সৌদি আরবে চলছে পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা। বিশ্বের নানা প্রান্তের লাখ লাখ মুসলমান আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে হাজির হয়েছেন মক্কায়। মঙ্গলবার (২৭ জুন) সকালে তীব্র গরমের মধ্যে তারা জড়ো হয়েছেন আরাফাতের ময়দানে।
আর এই তীব্র গরম নিয়ে হাজিদের উদ্দেশে সতর্কতা উচ্চারণ করেছে সৌদি আরব। একইসঙ্গে হাজিদের উদ্দেশে বেশ কিছু পরামর্শও দিয়েছে দেশটি। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল আরাবিয়া।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার মধ্যে হজের আনুষ্ঠানিকতা পালন করা হাজিদের তাপ ক্লান্তি সম্পর্কে সৌদি আরবের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সতর্ক করেছে বলে জানিয়েছে সৌদি প্রেস এজেন্সি (এসপিএ)।
সৌদির এই মন্ত্রণালয় জোর দিয়ে বলেছে, তীব্র রোদের মধ্যে ছাতা ব্যবহার করা, প্রচুর পরিমাণে তরল পানীয় পান করা, শারীরিক পরিশ্রম এড়ানো এবং স্বাস্থ্য নির্দেশিকা অনুসরণ করা হলে তা হিটস্ট্রোক বা তাপ সংশ্লিষ্ট যেকোনো চাপ থেকে হাজিদের রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে।
আল আরাবিয়া বলছে, তাপ ক্লান্তি এমন এক ধরনের তাপ-সম্পর্কিত অসুস্থতা যা কোনো ব্যক্তির উচ্চ তাপমাত্রার সংস্পর্শে আসার পরে দেখা দিতে পারে এবং প্রায়শই এটি পানি শূন্যতা সৃষ্টি করতে পারে।
তবে ব্যক্তি ভেদে এই অসুস্থতার লক্ষণগুলো পরিবর্তিত হতে পারে এবং এর মধ্যে বিভ্রান্তি, মাথা ঘোরা, প্রচুর ঘাম হওয়া, দ্রুত হৃদস্পন্দন, মূর্ছা যাওয়া, ক্লান্তি, মাথাব্যথা, পেশী বা পেটে ব্যথা, বমি বমি ভাব, বমি, ডায়রিয়া এবং ত্বক ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়ার মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
এছাড়া কোনো ধরনের সতর্কতা অবলম্বন না করলে তাপ ক্লান্তি হিটস্ট্রোক ঘটাতে পারে। আর এটি মস্তিষ্ক ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের ক্ষতি করতে পারে এবং এমনকি মৃত্যুর কারণও হতে পারে।
এসপিএ তার সোমবারের প্রতিবেদনে বলেছে, হাজিদের মধ্যে হিট স্ট্রোকের ক্ষেত্রে হাসপাতালের ২১৭টি শয্যা বরাদ্দ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে এসপিএ বলেছে, পবিত্র স্থানগুলোতে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা ও স্বেচ্ছাসেবীরা তাপ ক্লান্তি এবং সান স্ট্রোকের ক্ষেত্রে কীভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয় সে সম্পর্কে প্রশিক্ষণ পেয়েছেন।
গ্র্যান্ড মসজিদ এবং মসজিদে নববী বিষয়ক জেনারেল প্রেসিডেন্সি এ পর্যন্ত ১০ হাজার ছাতা হাজিদের মধ্যে বিতরণ করেছে। এছাড়া হাজিদের তাদের যাত্রাপথজুড়ে জমজমের পানি পানের সুযোগও রাখা হয়েছে।
এদিকে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের করোনা মহামারি হানা দেওয়ার পর এবারই প্রথমবারের মতো সব ধরনের স্বাস্থ্য বিধিনিষেধ তুলে দেওয়া হয়েছে। এতে করে এবার একসঙ্গে হজ করবেন ২০ লাখেরও বেশি মানুষ।
সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রী ড. তৌফিক আল-রাবিয়া গত বৃহস্পতিবার বলেছেন, এবার বিশ্বের ১৬০টির বেশি দেশের ২০ লাখের অধিক মুসল্লি পবিত্র হজ পালন করবেন।