দিনে ক্লাস, রাতে চা বিক্রি করে চলছে ইমরানের পড়ালেখা - দৈনিকশিক্ষা

দিনে ক্লাস, রাতে চা বিক্রি করে চলছে ইমরানের পড়ালেখা

দিনাজপুর প্রতিনিধি |

আত্মবিশ্বাস, অদম্য ইচ্ছা, মনোবল মানুষকে পৌঁছে দিতে পারে তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে। এমন এক উদাহরণ সৃষ্টি করেছে দিনাজপুরের ডিপ্লোমা ইঞ্জিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থী ইমরান আলী। অনেক স্বপ্ন নিয়ে ইমরান আলী ভর্তি হন কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দিনাজপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে। ইমরান আলীর বাড়ি দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার আলোকডিহি ইউনিয়নে।

২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে পিতা মারা যাওয়ায় তার পরিবারে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। ইমরানের স্বপ্ন পূরণে বাধা হয়ে দাঁড়ায় অভাব-অনটন। এতে তার লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। তাই লেখাপড়াকে চালিয়ে যাওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেন বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ চা-পানের দোকান করবেন। এতে বাড়তি কিছু টাকা সংসার চালানোর জন্য মাকে দিতে পারবে। সে অনুযায়ী নেমে পড়েন ভ্রাম্যমাণ চা-পানের দোকান নিয়ে।

জীবন সংগ্রামে যুদ্ধ করে আজও চালিয়ে যাচ্ছে তার লেখাপড়া ও সংসারের খরচ। ইমরান আলী বর্তমানে দিনাজপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ষষ্ঠ সেমিস্টারের ছাত্র। তিনি কলেজের পাসের মেসে থাকেন। ইমরান আলী দিনে ক্লাস করার পর বিকাল থেকেই রাত পর্যন্ত বিভিন্ন রাস্তা-ঘাট ও দিনাজপুর গোর-এ শহীদ বড় ময়দান এলাকায় ফ্লাক্সে চা, গলায় একটি ট্রে ঝুলিয়ে পান নিয়ে ছুটে চলেন ক্রেতাদের নিকট। এতে তিনি প্রতিদিন ২০০-৩০০ টাকা আয় করছেন। প্রথমদিকে বন্ধুদের কেউ কেউ বিভিন্ন রকম আপত্তি জানালেও এখন ইমরানের এ সাহাসিকতাকে অনুপ্রেরণার চোখে দেখছেন সবাই।

শিক্ষার্থী ইমরান আলী জানান, বাবাকে হারানোর পর পরিবারে অভাব-অনটন দেখা দিলে শুরু করি ভ্রাম্যমাণ চা-পানের দোকান। শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে এই দোকান নিয়ে চা-পান বিক্রি করি। দিনে ক্লাস করার পর অবশিষ্ট সময় চায়ের দোকান। প্রতিদিন যা আয় হয় তা দিয়ে পড়ালেখাসহ কিছু টাকা মায়ের কাছে সংসার খরচের জন্য পাঠিয়ে দেই। বাড়িতে মা একাই থাকেন। বাবার রেখে যাওয়া কিছু টাকাসহ ঋণ নিয়ে বড়ভাই বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। 

সেই ঋণ এখনো পরিশোধ হয়নি। তার সহপাঠীদের আশা, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা বা বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে ইমরান আলী ও তার পরিবারের পথচলা আরেকটু সহজ হবে।

এ ব্যাপারে দিনাজপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী মো. আব্দুল ওয়াদুদ মণ্ডল জানান, ইমরান আলীর মতো গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা যেন ঝরে না পড়ে, সে লক্ষ্যে বিশেষ দৃষ্টি ও সহায়তা করা হবে। তার পড়ালেখা চালিয়ে যাবার ব্যাপারে সবরকম সহায়তা করবো।

যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার - dainik shiksha কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত - dainik shiksha উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে - dainik shiksha ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন - dainik shiksha সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের - dainik shiksha জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক - dainik shiksha মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035171508789062