কোটা সংস্কারের জন্য অতিদ্রুত শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে স্বাধীন কমিশন করে এর সুপারিশ অনুযায়ী সংসদে আইন প্রণয়নসহ তিনটি দাবি পূরণে সরকারকে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এসব বিষয়ে পদক্ষেপ না নিলে সোমবার থেকে বাংলা ব্লকেডের চেয়েও বড় কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা।
শনিবার রাত ৮টার দিকে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ এ ঘোষণা দেন। এ সময় আরেক সমন্বয়ক মাহিন সরকার ও সহসমন্বয়ক রশিদুল ইসলাম রিফাত উপস্থিত ছিলেন।
হান্নান বলেন, কোটা সংস্কারে আজ রোববারের মধ্যে স্বাধীন কমিশন গঠন; সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ, সহসমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার ও ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনসহ সব শিক্ষার্থীর মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং শিক্ষার্থী হত্যার সঙ্গে জড়িত মন্ত্রী পর্যায় থেকে কনস্টেবল পর্যন্ত সব দোষীর বিরুদ্ধে দৃশ্যমান ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় সোমবার থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কঠিন কর্মসূচি নিতে বাধ্য হবে।
তিনি স্থানীয় ইউনিটগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আগামীকাল থেকে সারাদেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, জেলা, উপজেলা ও নগরকেন্দ্রিক ‘হেলথ ফোর্স’ গঠন করে আহত-নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি এবং আহত-নিহত ছাত্র-নাগরিক ও তাদের পরিবারকে মানসিক ও আর্থিকভাবে সহযোগিতা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। সেই সঙ্গে ‘লিগ্যাল ফোর্স’ গঠন করে সারাদেশে অসংখ্য মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলার ডকুমেন্টেশন এবং যাদের আইনি সাহায্যের প্রয়োজন তাদের জন্য সেই ব্যবস্থা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় ইউনিট কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করবে। এ ছাড়া রোববার সারাদেশের দেয়ালগুলোতে গ্রাফিতি ও দেয়াললিখন কর্মসূচি পালন করা হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিদেশে অবস্থানরত ভাইদের বলব, আপনারা হত্যার প্রমাণাদি সব রাষ্ট্রের কাছে পৌঁছে দেবেন।’
হান্নান বলেন, আমরা সারাদেশে বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি পালন করেছি। কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি দিয়েছি। আমাদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে আমরা কঠিন কর্মসূচি দিয়ে রাজপথে নামব। আমরা পালিয়ে থাকব না। সোমবার আমরা আবার রাজপথে নামব।
তিনি আরো বলেন, আমরা নিরাপত্তাহীনতায় আছি। একদিকে বলা হচ্ছে, ছাত্ররা নাশকতা করেনি। অন্যদিকে আমাদের প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী প্রায় সাড়ে তিন হাজারের বেশি শিক্ষার্থীকে তুলে নেওয়া হয়েছে। সহস্রাধিক বেশি হামলা করে ভয়ংকর পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে।
আন্দোলনের এই সমন্বয়ক অভিযোগ করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আখতার হোসেনকে টেনেহিঁচড়ে নেওয়া হয়েছে। নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ, আবু বাকের মজুমদারকে তুলে নেওয়া হয়েছে। আমরা অসুস্থ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম কিন্তু পাঁচ মিনিটের বেশি থাকতে দেওয়া হয়নি।
তিনি বিশ্বের সব মানবাধিকার সংস্থা এবং প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলোকে বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, প্রবাসী ভাইদের আহ্বান জানাব, শিক্ষার্থীদের পক্ষে আওয়াজ তুলুন। বাংলাদেশে যেভাবে ক্র্যাকডাউন চলছে, তার প্রতিবাদ জানান।