দেশের প্রথম পাতাল মেট্রো লাইন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টা ৫ মিনিটে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পীতলগঞ্জে আয়োজিত সুধী সমাবেশ থেকে নির্মাণ কাজের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন তিনি।
পাতালরেলের এমআরটি লাইন-১ বিমানবন্দর থেকে কুড়িল, বাড্ডা, রামপুরা হয়ে কমলাপুর পর্যন্ত পুরো অংশ নির্মিত হবে মাটির নিচ দিয়ে। তবে পীতলগঞ্জ থেকে কমলাপুর-বিমানবন্দর মেট্রোরেল রুটের সঙ্গে যুক্ত অংশটি হবে এলিভেটেড।
এটিই দেশের মেট্রো রেলের প্রথম পাতাল যাত্রা। এ পথে দৈনিক আট লাখ যাত্রী চলাচল করতে পারবে।
এ পাতাল রেল নির্মাণে ব্যয় হবে ৫২ হাজার কোটি টাকা। জাপানি ঋণ ৩৯ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা। আর বাকি অর্থ সরকারি তহবিল থেকে মেটানো হবে।
এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৬ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর পর্যন্ত।
পাতাল রেল হচ্ছে ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি-১) প্রকল্পের আওতায়। এটি বাস্তবায়ন করবে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।
এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জের পিতলগঞ্জে মেট্রো রেলের ডিপো নির্মাণে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সই করেছে ডিএমটিসিএল।
প্রকল্প সূত্র জানায়, দ্বিতীয় মেট্রো রেল হবে উড়াল ও পাতাল পথের সমন্বয়ে। দুটি রুটে ৩১ দশমিক ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এমআরটি লাইন-১ নির্মাণ হবে। এর মধ্যে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত- এই রুটে মাটির নিচ দিয়ে চলবে রেল। এটি ১৯ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার দীর্ঘ রুট।
এই রুটে স্টেশন হবে মোট ১২টি। এগুলো হচ্ছে- বিমানবন্দর, বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩, খিলক্ষেত, যমুনা ফিউচার পার্ক, নতুন বাজার, উত্তর বাড্ডা, বাড্ডা, হাতিরঝিল, রামপুরা, মালিবাগ, রাজারবাগ ও কমলাপুর।
আর পূর্বাচল রুটে নতুন বাজার স্টেশনটি হবে পাতালে। এরপর নতুন বাজার থেকে পূর্বাচলের নারায়ণগঞ্জের পিতলগঞ্জ পর্যন্ত ১১ দশমিক ৩৬ কিলোমিটার হবে উড়ালপথে। এ রুটে আবার স্টেশন হবে নয়টি।
এগুলো হচ্ছে- নতুন বাজার, যমুনা ফিউচার পার্ক, বসুন্ধরা, পুলিশ অফিসার্স হাউজিং সোসাইটি, মাস্তুল, পূর্বাচল পশ্চিম, পূর্বাচল সেন্টার, পূর্বাচল পূর্ব, পূর্বাচল টার্মিনাল ও পিতলগঞ্জ ডিপো।
ডিএমটিসিএল সূত্র জানায়, ২০৩০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে এই ছয়টি মেট্রো রেলের নির্মাণকাজ পর্যায়ক্রমে তিন ধাপে শেষ করা হবে।
দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০২৮ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে এমআরটি লাইন-৫ নর্দান রুটের নির্মাণকাজ শেষ করা হবে। তৃতীয় পর্যায়ে ২০৩০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে এমআরটি লাইন-৫: সাউদার্ন রুট, এমআরটি লাইন-২ এবং এমআরটি লাইন-৪ নির্মাণকাজ শেষ করা হবে।
পাতাল রেলের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচনকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী, বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমটিসিএল) এমএএন সিদ্দিক।