সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও পরে সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনির অলিখিত উপদেষ্টা হিসেবে এলাকা ও শিক্ষাখাতে পরিচিত বেসরকারি কলেজের অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের প্রাক্কালে তিনি গা ঢাকা দেন। পালিয়ে গেলেও জনরোষ থেকে রক্ষা পায়নি চাঁদপুর শহরের আদালত পাড়ার তার বসতবাড়িটি। শত শত বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা মাইক্রোবাসে করে চাদপুর যেতেন শিক্ষা প্রশাসনের বড় পদ পেতে। পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের ভাতা পেতেন তথ্যজ্ঞ ব্যক্তি হিসেবে। পাঠ্যবইয়ে হাবিহাবি বিষয় সংযোজনের অন্যতম পরামর্শক এই রতন।
চাঁদপুর পুরাণবাজার ডিগ্রি কলেজের দীর্ঘ মেয়াদে অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার। অবসরে যাওয়ার পর চুক্তিভিত্তিক ছিলেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি পদ পাওয়ার জন্য অধ্যাপক মশিউর রহমানও রতনের বাড়ী ৪৬ বার িএসেছেন উপউপাচার্য পদে থাকাকালে। রতনের হয়রানির শিকার হয়েছেন স্থানীয় বহু শিক্ষক। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কিছু না হয়েও অঘোষিতভাবে রতন কুমার মজুমদার সব বদলি, নিয়োগসহ মন্ত্রণালয়ের নানা কার্যক্রম পরিচালনা করতেন।
এজন্য অনৈতিক পন্থায় কামিয়েছেন বিশাল পরিমাণ টাকা- এমনটি ভুক্তভোগী শিক্ষকদের কাছে শুনেছেন বলে জানালেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি বিভাগের অধ্যাপক ড. এম মেসবাহউদ্দিন সরকার।
তিনি আরও জানান সাবেক শিক্ষা মন্ত্রী দীপ মনির সময়ে রতন কুমার মজুমদার পুরো শিক্ষা বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করতেন। রতন মজুমদারের ভয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধিকাংশ কর্মকর্তা তটস্থ থাকতেন। তৃতীয় মেয়াদে আ.লীগের শাসনামলে ডা. দীপু মনি শিক্ষামন্ত্রী হওয়ার দুই মাসের মাথায় খোদ চাঁদপুরে হাসান আলী ও মাতৃপীঠ সরকারি হাইস্কুলের দশ জন অভিজ্ঞ শিক্ষককে দেশের নানা দুর্গম এলাকায় তাৎক্ষণিক বদলি করেন। কোন প্রকার অভিযোগ না থাকলেও জামায়াত-বিএনপি তকমা লাগিয়ে এদের স্ট্যান্ড রিলিজ করানো হয় তখন। যার পেছনে কলকাঠি নাড়েন এই রতন কুমার মজুমদার এমনটি জানালেন চাঁদপুর মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে খাগড়াছড়িতে স্ট্যান্ড রিলিজ হওয়া ইংরেজি শিক্ষক মো. মাসুদুর রহমান।
তিনি বলেন ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বর্তমান কারিকুলামের বিরোধিতা করে বক্তব্য রাখায় আমাকে খাগড়াছড়ির দিঘিনালায় তাৎক্ষণিক বদলি করেন। যার ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা রাখেন এই রতন কুমার মজুমদার।
এদিকে তার পালিয়ে যাওয়ার পর ৭ আগস্ট থেকে সেই কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন মো. শোয়ায়েব। তিনি ওই কলেজের ভূগোল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ছিলেন।
শিক্ষা বিষয়ক দেশের একমাত্র পত্রিকা দৈনিক শিক্ষাডটকম-এ গত ছয় বছরে কয়েকডজন প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে রতন মজুমদারের কর্মকান্ড নিয়ে।