প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমার স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়। আমিও এখানেই পড়েছি, কিন্তু মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করতে পারিনি। পৃথিবীর অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আমাকে ডিগ্রি দিয়েছে কিন্তু তাতে আমার মন ভরেনি। নিজের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি নিতে পারলে মন ভরত।
রোববার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে আয়োজিত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠানের সমাবর্তন বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তো আমার নিজের বিশ্ববিদ্যালয়। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য গর্ববোধ করি। আমি চাই বিশ্ববিদ্যালয় আরও উন্নত ও সমৃদ্ধ হোক। সকলের কাছে আহ্বান জানাই সবাই যেন গবেষণায় মনোনিবেশ করেন। আমি চাই এখানে গবেষণা বৃদ্ধি পাক। গবেষণায় উন্নতি সাধিত হলে দেশ আরও সামনে এগিয়ে যেতে পারবে। একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বিশ্বের কাছে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ১৫ বছর ধরে আমরা ক্ষমতায় আছি। ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দ থেকে আজকে ২০২৩, এটি এখন এক বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। আজকের ছাত্র-ছাত্রীরা উপলব্ধি করতে পারবে না ২০ বছর আগে কেমন বাংলাদেশ ছিল। সেখানে ক্ষুধা-দারিদ্র্য ছিল, বৈজ্ঞানিক কোনো কিছু ছিল না। আমরা ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে ক্ষমতায় এসে বিজ্ঞান ও কম্পিউটার শিক্ষা চালু করি। আমরা মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠিয়েছি, শিগগিরই বঙ্গবন্ধু-২ স্যাটেলাইটও পাঠানো হবে। আমাদের এখন চাঁদে যেতে হবে। যার লক্ষ্যে আমরা লালমনিরহাটে এভিয়েশন স্পেস ইউনিভার্সিটি করেছি। বর্তমান সরকার বিগত ১৫ বছর ধরে দেশকে সব দিক থেকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে গেছে। আগামীতে সেই অগ্রগতি যেন থেমে না যায় সে ব্যাপারে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে।
বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নামে ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দ থেকে প্রতিদিন পাকিস্তানি সরকারের গোয়েন্দারা রিপোর্ট লিখত। আমি ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে ক্ষমতায় আসার পরে সেগুলো সংগ্রহ করতে থাকি এবং বর্তমানে ১৩ খণ্ড প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশের অনেক ইতিহাস পরিবর্তন করে ফেলা হয়েছে। এই গোয়েন্দা রিপোর্ট এক একটি ইতিহাসের অংশ। আমরা মনে করি এই গোয়েন্দা রিপোর্ট প্রকাশিত হলে অনেক বিকৃত ইতিহাসকে মুছে দিয়ে সত্য প্রকাশিত হবে।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আজকে আমরা দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি করেছি, দেশের দারিদ্র্য দূর করেছি যদিও কোভিড আমাদের কিছু সময়ের জন্য থামিয়ে দিয়েছিল। আমি চাই আমাদের ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষক সবাই আমাদের এই অর্জনগুলো যেন ধরে রাখে। এসব নিয়েই আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে। জাতির পিতা এই বাংলাদেশের জন্য যে মহান আত্মত্যাগ করে গেছেন, সেটি আমাদের ভুললে চলবে না। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে আমরা এগিয়ে যেতে থাকলে আমাদের কেউ রুখতে পারবে না।