দেশের আট জেলায় ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতিতে ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সহায়তা সমন্বয় সেল’ চালু করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। যুগ্মসচিব মো. হারুন-অর-রশিদের নেতৃত্বে তিনটি শিফটে এ সেল কার্যক্রম পরিচালনা করবে। শুক্রবার (২৩ আগস্ট) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের প্রশাসন-১ শাখা থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশে উদ্ভূত বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সহায়তার লক্ষ্যে জননিরাপত্তা বিভাগে ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সহায়তা সমন্বয় সেল’ স্থাপন করা হয়েছে। এ বিভাগের যুগ্মসচিব মো. হারুন-অর-রশিদ এই সেলের দৈনন্দিন কার্যক্রম তত্ত্বাবধায়ন করবেন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সহায়তা সমন্বয় সেলে জরুরি যোগাযোগের জন্য টেলিফোন নম্বর: ০২-৪৭১১৮৭০০, ০২- ৪৭১১৮৭০১, ০২-৪৭১১৮৭০২, ০২-৪৭১১৮৭০৩, ০২-৪৭১১৮৭০৪ ও ০২-৪৭১১৮৭০৫ এবং মোবাইল নম্বর: ০১৩১৭৭৪৯৯৮০ ও ০১৮২০১১৭৭৪৪ সংযোগ দেয়া হয়েছে।
সমন্বয় সেল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষাসহ প্রাপ্ত তথ্যাদি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা এবং সার্বক্ষণিক ফলোআপ করতে নির্দেশ দেয়া হয়।
এদিকে নজিরবিহীন ‘ফ্ল্যাশ ফ্লাডে’ ক্ষত-বিক্ষত গ্রামের পর গ্রাম। দুঃস্বপ্নের মতো পানির তোড় এসে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে সহায়-সম্বল। ৩৬ বছরের মধ্যে এমন বন্যা দেখেননি স্থানীয়রা। মাঠ-ঘাট তো ডুবেছেই তলিয়েছে গুরুত্বপূর্ণ সড়কও। এতে পানিবন্দি কয়েক লাখ মানুষ। আশ্রয় আর খাবারের অভাবে মানবেতর জীবনে হাজারো লোক।
বন্যার পানিতে ডুবে এবং বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এখন পর্যন্ত কুমিল্লায় চারজন, কক্সবাজারে দুজন, ফেনীতে একজন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া পানির স্রোতে ভেসে কক্সবাজারে দুজন নিখোঁজ হয়েছেন।
নিহতরা হলেন- কুমিল্লার নাঙ্গলকোট পৌরসভার দাউদপুর এলাকার বাসিন্দা কেরামত আলী (৪৫), কুমিল্লা নগরের ছোট এলাকার কিশোর রাফি (১৫) ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলার সোনাকাটিয়া গ্রামের শাহাদাত হোসেন (৩৪) এছাড়া লাকসামে পানিতে তলিয়ে মারা যাওয়া শিশুর নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
কক্সবাজারে মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন- রামুর গর্জনিয়া ইউনিয়নের পূর্ব জুমছড়ি গ্রামের আমজাদ হোসেন (২২) ও ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের লম্বরিপাড়ার বাসিন্দা নুরুল কবিরের ১০ বছর বয়সী মেয়ে। ফেনীর ফুলগাজী উপজেলায় মারা গেছেন একজন। তার পরিচয় জানা যায়নি। এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার বীরচন্দ্রপুর গ্রামে সুবর্ণা আক্তার (১৯) নামের এক নারী মারা গেছেন।
এবারে বন্যায় ডুবে গেছে ফেনী সদরের একাংশসহ পরশুরাম, ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। ফলে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। যাদের অনেককেই এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। অনেকে ৩/৪ দিন পরেও খোঁজ নিতে পারেননি পরিবারের।
এদিকে, বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় চট্টগ্রামের মীরসরাই, কুমিল্লার বুড়িচং, ব্রাক্ষণবাড়ীয়ার আখাউড়া, হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ এবং মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় বন্যার্তদের উদ্ধার কার্যক্রমে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।