প্রেমের সম্পর্কে ভাটা পড়ায় যুবক ফেসবুকে সুইসাইড নোট লিখে আত্মহত্যার মিথ্যে হুমকি দিয়েছেন। সেই সুইসাইড নোটটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে রাজবাড়ী জেলা পুলিশের নজরে আসে। তাৎক্ষণিক পুলিশের মোবাইল টিম ওই যুবককে উদ্ধার করতে বাড়িতে গিয়ে দেখে পরিবারের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছে যুবক।
ঘটনাটি ঘটেছে রাজবাড়ীর শহরের ৭নং ওয়ার্ডের ভবানিপুর গ্রামে। ফেসবুকে সুইসাইড নোট লেখা যুবকের নাম ফেরদৌস নাঈম। তিনি ভবানিপুর এলাকার মৃত গোলাম ফয়েজের সন্তান। ফেরদৌস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টা ৩৭ মিনিটে ফেরদৌস নাঈম তার ফেসবুক থেকে জেলা পরিষদের প্যাডে একটি সুইসাইড নোট ভাইরাল হয়। ভাইরাল হওয়া সুইসাইড নোটে লেখা ছিল ‘আমি ফেরদৌস নাঈম, ৮৭১২৬১০.., ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি নং ২০১৯০১৫৮..। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমার ব্যক্তিগত প্রেমের সম্পর্কের ঝামেলা/সংকট মোকাবিলায় আপনারা স্ব-প্রণোদিত হয়ে যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ এবং একইসঙ্গে ক্ষমাপ্রার্থী। কারণ আমার ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে আপনদের অপমানিত ও লজ্জিত হতে হয়েছে।
আমার বিধবা মাকে যেই মেয়ে (অশ্লীল ভাষা) বলে গালাগাল করেছে এবং আমার আম্মুর সম্মানহানি হয় এমন কথা বলেছে সেই মেয়ের বিচার আপনারা না করলেও আমার বলার কিছু নেই। কিন্তু মৃত বেলাল ফয়েজের সন্তান হিসেবে এই বিচার আমি করব। আমার মৃত্যু হলে কবরটা যেন আমার বাবার কবরেই হয় এই শেষ অনুরোধ।’
এর নিচে বিশেষ দ্রষ্টব্য দিয়ে আবার লেখা ছিল, ‘এক সেট ব্লেড যেটা দিয়ে সবেমাত্র হাত কাটছি। আরেক সেট আমার বাসায় লুকানো আছে।’ এই পোস্টটি ভাইরাল হলে পুলিশ তাৎক্ষণিক ওই যুবকের বাড়িতে গিয়ে জানতে পারে তিনি সুস্থ আছেন এবং আত্মহত্যার মিথ্যা হুমকি দিয়েছিলেন।
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে ফেরদৌস নাঈমের ব্যবহৃত নম্বরে একাধিকবার কল করা হলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ফেরদৌস নাঈমের মা রাজবাড়ী জেলা পরিষদের সহকারী লাইব্রেরিয়ান হুসনে নাহিদ বলেন, ‘আমার ছেলের বর্তমান কর্মকাণ্ডে আমি খুবই বিব্রত। ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ওর কাছ থেকে এই ধরনের ছেলে মানুষী কাজ আশা করিনি।’
রাজবাড়ী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. রেজাউল করিম বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া সুইসাইড নোটটি আমার নজরে এলে আমি তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশের মোবাইল টিম ছেলেটির বাড়িতে পাঠাই। সেখানে গিয়ে পুলিশ দেখতে পায় ছেলেটি দিব্যি সুস্থ। সে তার মা ও আত্মীয়দের সঙ্গে বসে গল্প করছিল।
তিনি আরও বলেন, ছেলেটিকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে জানায়, সে মজা করে ফেসবুকে সুইসাইড নোটটি লিখেছিল। তাকে মানসিকভাবে একটু অসুস্থ বলেও মনে হয়েছে।