবিক পৃথিবী তৈরিতে ভূমিকা পালন করতে পারেন। আগামীতে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য এ ধরনের বিতর্কের মাধ্যমে যুক্তিশীল ও স্মার্ট জনবল তৈরি করতে হবে।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, একুশ শতকে ইউক্রেনে রাশিয়ান আগ্রাসন, উন্নত বিশ্বের জাতীয় নিরাপত্তা ও সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তিতে পারমানবিক প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধি, বাণিজ্য যুদ্ধ এবং ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্রাটেজি এ পৃথিবীকে অস্থিতিশীল করে তুলছে। বিশ্ব নাগরিক হওয়ার হাতছানির সঙ্গে ম্যাটারিয়ালিস্টিক জীবনভাবনার সংযোগ জন্ম দিচ্ছে আত্নকেন্দ্রীক যাপিত জীবনের। হারিয়ে যাচ্ছে হাজী মুহসীনদের রেখে যাওয়া মানবিকতা। এজন্য যুদ্ধ নয়, মানবিক পৃথিবীর প্রত্যাশা নিয়েই আয়োজিত হয় এই বিতর্ক প্রতিযোগিতা।
মুহসীন হল ডিবেটিং ক্লাবের সভাপতি ফুয়াদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবা নাসরীন, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মাসুদুর রহমান, মুহসীন হল ডিবেটিং ক্লাবের মডারেটর আইনুল ইসলাম, শরীয়তপুর জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহবুবুল আলম এবং ঢাকা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি মো. মাহবুবুর রহমান মাসুমসহ আরো অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
চূড়ান্ত বিতর্কে জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটিকে (সরকারি দল) ৭-০ ব্যালটে হারায় ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং ক্লাব (বিরোধী দল)। শ্রেষ্ঠ বিতার্কিক নির্বাচিত হন বিরোধী দলের উপনেতা নাইমুর রহমান।
প্রখ্যাত মুসলিম জনহিতৈষী, ধার্মিক, উদার ও জ্ঞানী ব্যক্তি মুহম্মদ মুহসীনের নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল প্রতিষ্ঠিত হয়। হলটিতে ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে যাত্রা শুরু হওয়া মুহসীন হল ডিবেটিং। বরাবরের মতো এবারো আয়োজন করেছে ‘৩য় হাজী মুহম্মদ মুহসীন স্মারক আন্তঃক্লাব বিতর্ক প্রতিযোগিতা’। প্রতিযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭টি হল এবং দেশের ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়সহ মোট ৩২টি টিম অংশগ্রহণ করে।