ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গঠিত নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে সদ্য বিলুপ্ত সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি (জাপা)। দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, গত ১৫ বছরে দুর্নীতিবাজ মন্ত্রী, এমপি, আমলা, পুলিশকে আইনের আওতায় আনতে হবে। শেখ হাসিনা সরকারের আমলে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনতে হবে। সাংবিধানিক নানা সংস্কার করতে হবে।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বনানী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেছেন। গত ১৮ বছরে প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনগুলোতে অংশ নেওয়াসহ প্রায় সব ইস্যুতে আওয়ামী লীগের পাশে থাকলেও, জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাপা ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে সমর্থন জানিয়েছিল।
চুন্নু বলেছেন, নির্বাচন পদ্ধতি পরিবর্তন করে আনুপাতিক হারে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, পাবলিক সার্ভিস কমিশনসহ সাংবিধানিক সব প্রতিষ্ঠানকে প্রভাবমুক্ত করতে হবে। বিচার বিভাগের পরিপূর্ণ পৃথকীকরণ এবং উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগের আইন করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর একক ক্ষমতা কমিয়ে রাষ্ট্রপতি ও সংসদের মধ্যে ক্ষমতার ভারসম্যের সৃষ্টি করতে হবে। কোনো ব্যক্তি দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। যিনি প্রধানমন্ত্রী হবেন; তিনি যেনো সংসদ নেতা না হতে পারেন। ৭০ অনুচ্ছেদের প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে।
তিনি বলেন, প্রথম কাজ হচ্ছে, দেশের আইনশৃংখলা ফিরিয়ে আনতে হবে। পুলিশ বাহিনীর যৌক্তি দাবি মেনে নিতে হবে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। একইসাথে প্রত্যেক পরিবারে অন্তত একজনের চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে। হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। থানা লুট ও পুলিশ হত্যায় জড়িতদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।
জাপা মহাসচিব বলেছেন, অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি করতে হবে। রপ্তানি বাণিজ্যে অগ্রাধিকার, বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানো এবং ফ্রিল্যান্সারদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে। পাঠ্য বইয়ের অসংগতি দূর করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যরিষ্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, রেজাউল ইসলাম ভূইয়া প্রমুখ।