সরকারি তিতুমীর কলেজে দশতলা বিশিষ্ট ছাত্রাবাস চালু হওয়ার আগেই ১০ লাখ টাকার মালামাল লুটপাট হয়েছে। হলের নির্মাণকাজ চলাকালীন সময়ে তিন বছর ধরে এই লুটপাট হয়েছে। এসব ঘটনা তদন্ত করে সত্যতা পাওয়ায় কলেজের তিন কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করেছে কলেজ প্রশাসন। তিন সদস্য বিশিষ্ট ওই তদন্ত কমিটিতে ছিলেন কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. মহিউদ্দিন, শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মালেকা আক্তার চৌধুরী, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক রেজাউল হক।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, গত বছরের এপ্রিল মাসে ১০তলা বিশিষ্ট নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ছাত্র নিবাস ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রী নিবাস হলের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি। তবে উদ্বোধনের ১৬ মাস পেরিয়ে গেলেও চালু হয়নি হল দু’টি। এরই মধ্যে ঘটেছে অঘটন। আক্কাসুর রহমান আঁখি হলের পাশে নির্মাণাধীন ১০তলা বিশিষ্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ছাত্র নিবাস হলের ১০ লাখ টাকার মালামাল চুরি হয়েছে। এই ঘটনায় কলেজের তিন কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করেছে কলেজ প্রশাসন। চাকরিচ্যুত তিন কর্মচারী হলেন আঁখি হলের টেকনিশিয়ান নূর ইসলাম, নিরাপত্তা প্রহরী লোকমান হোসেন ও আলাউদ্দিন। মালামাল চুরি ও দায়িত্ব অবহেলায় তাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
কলেজের নিরাপত্তার দায়িত্ব অবহেলা করে তারা বাহিরে বিভিন্ন পণ্য বেচা-বিক্রি করতো।
সূত্র আরও জানায়, ২০২১ খ্রিষ্টাব্দ থেকে এখন পর্যন্ত নানা সময়ে হলের বিভিন্ন মালামাল চুরি ঘটনা ঘটেছে। সম্প্রতি হলের পানির পাম্প, মিটার চুরি হয়েছে। এছাড়া নিচতলা থেকে চতুর্থ তলা পর্যন্ত ৪০টি ফ্যান, বেশ কিছু পানির কল, ওয়াশরুমের ফিটিংস, সুইচবোর্ডসহ বিভিন্ন ইলেকট্রিক সামগ্রী চুরি হয়েছে। এসব ঘটনায় প্রাথমিকভাবে টেকনিশিয়ান নূর ইসলামের সম্পৃক্তটা পেয়েছে কলেজ প্রশাসন। নূর ইসলাম ঠিকাদারের সঙ্গে সাব ঠিকাদার হিসেবেও কাজ করতো।
ঠিকাদারকে না বলে বাহিরে বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যেতো। বিভিন্ন সময়ে কলেজের কাজের জন্য অতিরিক্ত বাজেট দেয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। নূর ইসলাম কলেজ কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে নির্মাণাধীন হলের তালা ভেঙে নিজেই আরেকটি তালা লাগিয়েছে। এসব কারণে তাকে চাকরিচ্যুত করেছে কলেজ প্রশাসন। এছাড়া এসব ঘটনায় কলেজের ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক সালাহ উদ্দিন বাদী হয়ে বনানী থানায় একটি মামলা করেছেন।
এসব প্রসঙ্গে কলেজের শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা আক্তার চৌধুরী মানবজমিনকে বলেন, কলেজের ছাত্রাবাসের বিভিন্ন মালামাল চুরি হয়েছে। স্টাফদের দায়িত্ব থাকা সত্ত্বেও তারা অবহেলা করেছে। সেদিনও মিটার, পানির পাম্প চুরি হয়েছে। তাই তাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
তবে এসব ব্যাপারে টেকনিশিয়ান নূর ইসলামের কাছে জানতে চাইলে বলেন, আমি ভুল করি নাই। এখন কর্তৃপক্ষ যদি মনে করে তাহলেতো আমি ভুল করছি।