১০ম গ্রেড বাস্তবায়নসহ ছয় দফা দাবিতে আন্দোলনে নামছেন প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকরা। আগামী বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আন্দোলনের রূপরেখা ঘোষণা করা হবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি শামসুদ্দিন মাসুদ। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে প্রাথমিকের শিক্ষকরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। এ বৈষম্য নিরসনে সরকার অনেকবার আশ্বাস দিয়েছে। তবে দাবিগুলো বাস্তবায়ন হয়নি। দাবি আদায়ে এবার ‘শক্তভাবে’ রাজপথে নামবেন শিক্ষকরা।’
এ শিক্ষক নেতা জানান, ‘আমাদের প্রথম এবং প্রধান দাবি হলো- সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেড বাস্তবায়ন করতে হবে। দ্বিতীয় দাবি হলো- শতভাগ পদোন্নতি। এছাড়া সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ বাতিল, পূর্বের ন্যায় টাইমস্কেল প্রদান, চাকরির বয়স ১০ ও ১৬ বছর পূর্ণ হলে উচ্চতর গ্রেড প্রদান এবং সিনিয়রদের চেয়ে জুনিয়রদের বেতন বেশি হওয়ার বিষয়টি সমাধান করতে হবে।’
সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ বাতিল কেন করতে হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, ‘শহর কিংবা প্রত্যন্ত অঞ্চলে এমন অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেখানে পুরো প্রতিষ্ঠানে তিনজন শিক্ষক। এর মধ্যে একজন প্রধান শিক্ষক, একজন সহকারী শিক্ষক আর একজন সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে থাকলে বিষয়টি কেমন দেখায়? এজন্য সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ বাতিল করতে হবে।’
এদিকে প্রাথমিক শিক্ষায় শতভাগ পদোন্নতি নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। বুধবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে ফেসবুকে দেয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ তথ্য জানান।
হাসনাত ফেসবুকে লিখেছেন, বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় প্রাথমিক শিক্ষা সবচেয়ে অবহেলিত একটি খাত। অথচ এটি সমাজে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাওয়া উচিত। বেতন কাঠামো এবং সামাজিক স্বীকৃতির দিক থেকে পিছিয়ে থাকা প্রাথমিক শিক্ষা, দেশের সামগ্রিক শিক্ষা উন্নয়নের মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।
তিনি বলেন, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত না করা গেলে উচ্চশিক্ষায় গুণগত মান অর্জন করা সম্ভব নয়। এ বাস্তবতায়, প্রাথমিক শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যমান বেতন কাঠামোর পরিবর্তন, মেধার ভিত্তিতে পদোন্নতি এবং অন্যান্য দাবির বিষয়ে সোচ্চার ছিলেন।
বুধবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায়ের কাছে এসব দাবি উপস্থাপন করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তিনি আশ্বাস দিয়েছেন যে, প্রাথমিক শিক্ষকদের শতভাগ পদোন্নতি নিশ্চিত করা হবে। সহকারী শিক্ষক থেকে সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং সর্বশেষ প্রধান শিক্ষক হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। এ প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, শিগগিরই প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে বলে জানান তিনি।