দুস্থ রোগীদের সেবায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ‘রোগী কল্যাণ সমিতি’কে ১০ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
মঙ্গলবার সকালে নগরীর চশমা হিলের বাসায় এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে রোগী কল্যাণ সমিতির কাছে অনুদানের চেক তুলে দেন নওফেল।
শিক্ষা উপমন্ত্রী জানান, ক্যান্সার রোগীদের সেবায় কাজী মোহাম্মদ আলীর সঞ্চিত ৫০ লাখ টাকা অনুদানের ঘটনাটি তাকে অনুপ্রাণিত করেছে। এছাড়া সমাজে অসহায়দের সেবায় সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে এগিয়ে আসারও আহ্বান জানান তিনি।
চট্টগ্রামের কাজী মোহাম্মদ আলী সম্প্রতি নিজের সঞ্চয়ের ৫০ লাখ টাকা শিশুদের ক্যান্সার চিকিৎসার দান করেছেন।
চট্টগ্রাম ৯ আসনের সংসদ নওফেল বলেন, “সর্বশেষ আমি যখন রোগী কল্যাণ সমিতির একটি অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম মেডিক্যালে যাই, তখন জেনেছি কাজী মোহাম্মদ আলী নিজের জীবনের বহু কষ্টের সঞ্চয় ৫০ লক্ষ টাকা ১৮ বছরের কম বয়সী ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসায় রোগী কল্যাণ সমিতিকে দান করেছেন।“
নওফেল বলেন, “তিনি (কাজী মোহাম্মদ আলী) এই টাকা সঞ্চয় করতে গিয়ে চাকরি জীবনে অনেক বেলা দুপুরের খাবার পর্যন্ত খাননি। তার এই মহৎ উদ্যোগ দেখে আমি উদ্বুদ্ধ হই এবং সিদ্ধান্ত নিই যে উনার মত না হলেও ক্ষুদ্র কিছু অর্থ রোগী কল্যাণ সমিতিতে অনুদান হিসেবে দেব। তারই অংশ হিসেবে রোগী কল্যাণ সমিতিকে দশ লক্ষ টাকা দিলাম।“
চট্টগ্রামের হামজারবাগের বাসিন্দা ৮০ বছর বয়সী কাজী মোহাম্মদ আলী ছিলেন একটি বেসরকারি ওষুধ কোম্পানির ব্যবস্থাপক। ২০০৫ সালে তিনি চাকরি থেকে অবসরে যান। পরিবারের সদস্যদের অজান্তে ৪০ বছর ধরে তিনি ওই টাকা জমিয়েছিলেন।
চলতি বছরের এপ্রিলে তিনি ব্যাংকে একটি ওয়াকফ হিসাব খুলে ৫০ লাখ টাকা তাতে জমা করেন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির নামে।
প্রতি বছরে ওই ৫০ লাখ টাকা থেকে পাওয়া ৪ লাখ টাকা মুনাফা ১৮ বছরের কম বয়সী ক্যানসার রোগীদের চিকিৎসায় ব্যয় করবে রোগী কল্যাণ সমিতি। কাজী মোহাম্মদ আলীর নানা, মা ও এক ভাগ্নি ক্যান্সারে মারা গিয়েছিলেন।
নওফেল জানান, দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ আছে, আপদে-বিপদে মানুষের পাশে থাকার জন্য।
“আমি মনে করি এই অনুদান প্রদানের মাধ্যমে আমি বঙ্গবন্ধু কন্যার নির্দেশও পালন করেছি। এও মনে করি জনাব কাজী মোহাম্মদ আলীর এই দানে উৎসাহী হয়ে বিত্তশালীদের পাশাপাশি সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সাধারণ মানুষের কল্যাণে এগিয়ে আসবে। আর এর মাধ্যমে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ তৈরি হলে সরকারের ওপর চাপও অনেকটা কমবে এবং সাধারণ মানুষ অনেক বেশি উপকৃত হবে।”
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতি, হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ শামীম আহসান এবং সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সমাজসেবা অফিসার অভিজিৎ সাহা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া রোগী কল্যাণ সমিতির সহসভাপতি সৈয়দ মোরশেদ হোসেন, তথ্য ও প্রকাশনা সম্পাদক হাফেজ মোহাম্মদ আমান উল্ল্যাহ, পাঠাগার সম্পাদক জিয়াউদ্দিন খালেদ চৌধুরী, কাজী মোহাম্মদ আলী এবং সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের এর ব্যবস্থাপক খোদা বকস তৌহিদ, চমেক হাসপাতাল ইর্ন্টান চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. সৌমিক বড়ুয়া ও সাধারণ সম্পাদক ডা. মুশফিকুন ইসলাম আরাফ উপস্থিত ছিলেন এ সময়।