দৈনিক শিক্ষাডটকম, ঢাবি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে লম্বা লাইন দিয়ে পড়তে যাওয়ার ছবি-ভিডিও প্রায়ই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যায়। মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে পড়তে আসা বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই বিসিএস বা বিভিন্ন চাকরি প্রার্থী।
চাকরির পড়ার নিরিবিলি পরিবেশের জন্যই তাদের প্রধান পছন্দ কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার। ফলস্বরূপ চাকরিপ্রার্থীদের অতিরিক্ত চাপে বেশিরভাগ সময়ই লাইব্রেরিতে একাডেমিক পড়ার সুযোগ পায় না অন্যান্য শিক্ষার্থীরা।
তবে এ পরিবেশ পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। প্রশাসন বলছে, যেকোনোভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে বিসিএস বা চাকরির প্রস্তুতির পড়াশোনা বন্ধ করা হবে।
চাকরির প্রস্তুতি নিতে আসা শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধ করে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের অ্যাকাডেমিক পড়াশোনার উপযোগী করা হবে গ্রন্থাগারকে।
এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে নেয়া হয়েছে একাধিক পদক্ষেপও। যা আগামী জুন থেকে যা কার্যকর হবে।
গত শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে শিক্ষার্থীদের পাঞ্চ কার্ডের মাধ্যমে প্রবেশ করানো হবে।
এক্ষেত্রে ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পরও যারা পড়তে যান, বিশেষ করে বিভিন্ন চাকরি ও বিসিএস প্রস্তুতির জন্য পড়তে যাওয়া ছাত্রত্ব শেষ হওয়া শিক্ষার্থীরা গ্রন্থাগারে প্রবেশ করতে পারবেন না।
গ্রন্থাগারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নতুন উদ্যোগ নিয়ে জানতে চাইলে মুঠোফোনে তিনি উপাচার্য বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছি।
আগামী বছর থেকে হলে প্রবেশের সময় শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত কার্ড পাঞ্চ করে প্রবেশ করতে হবে। ফলে মেয়াদোত্তীর্ণ ও বহিরাগতরা হলে প্রবেশ করতে পারবে না।
লাইব্রেরিতেও একই প্রক্রিয়ায় চালু হচ্ছে। গ্রন্থাগারে প্রবেশে আগে থেকে তিনটি পাঞ্চ কার্ড মেশিন রয়েছে। নতুন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ে আরো দুটি মেশিন যোগ করা হবে।
ঢাবি উপাচার্য বলেন, যারা কেবল বিসিএস পড়তে যায়, তারা আগামী মাস থেকে লাইব্রেরিতেও প্রবেশ করতে পারবে না।
এখন লাইব্রেরিতে সবাই বিসিএস পড়তে যায়। দু’একজন হয়তো অ্যাকাডেমিক বই পড়ার জন্য যায়। এর অর্থ, যে বিষয়ে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করে, সে বিষয়ে তারা আনন্দ পায় না। আনন্দ পেলে পাঠ্যসূচি নির্ভর পড়াশোনা তাদের ধ্যানজ্ঞান হওয়ার কথা।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির ভারপ্রাপ্ত গ্রন্থাগারিক অধ্যাপক ড. মো. নাসিরউদ্দিন মুন্সী বলেন, যেসব শিক্ষার্থীর মাস্টার্স শেষ, তারা আর লাইব্রেরিতে ব্যবহারের অধিকার রাখেন না।
তাদের কারণে নিয়মিত শিক্ষার্থীরা লাইব্রেরিতে পড়ার সুযোগ পায় না। উপাচার্য স্যারের সঙ্গে এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নেয়া পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করবো।